ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে অর্ধলাখ মানুষ, খোলা হয়েছে ১৯ আশ্রয়কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৭, ৮ জুন ২০২১   আপডেট: ১৪:১৫, ৮ জুন ২০২১
পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে অর্ধলাখ মানুষ, খোলা হয়েছে ১৯ আশ্রয়কেন্দ্র

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ছোটবড় ১৭টি পাহাড়ের ঢালুতে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছেন প্রায় অর্ধলাখ পরিবার। 

রোববার (৬ জুন) থেকে চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি মাইকিং করে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এজন‌্য খোলা হয়েছে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাজমুল আহসান সোমবার (৭ জুন) সকালে রাইজিংবিডিকে এই তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ১৭টি পাহাড় রয়েছে। এসব পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় প্রায় অর্ধলাখ মানুষ বসবাস করে। মূলত প্রভাবশালী মহলের দখল করে গড়ে তোলা এসব পাহাড়ে নিম্নআয়ের মানুষজন কম ভাড়ায় বসবাস করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। নগরীর লালখান বাজার মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, টাইগার পাস, বিশ্ব কলোনী, বায়েজিদ বোস্তামি, আরেফিন নগরসহ বিভিন্ন এলাকায় ঝুঁকিতে বসবাস করছে নিম্ন আয়ের মানুষ।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাজমুল আহসান জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় শত শত পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া এবং বিভিন্ন সময় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসতি স্থাপনকারীদের সরকার উচ্ছেদ করলেও আবার নতুন করে তারা বসতি গড়ে তোলে তারা। এর পরেও পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে এবং অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করতে প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গত এক বছরে পাহাড় থেকে এক হাজারেও বেশি অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করা হয়েছে। নিয়মিত গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। সর্বশেষ গত ৯ মে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা থেকে নতুন করে তালিকা প্রস্তুত করে অবৈধ বসতি উচ্ছেদ ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

এদিকে, ভারি বর্ষণ ও পাহাড় ধসের ঝুঁকি সৃষ্টি হওয়ায় রোববার সকাল থেকেই পাহাড় থেকে শতাধিক পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আরও জানান, চট্টগ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে নগরীতে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে লোকজনকে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে শতাধিক পরিবারকে। আশ্রয় কেন্দ্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রতি বছরই চট্টগ্রামে ছোট-বড় পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে নগরীতে সবচেয়ে বড় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছিলো ২০১৭ সালের ১১ জুন। এদিন টানা বৃষ্টির মধ্যে নগরীর মতিঝর্ণা এলাকায় ভয়াবহ পাহাড় ধসে নারী ও শিশুসহ ১২৭ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

চট্টগ্রাম/রেজাউল/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়