ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মেডিক‌্যালে সুযোগ পেয়েও ভর্তি হতে পারছেন না শেফা

রাজিব হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫২, ১৫ এপ্রিল ২০২১   আপডেট: ১১:৫৪, ১৫ এপ্রিল ২০২১
মেডিক‌্যালে সুযোগ পেয়েও ভর্তি হতে পারছেন না শেফা

শামসুন্নাহার শেফা, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের হতদরিদ্র মো. আবদুল মোমিনের মেয়ে। তিনি মেডিক্যালে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে পাস করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। 

শেফা দারিদ্র্যতাকে জয় করে এখন চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু মেডিক্যালে ভর্তিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। 

শামসুন্নাহার শেফা বলেন, ‘এবার পরীক্ষায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। আমি দক্ষ চিকিৎসক হয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। দরিদ্র বাবার সামর্থ্য না থাকার কারণে চরম দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটছে আমার।’  

শেফার বাবা আব্দুল মোমিন বলেন, ‘ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের আড়পাড়া গ্রামে আড়াই শতক জমির উপরে আমার একটি টিনের বাড়ি রয়েছে। দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে অমিতা খাতুনের বিয়ে দিয়েছি। সে শশুড় বাড়িতে সংসার করছে। আমি বর্তমানে একটি মেশিন নিয়ে দোকান ভাড়া করে সংসার চালাতেও হিমশিম খাচ্ছি। এ অবস্থায় মেয়েরে কেমনে ভর্তি করুম। দিন যত যাচ্ছে, চিন্তা তত বাড়ছে। কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ান।’ 

তার মেধাবী মেয়ে শেফা ৫ম শ্রেণিতে বৃত্তি, জেএসসিতে গোল্ডেন এপ্লাস পান। ২০১৮ সালে সলিমুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০২০ সালে সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। 

শামসুন্নাহার শেফা মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১৮৮২তম হয়েছেন। এখন ভর্তিতে সামর্থ্য না থাকার কারণে মানুষের দরজায় দরজায় নক করছেন। অসহায় বাবা জানান, মানুষের সাহায্য পেলে তার মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। শুরুতেই ভর্তি করতে ৫০-থেকে ৬০ হাজার টাকা প্রয়োজন। অনেকেই পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার টাকা হাতে পেয়েছেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।  

তিনি মেয়ের ভর্তির জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। শেফাকে সহযোগিতা করতে চাইলে-০১৭৩৪-৬৩৯৯০৬ (শেফার বাবার) নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।

শেফার মা সুফিয়া বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে রাত-দিন পরিশ্রম করে পড়াশোনা করে আজ সে চান্স পেয়েছে ডাক্তারিতে। আমরা দিনের পর দিন না খেয়েও মেয়েকে মানুষ করেছি। এখন যদি অর্থের অভাবে না পড়াতে পারি, তাহলে সারাজীবন এই দুঃখ বয়ে বেড়াতে হবে আমাদের। এজন্য আমরা বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে মেয়েটাকে ডাক্তারি পড়াতে পারবো।’  

প্রতিবেশী কুদ্দুস মাস্টার ও আবু সিদ্দিক বলেন, শামসুন্নাহার শেফা আমাদের অঞ্চলের গর্ব। খুবই মেধাবী ছাত্রী। বাবার একমাত্র উপার্জন দিয়ে চলে তাদের সংসার। দর্জির মেয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছে, আমরা ধন্য হয়েছি। সে চিকিৎসক হয়ে অসহায় মানুষের সেবা করবে, সেটি চাই। তবে তাদের যে অর্থনৈতিক অবস্থা, তাতে পড়াশোনা চালানো সম্ভব নয়। তবে দেশ-বিদেশের বিত্তবানেরা পাশে দাঁড়ালে মেয়েটার একটা ভবিষৎ তৈরি হবে বলে তারা আশা করেন।

ঝিনাইদহ/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়