ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে বিসিবির সিদ্ধান্তে সমর্থন ডমিঙ্গোর

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪০, ২ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ০০:২৭, ৩ অক্টোবর ২০২০
শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে বিসিবির সিদ্ধান্তে সমর্থন ডমিঙ্গোর

দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানোর লক্ষ্যে সেপ্টেম্বরে জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্প শুরু হয়। তবে কোয়ারেন্টাইন ইস্যুতে সমঝোতা না হওয়ায় দ্বীপরাষ্ট্রে সফরটি স্থগিত করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। শ্রীলঙ্কা সফর না হওয়াতে হতাশ হয়েছেন টাইগার কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। মিরপুরে আজ (শুক্রবার) সাংবাদিকদের এমনটাই জানিয়েছেন জাতীয় দলের এই প্রোটিয়া কোচ। তবে ডমিঙ্গো জানিয়েছেন, এই সফর না করার পেছনে বিসিবির সিদ্ধান্তে পূর্ণ সমর্থন আছে তার। এই প্রোটিয়া কোচের চোখে বিসিবি সঠিক সিদ্ধান্তটিই নিয়েছে।

‘শ্রীলঙ্কা সফর না হওয়াতে আমি অবশ্যই হতাশ।’- এভাবেই নিজের আক্ষেপের কথা জানিয়েছেন ডমিঙ্গো। তবে শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি; এমনটাই মনে করেন এই প্রোটিয়ান।

তার ভাষ্যে, ‘আমি মনে করি, শ্রীলঙ্কা সফরের ক্ষেত্রে বিসিবি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। সেখানে লম্বা সময় ধরে হোটেল রুমে আবদ্ধ থাকা খুব কঠিন হবে। এমনকি কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই দশ দিন আবদ্ধ থেকে টেস্ট ম্যাচে নামা অযৌক্তিক। আমি তাই বিসিবির সিদ্ধান্তে পুরোপুরি সমর্থন জানাই।’

শ্রীলঙ্কা সফরের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অসুবিধা ছিল, দ্বীপরাষ্ট্রটিতে পা রাখলেই বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের আইসোলেশনে থাকতে হবে ক্রিকেটারদের। তবে এটি ক্রিকেটারদের জন্য খুব কঠিন হতো জানিয়ে ডমিঙ্গো আরও যোগ করেন, ‘আমাদের দুইজন ক্রিকেটার পাঁচ-ছয়দিন আইসোলেশনে ছিলো। তারা বলেছে বিষয়টা খুব কষ্টসাধ্য। সেখানে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে একটা ছোট হোটেল রুমে টানা ১৪ দিন আবদ্ধ থাকা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। আমার মনে হয়, কয়েকজন হয়ত বিষয়টির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারতো, কিন্তু সবাই না। আর বিসিবি সবার কথা বিবেচনা করেই কিন্তু সিদ্ধান্তটা নিয়েছে।’

বাংলাদেশে ডমিঙ্গো এসেছেন মাসখানেক হলো। এই সময়ে নিজেই হোটেলে আইসোলেশনে ছিলেন। এরসঙ্গে মাঠে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নিজেদের জন্য বিষয়টি খুব কষ্টের হলেও মেনে নিচ্ছেন। ক্রিকেটারদেরও একই ট্রমার মধ্য দিয়ে যেতে হতো জানিয়ে ডমিঙ্গো আরও যোগ করেন, ‘আমরা (কোচরা) এখানে জৈব সুরক্ষা বলয়ে আছি ২৮ দিন হলো। আমরা মাঠ এবং হোটেল ছাড়া আর কোথাও যেতে পারছি না। পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারছি না। আমরা জানি এটা কতটা কষ্টের। ক্রিকেটারদের জন্যও কিন্তু বিষয়টি একইরকম।’

ক্রিকেটারদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে তাই জাতীয় দলের ক্যাম্পও লম্বা সময় ধরে চালিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে নেই এই প্রোটিয়া কোচের। বরং ছোট ছোট মেয়াদে খেলা শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত ক্যাম্প করার পরিকল্পনা ডমিঙ্গোর।

টাইগার কোচ বলেন, ‘আমরা লম্বা ক্যাম্পের পক্ষে নয়। আমরা চাই আমাদের ক্যাম্পে যতবেশি সম্ভব ক্রিকেটার যুক্ত হোক। তবে আমরা এটিকে প্রথমে ছয়-সাতদিন এবং এখন দশদিনের মতো চালিয়ে যাচ্ছি। অবস্থার উন্নতির আগে পর্যন্ত এভাবেই চলতে হবে।’

‘ক্রিকেটারদের জন্য টানা এক মাস পরিবার থেকে দূরে থাকা এবং কোনো উদ্দেশ্য ছাড়া ক্যাম্প করা খুবই কঠিন বিষয় হবে। আমরা কেবল অনুশীলন করার জন্য ক্যাম্প করবো না। আমরা নিজেদের উন্নতির জন্য ক্যাম্প করছি। আর তাই ক্রিকেটারদের জন্যই আমরা তাদের বিরতি দিতে ইচ্ছুক। যাতে তারা আরও সতেজ এবং অনুপ্রাণিত হয়ে কাজে ফেরে। আমরা তাদের বিষয়ে খুব সচেতনতার সঙ্গে এগুতে চাই।’

এদিকে করোনার কারণে ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ার থেকে ইতিমধ্যে প্রায় সাত মাসের মতো হারিয়ে গেছে। ডিসেম্বরের আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার সম্ভাবনাও তেমন নেই। বিষয়টি যে কোনো ক্রিকেটারের জন্যই হতাশার বলে মানেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তবে কেবল নেতিবাচক ভাবনা নিয়ে থাকতে চান না এই প্রোটিয়ান। বরং করোনাকালেও ইতিবাচক দিক খুঁজছেন তিনি।

টাইগার এই কোচ আরও যোগ করেন, ‘পুরো বিশ্বের সব ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার থেকেই এই এক বছর হারিয়ে গেছে। যেসকল তরুণ ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক মঞ্চে সুযোগের অপেক্ষায় ছিল, তাদের জন্যও বিষয়টি কঠিন হয়ে উঠেছে। এটা আসলে সবার জন্যই হতাশার। তবে কিছু কিছু সময় ৭-৮ মাসের বিশ্রাম কিন্তু ভবিষ্যতে ক্যারিয়ার লম্বা করতে সহায়তা করে। হয়ত তখন মানসিক এবং শারীরিকভাবে আপনি ক্লান্তি অনুভব করবেন না। আমি তাই করোনার ইতিবাচক দিকটাই খুঁজে দেখতে রাজি।’

ঢাকা/কামরুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়