ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ভারতে গরু মরছে হাজার হাজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৩, ৯ আগস্ট ২০২২  
ভারতে গরু মরছে হাজার হাজার

ভারতের গুজরাট রাজ্যের বাসিন্দা আব্বাসভাই বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলছিলেন, ‘আমরা আমাদের গরুর সাথে পরিবারের সদস্যদের মতো আচরণ করি।’ জুলাই মাসে তার ১১টি গাভীর মধ্যে তিনটি গলদা চর্ম রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর মারা যায়। বর্তমানে তার আরও তিনটি গরু এই রোগে আক্রান্ত।

আব্বাসভাই হলেন গুজরাট ও ভারতের অন্তত তিনটি রাজ্য - রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং হিমাচল প্রদেশের হাজার হাজার গবাদি পশুর মালিকদের মধ্যে একজন। এই পশু মালিকরা তাদের পশুদের গলদা চর্মরোগের মারাত্মক প্রাদুর্ভাবের কারণে ভুগছেন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এটিকে ‘ভেক্টর-জনিত বসন্ত রোগ’ হিসাবে বর্ণনা করেছে যা ‘ত্বকে ক্ষুদ্র পিণ্ড সৃষ্টি করে।’

ক্যাপ্রিপক্স ভাইরাসের কারণে এই সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। এটা জিনগতভাবে ছাগলের বসন্ত এবং ভেড়ার বসন্ত রোগের জন্য দায়ী ভাইরাসের অনরূপ।  বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, এটি মহিষের চেয়ে বেশি হারে গরুতে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এই রোগটি আফ্রিকার অনেক দেশে বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় পর্যায়ে ছিল। এটি বছরের পর বছর ধরে বিশ্বের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এই রোগটি দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ২০১৯ সালের জুলাই মাসে দেখা যায়। বাংলাদেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর বের হয়েছিল। এর এক মাস পরে এটি ভারতে শনাক্ত করা হয়।

সাধারণত কিছু প্রজাতির মশা ও অন্যান্য রক্তচোষা পোকার মাধ্যমে এই রোগটি সংক্রমিত হয়।

রাজস্থান রাজ্যের পশুচিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রবি ইসরানি বলেন, ‘এই রোগের কারণে প্রাণির শরীরে ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং যখন মাছি ও মশা এর উপর বসে, তখন তারা অন্যান্য সুস্থ প্রাণিদের মধ্যে সংক্রমণ ঘটায়।

তিনি জানান, বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে প্রাদুর্ভাব আরও ভয়াবহ হতে পারে। এই রোগে মৃত্যুর হার ১ থেকে ৫ শতাংশ।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গুজরাটে এ পর্যন্ত দুই হাজার ৬০০ এর বেশি গবাদি পশু এই রোগে মারা গেছে। তবে বিবিসির প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বাস্তব সংখ্যা আরও বেশি। গুজরাটের পাশের রাজ্য রাজস্থানে চলতি বছর মারা গেছে প্রায় ছয় হাজার গরু।

গুজরাটের এক কৃষক বলেন, ‘প্রতিদিনই প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি গরু মারা যাচ্ছে।’

উত্তরের পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ভুগছে হাজার হাজার পশু।

গুজরাটের পশুপালন বিষয়ক কর্মকর্তা অনিল ভিরানি বলেন, ‘ছাগলের বসন্তের টিকা এই রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে আমরা দেখতে পেয়েছি এবং টিকা কার্যকর হতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগে।’

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ