তামিম ও জালাল ইউনুসের বিরুদ্ধে হাথুরুসিংহেকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টার অভিযোগ সাকিবের

সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে তার পদ থেকে সরাতে ড্রেসিংরুমের ঘটনা বাইরে ফাঁস করার অভিযোগ এনেছেন সাকিব আল হাসান। সাকিব সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও সাবেক বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন বিসিবির বিশেষ তদন্ত কমিটির কাছে। তবে তদন্ত কমিটি নিজেদের প্রতিবেদনে এমন কিছু উল্লেখ করেননি।
২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের থেকে বড় প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু দশ দলের আয়োজনে বাংলাদেশ মাত্র দুই জয় নিয়ে অষ্টম স্থানে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করে। বিশ্বকাপের ব্যর্থতা তদন্ত করতে তৎকালীন বোর্ড একটি বিশেষ কমিটি তৈরি করে। যেখানে একটি ব্যক্তিগত অভিযোগও উঠে আসে, সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে স্পিনার নাসুম আহমেদকে চড় মেরেছিলেন।
যে কমিটি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানসহ মোট ১৬ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছিল। যেখানে ক্রিকেটার ছিলেন আটজন। বিশ্বকাপ স্কোয়াডের মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, হাসান মাহমুদ, নাসুম আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিবের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। বাইরে থেকে তামিম ইকবালকেও ডাকা হয়েছিল।
এছাড়া প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন, ম্যানজোর রাবীদ ইমাম, স্ট্রেন্থ এন্ড কন্ডিশনিং কোচ নিক লি, ফিজিও বায়েজেদুল ইসলামের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। দুই নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন ও মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকেও ডাকা হয়েছিল। সবশেষ ছিলেন জালাল ইউনুস।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এই সাক্ষাৎকারগুলো নিয়েছিল তদন্ত কমিটি। সাকিব নিজের সাক্ষাৎকারে হাথুরুসিংহে-নাসুমের চড় কাণ্ডের জন্য তামিম ও জালাল ইউনুসকে সরাসরি দোষ চাপিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে একটি পয়েন্টে আছে, ‘‘ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান এবং তামিম ইকবাল নাসুমকে 'চড় মারার' অভিযোগ সম্পর্কে জানতে ফোন করেছিলেন এবং প্রধান কোচের বিরুদ্ধে এটি মিডিয়াতে ফাঁস করেছিলেন যাতে তাকে বরখাস্ত করা যায়।’’
সাকিবের এমন অভিযোগ শুধুমাত্র তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ হিসেবেই মূল্যায়ন হয়েছে। পরবর্তীতে এর কোনো সতত্যা তারা পায়নি। এজন্য তাদের প্রতিবেদনে এরকম কিছু উঠে আসেনি।
শুধু তা-ই নয়, সাকিব দলের টিম ডিরেক্টর এবং টিম বয়দের নিয়েও সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন। টিম ডিরেক্টরকে নিয়ে তার ব্যাখ্যা, ‘‘দলের গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। দলের সাথে সম্পর্কিত যেকোনো বিষয় মিডিয়াতে যাওয়া ক্ষতিকর। টিম ডিরেক্টরের টিম মিটিংয়ে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন নেই।’’
টিম বয়দের নিয়ে সাকিব সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘টিম অ্যাসিস্ট্যান্ট/টিম বয় নিয়োগের আগে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। তারা গোপনীয় টিম তথ্য পাচার করতে পারে।’’
বিশেষ কমিটি বিশ্বকাপের সময় দলের পরিবেশকে "বিভক্ত এবং বিষাক্ত" বলে বর্ণনা করেছে এবং খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের মধ্যে আস্থা এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবিলম্বে পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।
ঢাকা/ইয়াসিন