ঢাকা     সোমবার   ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ৭ ১৪৩১

সব সংকট পেরিয়ে বড় পর্দায়ও করতালি পাচ্ছেন মেহজাবীন

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৪, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১০:৫৫, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
সব সংকট পেরিয়ে বড় পর্দায়ও করতালি পাচ্ছেন মেহজাবীন

মেহজাবীন চৌধুরী

ছোটপর্দার সবচেয়ে দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রীদের অন্যতম মেহজাবীন চৌধুরী। ২০১০ সালের ২২ জানুয়ারি লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন তিনি। বিজয়ের মুকুট ছিনিয়ে নিয়ে দেশের বাড়ি চট্টগ্রামে চলে যান। এর কিছুদিন পর চ্যানেল আই থেকে নাটকে অভিনয়ের ডাক পান। কিন্তু রাজি হননি মেহজাবীন। কারণ বাংলা বলতে সমস্যা হতো তার।

ছোটবেলা থেকে বিদেশে কাটানোর কারণে বাংলা বলতে তার সমস্যা হতো। কিন্তু সুন্দরী প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর বসে থাকলে তো চলবে না। এ পরিস্থিতিতে কি নাটকে অভিনয় করবেন না মেহজাবীন?

আরো পড়ুন:

কীভাবে নাটকে অভিনয়ের যাত্রা শুরু করেন, সেই বর্ণনা দিয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “খুব করে তারা আমাকে বোঝালেন, গল্পটি আমার ওপরই। একজন মেয়ে দেশের বাইরে থেকে এসে বাংলাদেশের সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। কীভাবে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়, সেটা নিয়েই গল্প। আমাকে বোঝানো হলো, ঠিকমতো বাংলা বলতে না পারা সমস্যা নয়। অভিনয়ের সময় সব দিকে থেকে সাহায্য করা হবে। শেষ পর্যন্ত ঢাকাতে এলাম। কিন্তু কাজের আগেই সমস্যা আরো ঘনীভূত হলো।”

খানিকটা ব্যাখ্যা করে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “আমি আগে ভাবতাম, নাটকের শুটিংয়ের আগে শিল্পীদের চিত্রনাট্য দেওয়া হয়, অনুশীলন করতে হয়, তারপর শুটিং। অনুশীলন তো দূরের কথা, শুটিংয়ের আগে চিত্রনাট্যই দেওয়া হলো না। আমি তো চিন্তায় পড়ে গেলাম। ক্যামেরার সামনে কীভাবে কী করব, ভয় পাচ্ছিলাম।”

২০১০ সালের জানুয়ারির শেষের দিকে প্রথম নাটকের শুটিংয়ে অংশ নেন মেহজাবীন চৌধুরী। তার ভাষায়, “জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে শুটিং হয়। শুটিংয়ের দুদিন আগে আমাকে বলা হলো, শুটিংয়ে কয়েকটি সালোয়ার-কামিজ ও শাড়ি নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আমি তো চিত্রনাট্যই পাইনি, চরিত্রের সঙ্গে মিলিয়ে কেমন সালোয়ার-কামিজ, কেমন শাড়ি সঙ্গে নেব, সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। নিজের টাকায় কস্টিউম কিনতে হবে, সেটাও জানা ছিল না। কারণ টাকাটাও তো একটা ব্যাপার ছিল। সব মিলিয়ে অনেকটাই নার্ভাস হয়ে গেলাম।”

প্রথম দিনের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “সবকিছু মিলিয়ে ভয়, কিছুটা নার্ভাসনেস নিয়ে মাকে সঙ্গে করে শুটিং লোকেশনে গেলাম। প্রথম দিন ধানমন্ডি, টিএসসি, চারুকলায় কাজ ছিল। তবে কাজ করতে গিয়ে ভয় কিছুটা দূরও হয়। জানতে পারলাম, ফাহমি ভাইয়েরা কোনো চিত্রনাট্য দেন না শিল্পীদের, এভাবেই কাজ করেন। প্রথম প্রথম তো একেকটি দৃশ্যের জন্য অনেকবার টেক নিতে হয়েছে। কিন্তু কোনো রকম বিরক্ত হননি পরিচালক। বরং পরিচালক এতটাই দক্ষ যে আমার প্রতিটি দৃশ্যই ধরে ধরে বুঝিয়ে কাজ করছিলেন। তখন বুঝলাম, কতটা মেধাবী পরিচালক ফাহমি ভাই।”

মেহজাবীন চৌধুরী তার প্রথম নাটকে সহশিল্পী হিসেবে পান মাহফুজ আহমেদকে। সেই তো অভিনয়ের যাত্রা শুরু। এরপর সময়ের সঙ্গে অভিনয় ও বাংলা ভাষায় দক্ষ হয়ে উঠেন মেহজাবীন চৌধুরী। উপহার দেন ‘বুকের বাঁ পাশে’-এর মতো তুমুল জনপ্রিয় নাটক। ১৪ বছরের অভিনয়জীবনে খণ্ডনাটক, ধারাবাহিক, ওটিটি মিলিয়ে ৪৯০টির বেশি কনটেন্টে অভিনয় করেছেন তিনি।

মেহজাবীন চৌধুরী অভিনয় ক্যারিয়ারের ১৪ বছর পার করলেও, এতদিন তাকে বড় পর্দায় দেখা যায়নি। তার ভক্ত-অনুরাগীরাও প্রিয় অভিনেত্রীকে বড় পর্দায় দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছেন। গত ২০ ডিসেম্বর সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বড় পর্দায় হাজির হয়েছেন মেহজাবীন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্রের নাম ‘প্রিয় মালতী’। শঙ্খ দাশগুপ্ত পরিচালিত এ সিনেমার নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন মেহজাবীন।

মূলত, মালতী রানী দাশ নামে নিম্ন মধ্যবিত্ত লড়াকু নারীর চরিত্র রূপায়ন করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী। পলাশ কুমার দাশ নামে এক তরুণের সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন গল্পের মালতী। মুক্তির পর ভূয়সী প্রশংসা কুড়াচ্ছেন তিনি। অভিনেত্রী আফসানা মিমি, জয়া আহসান, রুনা খান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, বিজরী বরকতুল্লাহ, নাবিলা, তমা মির্জা, অভিনেতা ইন্তেখাব দিনারের মতো শিল্পীরা তার অভিনয়ের প্রশংসা করছেন।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়