ঢাকা     শনিবার   ১২ জুলাই ২০২৫ ||  আষাঢ় ২৮ ১৪৩২

সরাসরি: মোসাদের চেয়েও ভয়ংকর যেসব গোয়েন্দা সংস্থা আছে ইসরায়েলের 

সাতসতেরো ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২০ জুন ২০২৫   আপডেট: ১১:২৪, ২০ জুন ২০২৫
মোসাদের চেয়েও ভয়ংকর যেসব গোয়েন্দা সংস্থা আছে ইসরায়েলের 

`ইউনিট ৮২০০। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের নাম নিশ্চয় শুনেছেন। মোসাদ ছাড়াও ইসরায়েলের আরও ভয়ংকর-ভয়ংকর গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে। যেগুলোর কাজ হলো হিউম্যান ইন্টেলিজেন্সি শনাক্ত করা থেকে সম্ভাব্য হামলা চালানোর জায়গা শনাক্ত করা, গবেষণা করা, রিপোর্ট প্রদান করা। ইসরায়েলের জন্য হুমকি হতে পারে, এমন যেকোনো কিছু খুঁজে বের করার জন্যও রয়েছে আলাদা গোয়েন্দা সংস্থা। সম্প্রতি ইরানের সাথে যুদ্ধ শুরুর পরেই ইসরায়েল আরেকটি গোয়েন্দা সংস্থা গঠন করেছে, যার কাজ হলো ইরানের কোথায়, কখন হামলা করতে হবে সেই বিষয়ে তথ্য দেওয়া। ইসরায়েলের প্রতিটি গোয়েন্দা সংস্থা আলাদা আলাদা দায়িত্ব পালন করে থাকে।

মোসাদ: ইসরায়েলকে বিভিন্ন দেশের হুমকি থেকে রক্ষা করার জন্য কাজ করে সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। এই সংস্থা গঠিত হয় ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার প্রায় দেড় বছর পরেই। অর্থাৎ ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে।

শাবাক বা শিন বেট: ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে শাবাক বা শিন বেট। এটি গঠিত হয় ১৯৪৯ সালে। শিন বেট দাবি করে, সংস্থাটি পশ্চিম তীর ও গাজা থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আসা হুমকির বিরুদ্ধে ‘অদৃশ্য ঢাল’ হিসেবে কাজ করে।

আরো পড়ুন:

আমান: ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আমান। এই সংস্থা প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাধারণ সদর দপ্তরের অধীনে কাজ করে। এটি মূলত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে সামরিক কমান্ডকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করে থাকে। ইসরায়েলে গোয়েন্দা সংস্থার ইতিহাস ইসরায়েলের অস্তিত্বের চেয়েও পুরনো। জানা যায়, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯২২ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ‘শাই’ নামে একটি গোয়েন্দা সংস্থা এখানে কাজ করত, যা ছিল ইহুদি আধা-সামরিক সংগঠন ‘হাগানাহ’-এর গোয়েন্দা শাখা। রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়ের প্রতিষ্ঠা পাবার পর ‘আমান’ তৈরি হয় মূলত হাগানাহর ধারণার ওপর। বর্তমানে এই সংস্থার দায়িত্ব হলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান থেকে আসা গোয়েন্দা ও সামরিক হুমকি সনাক্ত করা।

ইউনিট ৮২০০:  এই ইউনিটকে ইসরায়েলি গোয়েন্দা ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে ধরা হয়। যার মাধ্যমে  ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইলেকট্রনিক মাধ্যমে তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা পরিচালনা করে। এই ইউনিটে কাজ করা সদস্যদের সংখ্যা মোসাদ ও শিন বেটের সদস্যদের থেকেও বেশি হয়ে থাকে। গোয়েন্দাগিরির জন্য ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক যন্ত্র বানানোর দায়িত্বও তাদের ওপর অর্পিত। আরও যা করে সংস্থাটি- যোগাযোগ ব্যবস্থার ওয়্যারট্যাপিং (গোপনে আড়ি পাতা), গোয়েন্দা ও সামরিক তথ্য ডিকোড করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেট থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা, সাইবার হুমকির শনাক্তকরণ, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য ইলেকট্রনিক ও সাইবার ডিভাইস তৈরি করা। কারিগরি দিক থেকে একে এই সংস্থা আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) সমতুল্য বলে মনে করা হয়। ইউনিট ৮২০০ এর কার্যক্রম সবসময় গোপন রাখা হয়। তবুও সামরিক ও গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে এই ইউনিট ইসরায়েলকে রক্ষা করতে কিংবা ইসরায়েলের হয়ে আক্রমণ করতে এক কথায় প্রতিরক্ষা ও হামলা উভয় ধরনের অভিযানে প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছে।

ইউনিট ৯৯০০: যদি ইউনিট ৮২০০-কে ইসরায়েলের ‘কান’ বলা হয়, তাহলে ইউনিট ৯৯০০-কে তার ‘চোখ’ বলা যেতে পারে। এই ইউনিটের দায়িত্ব হলো ছবি ও ভিডিও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা। এজন্য এই ইউনিট স্যাটেলাইট, গোয়েন্দা বিমান ও ড্রোন ব্যবহার করে। এসব ছবি ও ভিডিওর তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে সেনা কমান্ডার ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের কাছে রিপোর্ট পৌঁছে দেয়াও এই ইউনিটের দায়িত্ব।
তথ্য অনুযায়ী, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইরানকে পর্যবেক্ষণ করাও ইউনিট ৯৯০০-এর দায়িত্ব। যা ইসরায়েলের গোয়েন্দা স্যাটেলাইট ‘হরাইজন ১৩’ দিয়ে করা হয়।

ইউনিট ৫০৪: এই ইউনিট মানুষের গোয়েন্দা তথ্য (হিউম্যান ইন্টেলিজেন্স) সংগ্রহের জন্য কাজ করে। এই ইউনিটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে এবং এটি শত শত সফল অপারেশন চালিয়েছে।

ব্রাঞ্চ ৫৪: ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নতুন গোয়েন্দা ইউনিট ব্রাঞ্চ ৫৪। এর কাজ হলো ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া। এরা ইরানের সামরিক সক্ষমতা সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করবে, ইরানের কোন কোন জায়গায় যুদ্ধ চালাবে তা শনাক্ত করবে।  

সূত্র: বিবিসি

ঢাকা/লিপি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়