নির্বাচনের আগে বিচার চান শহীদ পরিবারের সদস্যরা
বেরোবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
বেরোবিতে অতিথিদের সঙ্গে শহীদ পরিবারের সদস্যরা
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) পালিত হয়েছে জুলাই শহীদ দিবস।
বুধবার (১৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টায় শহীদ আবু সাঈদের গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বারনপুরে তার কবর জিয়ারতের মাধ্যমে শুরু হয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু হয় র্যালি। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক, ‘আবু সাঈদ চত্বর’ ও মর্ডান মোড় প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে ফিরে আসে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কমকর্তা ও কমচারীরা অংশ নেন।
এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় সরকারের দুই উপদেষ্টাসহ অতিথিবৃন্দ আবু সাঈদ তোরণ ও মিউজিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, ‘আবু সাঈদ চত্বর’ ঘোষণা ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্বোধন করেন।
বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা স্মারক মাঠে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা অংশ নেন। এছাড়াও অংশ নেন জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
আলোচনার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। তিনি বলেন, “একজন বাবা হিসেবে আমি শুধু বিচার চাই না, চাই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি।”
এদিন রংপুরের শহীদের পরিবারগুলো জোরালোভাবে দাবি জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন ও ২০২৪ সালের হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।
আইন ও বিচার বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আবু সাঈদের আদর্শটা কি ছিল? (তার আদর্শ ছিল) আমি সত্য ন্যায় আদর্শের পথে থাকব। আমার কাছে মনে হয়, আবু সাঈদ বিপ্লবের বীরশ্রেষ্ঠ। আবু সাঈদ হত্যার বিচারকার্য শুরু হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের শাসনামলে আবু সাঈদ হত্যার বিচার দেখে যাবেন।”
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আবু সাঈদ সেদিন ভয়কে জয় করেছিল। এর আগেও কিন্তু স্বৈরাচারবিরোধী, সরকারবিরোধী আন্দোলন হয়েছে। এই আন্দোলনের ভিন্নমাত্রা ছিল। যারা আন্দোলন করেছে, তারা সব ধরনের উর্ধ্বে উঠে আন্দোলন করেছে। শহীদদের হত্যার বিচার শুধু কাউকে ফাঁসি দেওয়া তা না। যদি আবু সাঈদ মুগ্ধ ও অন্যান্য শহীদের বিচার করতে হয়, তাহলে বিচার করতে হবে সমাজটাকে সত্যিকার অর্থে বদলে দিয়ে।”
সভাপতির বক্তব্যে বেরোবি উপাচার্য ড. শওকাত আলী বলেন, “শীঘ্রই আমরা আমাদের বাসের সংকট সমাধান করতে পারব। বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা বাড়ানোর প্রক্রিয়াও আমরা হাত দিয়েছি। জুলাই স্মৃতিকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে তিনটি স্তম্ভ, সেগুলো আগামী প্রজন্মের জন্য বিশাল ইতিহাস হয়ে থাকবে।”
পরে বিকেল ৩টায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং বিকেল সাড়ে ৫টায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।অন্যদিকে, দিবসটি উপলক্ষে বাঁধন বেরোবি শাখা, ব্রুবা মতো সামাজিক সংগঠন বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষা কর্মসূচি ও জুলাই নিয়ে চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী