‘হানাদার হান্ট’, বিজয় দিবসে রাবি ছাত্রদলের প্রতীকী জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি
রাবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) রাজাকার, আলবদর ও আলশামস প্রতীকীতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করেছে শাখা ছাত্রদল। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে ‘হানাদার হান্ট’ নামের এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
তিনটি মাটির হাঁড়িতে ‘রাজাকার’, ‘আলবদর’ ও ‘আলশামস’ লিখে সেখানে জুতা নিক্ষেপ করেন অংশগ্রহণকারীরা। যারা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে জুতা ফেলতে সক্ষম হন, তাদের চকোলেট পুরস্কার দেওয়া হয়।
কর্মসূচিতে রাবি ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল মিঠু বলেন, “একাত্তরের ইতিহাসে যারা ঘাতক দালাল ছিল এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করে এ দেশের মানুষ হত্যায় ভূমিকা রেখেছিল, তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ ও রাজাকারদের চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যেই আজকের এই উদ্যোগ।”
তিনি আরো বলেন, “১৭৫৭ সালে মীরজাফরকে ক্ষমা করার ফলেই আমাদের দীর্ঘদিন ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থাকতে হয়েছে। একইভাবে একাত্তরের দেশদ্রোহী রাজাকারদের ক্ষমা করা ছিল চরম ভুল। সেই ভুলের মাশুল আজও জাতিকে দিতে হচ্ছে। অভ্যুত্থানের পর থেকে তারা মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করতে ও ইতিহাস বিকৃত করতে নানা ন্যারেটিভ তৈরি করছে।”
যারা প্রকাশ্যে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল এবং সাংগঠনিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তারাই আজ মুক্তিযুদ্ধকে ভারতীয় ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে। একাত্তরের রাজাকাররা সরাসরি না থাকলেও তাদের আদর্শধারী ও উত্তরসূরিরা এখনো দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কর্মসূচি সম্পর্কে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “একাত্তরে রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতায় লক্ষ লক্ষ নারীকে ধর্ষণ ও অসংখ্য মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে তারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরও হত্যা করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “মহান বিজয় দিবসে এসব ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধেই বার্তা দেওয়া হয়েছে, যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, লাল-সবুজের পতাকাকে অস্বীকার করে এবং এখনো পাকিস্তানপন্থি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।”
ঢাকা/ফাহিম/জান্নাত