ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

রামেবির গাছ লুটের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২০, ২৪ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১৮:২৩, ২৪ আগস্ট ২০২৫
রামেবির গাছ লুটের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

রামেবি ক্যাম্পাসের জন্য অধিগ্রহণকৃত জায়গা থেকে গাছ কাটা হয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) ক্যাম্পাসের জন্য অধিগ্রহণকৃত জায়গা থেকে সহস্রাধিক গাছ লুটের ঘটনায় অবশেষে তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রবিবার (২৪ আগস্ট) এ কমিটি করে দেন রামেবির উপাচার্য ও ক্যাম্পাস স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহা. জাওয়াদুল হক।

ক্যাম্পাস স্থাপন প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আজই কমিটির সদস্যদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’

আরো পড়ুন:

শনিবার (২৩ আগস্ট) রামেবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, ‘‘গণমাধ্যমে কাটা গাছের সংখ্যা ৭০০ কিংবা সহস্রাধিক বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে সংখ্যা ১৮০টির মতো।’’

উপপ্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর জানান, কমিটির প্রধান রামেবির কোষাধ্যক্ষ ডা. জাকির হোসেন খন্দকার। সদস্য রয়েছেন কলেজ পরিদর্শক আবদুস সালাম, রেজিস্ট্রার ডা. হাসিবুল হোসেন, পরিকল্পনা দপ্তরের সেকশন অফিসার রেজাউল উদ্দিন ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মোরশেদ। সাত কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

রাজশাহী নগরের বাজেসিলিন্দা এলাকার আমবাগানে ঘেরা সবুজ ও নির্মল পরিবেশে গড়ে তোলা হচ্ছে রামেবির স্থায়ী ক্যাম্পাস। এতে ব্যয় হবে ২ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। জেলা প্রশাসন এই জায়গা অধিগ্রহণ করে। গত বছর জায়গা বুঝে পায় রামেবি।

এরপর প্রায় ১০ মাস ধরে এ ক্যাম্পাস থেকে একটি-দুটি করে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে সম্প্রতি গাছ কাটার কাজে জোর আসে। ট্রলির পর ট্রলি বের হচ্ছিল কাটা গাছ নিয়ে। দরপত্র ছাড়াই এভাবে গাছ কাটার বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় গত ১৩ আগস্ট ক্যাম্পাসে বালু ভরাটের কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হোসাইন কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় রামেবি। ২১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটি গাছ কাটার অভিযোগ অস্বীকার করে জবাব দেয়।

অভিযোগ রয়েছে, রামেবির শীর্ষ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র গাছ লুট করেছে। তাই প্রথম থেকে রামেবির শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রচারণা চালান, বালু ভরাটের কাজ পাওয়া ঠিকাদারের লোকজনই গাছ কেটেছেন। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, যারা প্রকৃতই গাছ কেটেছেন তাদের আড়াল করার জন্য অন্যদের ওপর দায় চাপানো হচ্ছে। 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করে পরে তদন্ত কমিটি গঠন হলে কমিটি প্রভাবিত হবে কি-না, এমন প্রশ্নে উপপ্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর বলেন, ‘‘আমরা যারা প্রাথমিক তদন্তটা করে কথাটা বলেছি, তারা তো কমিটিতে নেই। তাই তারা প্রভাবিত হবেন না।’’ 

সবুজ সংহতির নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি
গাছ লুটের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছে সবুজ সংহতি, রাজশাহী। পাশাপাশি তারা উচ্চপর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে। রবিবার (২৪ আগস্ট) ক্যাম্পাস পরিদর্শন শেষে তারা এ দাবি জানিয়েছেন।

সকালে সবুজ সংহতি, রাজশাহী এবং বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের সদস্যরা রামেবি ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। দলে ছিলেন সবুজ সংহতি, রাজশাহীর আহ্বায়ক ও নদী-পরিবেশ গবেষক মাহবুব সিদ্দীকী, জুলাই-৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী, মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রাহক ওয়ালিউর রহমান বাবু, নৃবিজ্ঞানী শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

পরিদর্শন শেষে তারা বলেন, ক্যাম্পাসের অবকাঠামো করতে হবে যতটা সম্ভব গাছ রক্ষা করে। সেই পরিকল্পনার আগে কোনোরকম দরপত্র এবং বনবিভাগের অনুমতি ছাড়াই গাছ লুট হয়ে যাওয়া দুঃখজনক। পরিবেশ ধ্বংসের জন্য বড় অপরাধ। 
 

ঢাকা/কেয়া/বকুল

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়