পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা না থাকলেও চেষ্টায় ঘাটতি দেখেন না লিটন
‘‘অ্যান্ড লিটন দাস ইজ পেইন্টিং আ মোনালিসা হিয়ার!’’ তার ব্যাটিং ইয়ান বিশপের চোখে এতোটাই মুগ্ধতা ছড়িয়েছিল যে মোনালিসা চিত্রকর্মের সঙ্গে তুলনা করতে বাধ্য করেছিল। মাধুর্যতা, সৌন্দর্য, গভীরতা মিলিয়ে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির অমর সৃষ্টি মোনালিসা। ২২ গজে লিটনের ব্যাটিং যেন বিশপকে মনে করিয়ে দিয়েছে সেই সৃষ্টি। কিন্তু সেই ক্যানভাস প্রায় সয়মই থাকে ফ্যাকাসে। রংধনুর সাত রং নয়, ২২ গজের ক্যানভাস বিবর্ণ থাকে বেশিরভাগ সময়।
দৃষ্টিনন্দন সব শটে যেখানে চোখ ধাঁধিয়ে দিতে পারেন, ধ্রুপদী ব্যাটিংয়ে যেখানে বুঁদ করে রাখার ক্ষমতা রাখেন, যেখানে বয়ে যেত চার-ছক্কার জোয়ার, সেখানে প্রায়ই ব্যর্থতার মিছিল। আত্মহুতি দেয় একেকটি প্রতিশ্রুতিশীল ইনিংস। একেকটি বাজে শটে প্রতিপক্ষকে উইকেট উপহার দিয়ে আসা যেন নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা।
তার ক্যারিয়ার লম্বা সময়ের। ২০১৪ সালে অভিষেক। ক্যারিয়ার যেখানে থাকার কথা ছিল, সেখানে যেতেও পারেনি লিটন। পারফরম্যান্সে অধারাবাহিকতার কারণে লিটনকে আড়াল থাকতে হয় বেশিরভাগ সময়ই। তবে নিজের নিবেদন, তাড়না এবং অনুশীলনে কখনো কমতি ছিল না তার। শতভাগ প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। কথাগুলো বলেছেন স্বয়ং লিটনই।
মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে লিটন বলেছেন, ‘‘১০ বছর ধরে তো এভাবেই খেলছি। আর কত সেট করবো? পারফর্ম করতে পারছি না, এটা একটা জায়গা আছে। ধারাবাহিক পারফর্ম করতে পারছি না। আমি সবসময় চেষ্টা করছি। কিন্তু অনুশীলনে কখনো কমতি ছিল না, এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না।’’
তবে ফেরার ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন লিটন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জেতার নায়ক ছিলেন অধিনায়ক নিজে। প্রথম ম্যাচে লিটন করেছিলেন ৬ রান। পরের ম্যাচে ৫০ বলে ৭৬ রান করে ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন। শেষ ম্যাচেও দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেছেন। ২৬ বলে ৩২ রান করেছেন। যেখানে দ্বিতীয় উইকেটে তানজিদের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৭৪ রানের। উইকেটের পেছনে দক্ষতার পাশাপাশি নেতৃত্বে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন।
পাকিস্তান সিরিজে নতুন করে শুরু করে একই পারফরম্যান্স ধরে রাখার প্রত্যয় তার, ‘‘অধিনায়ক হিসেবে হোক বা ব্যাটসম্যান হিসেবে, প্রত্যেকটা সিরিজই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন ব্যাটিংয়ে যাই, তখন তো আমি ব্যাটসম্যান থাকি, অধিনায়ক থাকি না। আমার দায়িত্ব হচ্ছে ব্যাটিং করা, রান করা। প্রত্যেক ম্যাচে আমার এটাই চিন্তা থাকে। যত দিন ক্রিকেট খেলি, যদি ভবিষ্যতেও অধিনায়ক থাকি, একই চিন্তা থাকবে। চেষ্টা করব, ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতে।’’
ঢাকা/ইয়াসিন