ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জাবিতে অটোরিকশার ধাক্কায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় চালক আটক

জাবি সংবাদদাতা   || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৬, ২৫ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৩:৩৩, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
জাবিতে অটোরিকশার ধাক্কায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় চালক আটক

অটোরিকশাচালক আরজু

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাচির মৃত্যুর ঘটনায় রিকশাচালক আরজুকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে অটোরিকশাটি। 

রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী গেরুয়া এলাকা থেকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা৷ পরে রাত ২টায় তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় আশুলিয়া থানা পুলিশ। 

প্রক্টর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ নভেম্বর (মঙ্গলবার) দুর্ঘটনার সময় পথচারী মো. নাঈম এবং রিকশাটির যাত্রী আবু হায়াত ও নাহিদ সন্দেহভাজন চালক হিসেবে আরজুকে শনাক্ত করেন। তাঁদের মধ্যে নাঈম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিক এন্টারপ্রাইজের কর্মচারী। এছাড়া আবু হায়াত ও নাহিদ নির্মাণাধীন সমাজবিজ্ঞান এক্সটেনশন ভবনের নির্মাণশ্রমিক। গত মঙ্গলবার দুর্ঘটনার পর রিকশাটি বিক্রির চেষ্টা করেন আরজু। ক্ষতিগ্রস্ত রিকশাটির সামনের দিকে গ্লাস ছিল না ও হেডলাইট ভেঙে গিয়েছিল। সেগুলো নতুন করে মেরামত করা হয়েছে। বসার আসনের রং বদলে নীল রঙের কভার লাগানো হয়েছে। এছাড়া রিকশায় নতুন রঙের গন্ধ ও হুড লাগানোর আলামত পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, রোববার দুপুরের আগেই আরজু রিকশাটি সাভারের ছায়াবিথী এলাকার 'মাসুদ অটো পার্টস' এর মালিক মাসুদ নামের একজনের কাছে ৭৫ হাজার টাকায় রিকশাটি বিক্রি করে দেন। এমনকি সন্দেহ থেকে বাঁচতে বিক্রির দলিলে দুর্ঘটনার আগের দিন ১৮ নভেম্বরের তারিখ উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিকশাচালক আরজু বলেন, ‘‘আমি আসলে রিকশা চালাই না। ১৫ দিন আগে থেকেই আমার হাতে ব্যথা ছিল। রিকশার ব্যাটারি একটু খারাপ ছিলো দেখে কম দামে বেঁচে দিয়েছি। আমি ওইদিন জাহাঙ্গীরনগরে ছিলাম না।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ‘‘আমরা যখন তাকে খুঁজে পাই, তার গলার পাশে আঘাতের চিহ্ন ছিলো৷  সে বলেছে, এটা ১৫ দিন আগের ব্যাথা। আমরা জিজ্ঞেস করলাম কোন ডাক্তার দেখিয়েছেন। পরে মেডিক্যালের ডাক্তারকে দেখানোর পর নিশ্চিত হয়েছি, সে সম্প্রতি কোথাও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। সেদিনের দুর্ঘটনা থেকেই সে আঘাত পেয়েছে বলে আমাদের ধারণা হয়। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয় এবং তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’’ 

এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার এসআই অলক কুমার বলেন, ‘‘তাকে সন্দেহের মূল কারণ- তার মোবাইল ট্র‍্যাক করে দেখা গেছে, সে ১৯ তারিখ সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগরে ছিল৷ আগে পরের সময় সে ক্যাম্পাসের বাইরে ছিল। আবার ঘটনার পর সে রিকশা বিক্রির চেষ্টা করেছে। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসি।’’

গত ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সামনে দুর্ঘটনার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা করিম। উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

এ ঘটনার প্রতিবাদে ‘জাহাঙ্গীরনগর ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। একদিনের শোক পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে উপ-রেজিস্ট্রারসহ ৪ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

ঢাকা/আহসান/ইভা 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়