ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ২ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে মুক্তিযোদ্ধার কবরে আগুন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৭, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৪:৩৯, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে মুক্তিযোদ্ধার কবরে আগুন

শরীয়তপুরের নিয়ামতপুর গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান খানের কবরে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) প্রথম প্রহরে দুর্বৃত্তরা কবরের ওপর কাঠ রেখে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান খানের পরিবার।

স্থানীয় সূত্র জানায়, নিয়ামতপুর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান খান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন। তিনি ২০১০ সালের ৮ জানুয়ারি মারা যান। পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বসতঘরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।

আরো পড়ুন:

আজ সকালে স্বামীর কবরে যান স্ত্রী মাহফুজা বেগম। কবরের ওপর পোড়া ছাই ও আগুনের চিহ্ন দেখে তিনি চিৎকার দেন। পরিবারের সদস্যরা ছুটে আসেন। তখনও পোড়া ছাই থেকে হালকা ধোঁয়া উড়ছিল।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কবরের পাশে স্বজন ও এলাকাবাসীর ভিড়। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান খানের স্ত্রী মাহফুজা বেগম। 

চোখের পানি মুছতে মুছতে মাহফুজা বেগম বলেন, “আমার স্বামী দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। তার কবরের সঙ্গে এমন অবমাননা কেউ কীভাবে করতে পারে? বিজয়ের মাসে এমন ঘটনায় আমরা পুরো পরিবার ভেঙে পড়েছি। এ ঘটনার বিচার চাই।”

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান খানের মেয়ে আফরোজা আক্তার বলেন, “মায়ের চিৎকার শুনে দৌঁড়ে গিয়ে দেখি, বাবার কবরের একাংশ আগুনে পুড়ে গেছে। এটা কারা, কী উদ্দেশ্যে করেছে বুঝতে পারছি না। আমরা পরিবার হিসেবে ভীষণভাবে মর্মাহত ও আতঙ্কিত।” বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মুক্তিযোদ্ধা নেতাদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আহ্বায়ক আব্দুল জলিল সিকদার বলেন, “একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর অবমাননার খবর আমাদের গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ আলম বলেন, “কবরে আগুন দেওয়া, মানে একটা মানুষের ওপর আগুন দেওয়া। জানি না কতটুকু কী, আমরা বিষয়টি দেখছি। ঘটনাস্থলে এসেছি।” 

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়