ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মিয়ানমারের কাছ থেকে কোটি কোটি ডলার কামিয়ে নিচ্ছে তেল-গ্যাস প্রতিষ্ঠানগুলো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৩, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১৬:৩৪, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
মিয়ানমারের কাছ থেকে কোটি কোটি ডলার কামিয়ে নিচ্ছে তেল-গ্যাস প্রতিষ্ঠানগুলো

সামরিক অভ্যুত্থান শুরু করার পর থেকে দুই বছরে মিয়ানমারের জান্তা সরকার বিশ্বের বৃহত্তম তেল ও গ্যাস পরিষেবা সংস্থাগুলো সামরিক শাসনকে সমর্থন দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো মিয়ানমারের কাছ থেকে কামিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি ডলার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। মিয়ানমারের উপর জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জান্তা ‘প্রতিদিন যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে।’ অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস অনুসারে, শিশু, গণতন্ত্রপন্থী কর্মী এবং অন্যান্য বেসামরিক ব্যক্তিসহ দুই হাজার ৯৪০ জন জান্তার হাতে নিহত হয়েছে।

এই সহিংসতার মধ্যে ফাঁস হওয়া মিয়ানমারের ট্যাক্স রেকর্ড এবং অন্যান্য প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং আইরিশ তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের ঠিকাদাররা মিয়ানমারের গ্যাস ফিল্ড অপারেটরদের প্রয়োজনীয় ড্রিলিং এবং অন্যান্য পরিষেবা প্রদান করেছে। অভ্যুত্থানের পর তারা কোটি কোটি ডলার মুনাফা অর্জন অব্যাহত রেখেছে।

গোপন এই নথিগুলো সরবরাহ করেছে অলাভজনক সংস্থা ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অব সিক্রেটস। এগুলো বিশ্লেষণ করেছে মিয়ানমারের অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ জাস্টিস ফর মিয়ানমার, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সংস্থা ফাইন্যান্স আনকভার্ড এবং দ্য গার্ডিয়ান।

নথিগুলি থেকে বোঝা যায়, কিছু ক্ষেত্রে বড় মার্কিন গ্যাস ফিল্ড পরিষেবা সংস্থাগুলোর সহযোগী সংস্থা মিয়ানমারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি রয়েছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গত বছরের জানুয়ারিতে সতর্ক করেছিল। এরপরও মিয়ানমারের জাতীয় তেল ও গ্যাস কোম্পানি মায়ানমা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম তেল কোম্পানি হ্যালিবার্টনের সিঙ্গাপুরভিত্তিক সহযোগী সংস্থা মিয়ানমার এনার্জি সার্ভিসেস ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমারে ৬৩ লাখ ডলার প্রাক-কর মুনাফা অর্জন করেছে। 

ইয়াঙ্গুনে হিউস্টন সদর দফতরের তেল পরিষেবা সংস্থা বেকার হিউজেস শাখা ২০২২ সালের মার্চ থেকে ছয় মাসে দেশে ২৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার প্রাক-কর মুনাফা অর্জন করেছে।

মার্কিন ফার্ম ডায়মন্ড অফশোর ড্রিলিং ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মিয়ানমারের ট্যাক্স কর্তৃপক্ষকে তিন কোটি ৭০ লাখ ডলার এবং তারপর থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত আরও দুই কোটি ৪২ লাখ ডলার ফি দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত বিশ্বের বৃহত্তম অফশোর ড্রিলিং কোম্পানির পানামাভিত্তিক সাবসিডিয়ারি শুলেমবার্গার লজিলকো মিয়ানমারে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বছরে পাঁচ কোটি ১৪ লাখ ডলার মুনাফা অর্জন করেছে এবং ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত জান্তার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কাছে পরিষেবা ফি বাবদ দুই লাখ ডলার পাওনা ছিল। 
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়