বাংলাদেশের হতাশার দিন, ৮ রানে পিছিয়ে উইন্ডিজ
অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিন কেটেছে হতাশায়। দেড় সেশনে ১০৩ রানে অলআউটের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২ উইকেটে বেশি নিতে পারেনি। অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৯৫ রানে। ৮ রানে পিছিয়ে দিন শেষ করে তারা। দারুণ অবস্থায় প্রথম দিনের ইতি টেনেছে স্বাগতিকরা। স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা খেলছেন পূর্ণ টেস্ট মেজাজে। কোনো তাড়াহুড়ো নেই তাদের। একের পর এক ডট বল দিয়েছেন, বল ছেড়েছেন। তারই পুরষ্কার স্বরূপ দিন শেষে স্বস্তিতে তারা। ১৪৯ বলে ৪২ রানে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও ৪৩ বলে এনক্রুমা বোনার ১২ রানে অপরাজিত আছেন। যদিও ব্র্যাথওয়েট শূন্য রানে ফিরতে পারতেন মুমিনুল ক্যাচ মিস না করলে। জন ক্যাম্পবেল ২৪ ও রেইফার ১১ রান করে আউট হন। বাংলাদেশের হয়ে ১টি করে উইকেট নিয়েছেন ইবাদত হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান। উইন্ডিজের রান পাহাড়ে চাপা পড়তে না চাইলে বাংলাদেশের বোলারদের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে দ্রুত উইকেট নিতে হবে। এ ছাড়া নেই কোনো বিকল্প।
বাংলাদেশ: ১০৩/১০ (৩২.৫ ওভার)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৯৫/২ (৪৮ ওভার)
ষোলো মাস পর ফিরেই দুর্দান্ত মোস্তাফিজ
মোস্তাফিজ সবশেষ টেস্ট খেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এবার লাল বলের চুক্তিতেও নেই এই পেসার। বিসিবিকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি ক্রিকেটের এই অভিজাত সংস্করণে খেলতে চান না। নানা নাটকিয়তার মাঝে ফিরেন দলে। প্রথম টেস্টেই জায়গা করে নেন একাদশে। দারুণ বোলিংয়ে বুঝিয়ে দেন তিনি টেস্টেও বোলিংয়ে সমান পারদর্শী। ১২ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১০ রান। উইকেট নিয়েছেন ১টি। মেডেনই ছয়টি। ওভার প্রতি রান ০.৮৩! দলের সবচেয়ে কৃপণ বোলার তিনি।
এবার মোস্তাফিজের বলে রিভিউ হারালো বাংলাদেশ
দিনের শেষ বেলায় এসে আরও একটি রিভিউ হারালো বাংলাদেশ। মোস্তাফিজের করা ৪৪তম ওভারের প্রথম বলেই বোনারের পায়ে লাগে। আড়াআড়িভাবে খেলতে চেয়েছিলেন এই ব্যাটসম্যান। জোরালো আবেদনে আম্পায়ার উইলসন সাড়া দেননি। সোহান এবারও নিশ্চিত আউটের ইঙ্গিত দেন লিটনকে। তখন মাঠে সাকিব ছিলেন না। লিটন রিভিউ নিলে দেখা বল লেগ স্ট্যাম্প মিস করে বেরিয়ে যাচ্ছে। এর আগে সাকিবের বলে রিভিউ হারিয়েছিল বাংলাদেশ। বাকি আছে মাত্র ১টি।
রেইফারকে ফেরালেন ইবাদত
ইবাদতের করা স্ট্যাম্প বরাবর ফুলার লেন্থের বল। রেইফার আড়াআড়ি শট খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে যায় উইকেটের পেছনে। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ ধরেন নুরুল হাসান সোহান। ২৬ বলে ১১ রান করেন রেইফার। এর আগে তিনি ৪ রানে জীবন পেয়েছিলেন লিটনের হাতে।
সাকিবের বলে রিভিউ হারালো বাংলাদেশ
সাকিবের করা তেত্রিশতম ওভারের তৃতীয় বল। অসাধারাণ ড্রিফটে সামনে এসে খেলতে চেয়েছিলেন ব্র্যাথওয়েট। বল মাটিতে পড়ে ব্যাট ঘেষে চলে যায় উইকেটের পেছনে। জোরালো আবেদন করেন সোহান। সাড়া না দিলে তিনি ইঙ্গিত দেন রিভিউর। সাকিবও সবুজ সংকেত দেন। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় বল ব্যাট স্পর্শ করেনি। রিভিউ হারায় বাংলাদেশ।
লিটনের কাছেই পরপর জীবন পেলেন রেইফার-ব্র্যাথওয়েট
মোস্তাফিজের করা ইনিংসের ২৮তম ওভারের চতুর্থ বলে ফিরতে পারতেন রেইফার। প্রথম স্লিপে ক্যাচ মিস করেন লিটন। যদিও একটু কঠিন ছিল। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও ধরতে পারেননি ক্যাচ। ৪ রানে বেঁচে যান তিনি। পরের বলেই দ্বিতীয় জীবন পান ব্র্যাথওয়েট। এবারও ক্যাচ হাতছাড়া লিটনের। এটিও কঠিন ছিল কিন্তু অসম্ভব না। লেগ সাইডের বল ফ্লিক করার চেষ্টা করছিলেন ব্র্যাথওয়েট, বল যায় গালিতে। লিটন বাঁ দিকে ঝাঁপিয়েও তালুবন্দি করতে পারেননি। ১৫ রানে জীবন পান উইন্ডিজ অধিনায়ক। এর আগে শূন্য রানে জীবন পেয়েছিলেন মুমিনুলের হাতে।
অবশেষে ওপেনিং জুটি ভাঙলেন মোস্তাফিজ
ওপেনার জন ক্যাম্পবেলকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠালেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৭২ বলে ১ চারে ২৪ রান করেন এই ওপেনার। কিছুটা আনলাকি-ই বলা যায় ক্যাম্পবেলকে। আউটসাইড অফের বল ডিফেন্স করেছিলেন, কিন্তু ইনসাইড এজ হন তিনি। বল সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তার আগেই বেল পড়ে যায়। ২৬তম ওভারে গিয়ে প্রথম উইকেটের দেখা পেলো বাংলাদেশ।
১৬৪ বলে উইন্ডিজের ফিফটি
উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা খেলছেন ধীরে ধীরে। দিচ্ছেন ডটের পর ডট বল। সাবধানি খেলে দলীয় ফিফটি করে ২৭.২ ওভারে। বল লাগে ১৬৪টি। ক্রিজে আছেন ব্র্যাথওয়েট-রেইফার।
শূন্য হাতে চা বিরতিতে বাংলাদেশ
দ্বিতীয় সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশের ৫ উইকেট নিয়ে ইনিংসে শেষ করে দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ তাদের একটি উইকেটও নিতে পারেনি। ১৫ ওভারে বিনা উইকেটে ১৫ রান নিয়ে চা বিরতিতে গিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে আছে ৮৮ রানে। অন্যদিকে বাংলাদেশ বিরতিতে গিয়েছে শূন্য হাতে। ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ৯ ও জন ক্যাম্পবেল ১ রানে অপরাজিত আছেন। দুজনে বলের পর বল ডট দিয়ে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছেন ক্রিজে। যদিও ব্র্যাথওয়েট শূন্যরানেই ফিরতে পারতেন মুমিনুল দ্বিতীয় ওভারে ক্যাচ মিস না করলে।
মুমিনুলের ক্যাচ মিস, সতর্ক ওয়েস্ট ইন্ডিজ
তৃতীয় ওভারে মোস্তাফিজের লেগ সাইডের বল লেগে ক্লিপ করতে চেয়েছিলেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। ব্যাটে বলে ঠিকমত সংযোগ হয়নি। ক্যাচ যায় লেগ গালিতে, কিন্তু মুমিনুল ধরতে ব্যর্থ হন। শূন্য রানে জীবন পান উইন্ডিজ অধিনায়ক। স্বাগতিকরা প্রথম ৫ ওভারে কোনো রান তুলতে পারেনি। ৬ষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে জন ক্যাম্পবেলের ব্যাটে প্রথম রান আসে। দুই ওপেনারই খেলতে থাকেন সাবধানে। বলের পর বল ছাড়ছেন, ডট দিচ্ছেন। দুজনেই দিচ্ছেন ধৈর্যের পরীক্ষা। যেটা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পারেননি। ১০ ওভার পার হলেও উইন্ডিজের রান ১০ অতিক্রম করেনি এখনো।
সাকিবের ফিফটিতে একশ পার করে অলআউট বাংলাদেশ
সাকিব আল হাসানের ওয়ানডে মেজাজে করা ফিফটিতে কোনোমতে একশ পার করে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ৩২.৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১০ উইকেটে ১০৩। ৪১ রানে ৫ উইকেট পড়ার পর ক্রিজে আসেন সাকিব। এরপর তিনি একাই যোগ করেন ৫১ রান। বাকি ৫ ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন রোচের হাতে। ৬৭ বলে এই রান করেন সাকিব। তার আউটের পর মাত্র ৩ বলে স্থায়ী হয়েছিল বাংলাদেশের ইনিংস। এ ছাড়া তামিম ইকবাল ২৯ ও লিটন দাস ১২ রান করেন। ২ রান আসে মিরাজের ব্যাট থেকে। ৬ ব্যাটসম্যান আউট হন শূন্য রানে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে খালেদ আউট হন শূন্য রানে। ইবাদত অপরাজিত ছিলেন ৩ রানে। উইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট করে নিয়েছেন জোসেফ-সিলস। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নেন কেমার রোচ ও কাইল মায়ার্স।
শূন্য রানে আউটের রেকর্ড!
বাংলাদেশের ৬ জন ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন শূন্য রানে। এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টেও ৬ জন আউট হয়েছিলেন শূন্যতে। এই নিয়ে মোট তৃতীয় বার। প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দুইবার এই বাজে রেকর্ড হলো বাংলাদেশের। আর কোনো দেশের একাধিকবার শূন্যতে আউটের রেকর্ড নেই!
ওয়ানডে মেজাজে সাকিবের ফিফটি, বাংলাদেশের সেঞ্চুরি
সিলসকে লং অফে দারুণ চারে ৬৫ বলে ফিফটি হাঁকান সাকিব। এর সঙ্গে ৩১.৩ ওভারে বাংলাদেশ শতরান পূর্ণ করে। সাকিব লড়ছেন একাই। তার সতীর্থরা আছেন আসা যাওয়ার মিছিলে। বাংলাদেশ অধিনায়ক ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে খেলছেন ওয়ানডে মেজাজে। রান নিচ্ছেন ওভারের শেষ দিকে। যতটা সম্ভব চেষ্টা করছেন সঙ্গী ইবাদতকে কম স্ট্রাইক দিতে। তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৮তম ফিফটি সাজানো ছিল ৬টি চার ও ১টি ছয়ে। এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নবম ফিফটি।
ফিরলেন মোস্তাফিজ, সাকিবের সঙ্গী ইবাদত
এবার ফিরলেন মোস্তাফিজুর রহমান। রানের খাতা খুলতে পারেননি এই পেসার। এই নিয়ে বাংলাদেশের ৫ ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হলেন। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী ইবাদত হোসেন। ওয়ানডে মেজাজে খেলছেন সাকিব। চেষ্টা করছেন দ্রুত রান তোলার। এটা ছাড়া উপায়ও নেই কোনো তার সামনে।
বিরতির পরেই ফিরলেন মিরাজ
মধ্যাহ্ন বিরতির আগে সাকিব আল হাসানকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। বিরতি থেকে ফিরেই সিলসের শিকার হয়ে ফেরেন সাজঘরে। লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বল অহেতুক ফ্লিক করতে গিয়ে ধরা পড়েন এই অলরাউন্ডার। ব্যাটে লেগে বল যায় উইকেটের পেছনে। ২২ বলে ২ রান করেন এই অলরাউন্ডার। ক্রিজে সাকিবের সঙ্গী মোস্তাফিজুর রহমান।
বিপর্যয়ের পর প্রথম সেশনে সাকিব-মিরাজের প্রতিরোধ
অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম সেশন ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। ১৬ রানে তিন উইকেট হারানোর পর তামিম-লিটন প্রতিরোধ গড়েন। পানি পানের বিরতির পর আবার ৭ বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৫ ওভারে ৬ উইকেট হারায় মাত্র ৪৫ রানে। বাংলাদেশের চার ব্যাটসম্যান আউট হন শূন্য রানে। তামিম ২৯ ও লিটন করেন ১২ রান। এরপর জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ। দুজনে ৬০ বলে ৩১ রান যোগ করেন। প্রথম সেশনে ২৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭৬ রান। সাকিব ২৭ ও মিরাজ ২ রানে অপরাজিত আছেন। এই জুটিই এখন বাংলাদেশের ভরসা। রোচ-মায়ার্স নেন ২টি করে উইকেট। ১টি করে নেন সিলস-জোসেফ।
বাংলাদেশের ফিফটি, ভরসা এখন সাকিব-মিরাজ
১৭.১ ওভারে আলঝারি জোসেপকে মিড অনে চার মেরে দলীয় ফিফটি পূর্ণ করেন সাকিব। বাংলাদেশ অধিনায়ক মেরে খেলার চেষ্টা করছেন। পরের ওভারেই কাইল মায়ার্সকে লং অফে হাঁকান ৬। তার সঙ্গী মেহেদি হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের ভরসা এখন এই দুই অলরাউন্ডারের ব্যাটে। দুজনের জুটি থেকে আসে ৪২ বলে ২৫ রান। ১৬ রানে তিন উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েছিলেন তামিম-লিটন। দুজনেই ফেরেন পরপর দুই ওভারে। এরপর ক্রিজে এসে দ্বিতীয় বলেই আউট হন সোহান। ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
৭ বলের ব্যবধানে ফিরলেন তামিম-লিটন-সোহান
সাত বলের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারালো তামিম-লিটন-সোহানকে। ১৪তম ওভারের শেষ বল থেকে ১৫তম ওভারে এই তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৪তম ওভারের শেষ বলে ফেরেন তামিম। আর লিটন-সোহান ফেরেন কাইল মায়ার্সের ১৫তম ওভারে। মুশফিকের পরিবর্তে সোহান জায়গা পেয়েছিলেন একাদশে, কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। মাঠে আসলে প্রথম বলেই সোহানের লেগ বাই থেকে চার আসে। তার পরেই মায়ার্সের ইনসুইংগারে বাঁধে বিপত্তি। তার আউট সাইড অফের পিচ করা বল ফ্রন্ট ফুটে খেলতে চেয়েছিলেন সোহান, বল লাগে পায়ে। আম্পায়ার সাড়া দেন। বাংলাদেশ রিভিউ নিয়েছিল কিন্তু লাভ হয়নি। ২ বলে শূন্য রানে ফিরলেন এই ডানহাতি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। প্রথম ওভারেই মেইডেন দিয়ে ২ উইকেট নেন মায়ার্স।
প্রতিরোধের আভাস দিয়ে আউট তামিম-লিটন
দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলক অর্জনের পর সাজঘরে ফিরলেন তামিম ইকবাল। পানি পানের বিরতির পর ফিরেই আলঝারি জোসেফের শিকার হন তামিম। ১৪তম ওভারের শেষ বলে ব্যাট ছুঁয়ে যায় উইকেটের পেছনে। ৪৩ বলে ৪ চারে ২৯ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে কাইল মায়ার্সের শিকার হন লিটন দাস। তিনিও ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ৩৩ বলে ১২ রান করেন। ১৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর তামিম-লিটন জুটি বেঁধে প্রতিরোধ গড়েছিলেন।
৫ হাজারি ক্লাবে তামিম
৫ হাজার থেকে ১৯ রান দূরে থেকে অ্যান্টিগা টেস্টে নামেন তামিম ইকবাল। অন্যপ্রান্তে ব্যাটসম্যানরা যখন হাবুডুবু খাচ্ছিলেন তখন তিনি ছিলেন অবিচল। উলটো বাউন্ডারি মেরে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় বলে রোচকে ফ্লিক করে তিন রান নেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তাতে ৫ হাজার টেস্ট রানের মাইলফলক অর্জন করেন তামিম। মুশফিকুর রহিমের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে তামিম এই অর্জনে নাম লেখান। ৬৮ টেস্টে তামিম এই রান করেন। গড় ৩৭.৯৩। সেঞ্চুরি ৯টি হাঁফ সেঞ্চুরি ২৫টি।
শূন্যতে শেষ জয়-শান্ত-মুমিনুল
কেমার রোচের করা ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই আউট মাহমুদুল হাসান জয়। এক ওভার পর রোচের শিকার নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনিও ফিরলেন শূন্য রানে। শান্তর পর ক্রিজে আসেন মুমিনুল হক। তিনি হাল ধরতে পারেননি। পঞ্চম ওভারে সিলসের শিকার হয়ে ফিরলেন শূন্য রানে। ১৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। তিন ব্যাটসম্যানই ফিরলেন শূন্য রানে। ক্রিজে তামিমের সঙ্গী লিটন দাস।
ব্যর্থতার বৃত্তে মুমিনুল
রান পাওয়ার জন্য নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন মুমিনুল হক। প্রথম টেস্টেই ব্যর্থ। দল যখন দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে তখন ফিরলেন শূন্য রানে। সিলসের আউটসাইড অফের বল মুমিনুলের ব্যাট ছুঁয়ে যায় স্লিপে। বল তালুবন্দি করতে ভুল করেননি ব্ল্যাকউড। ৬ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি মুমিনুল। সবশেষ ৬ টেস্টে মুমিনুল ৪ বার আউট হয়েছেন শূন্য রানে। একবার মাত্র ২ অঙ্কের ঘর পার হয়েছেন।
শান্তও পারলেন না হাল ধরতে
তৃতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। রোচের বলে এগিয়ে এসে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন শান্ত, কিন্তু বল মুভ করে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে ভেঙে দেয় স্ট্যাম্প। শান্ত সব শেষ শ্রীলঙ্কা সিরিজে ১১ রান করেছিলেন। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে ফিরলেন শূন্য রানে। ৫ বল খেলে ফেরেন খালি হাতেই। বিপদ বাড়ে দলের।
শূন্যতে শেষ জয়
কেমার রোচের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে জয়কে স্ট্রাইক দেন তামিম ইকবাল। আউট সাইড অফের এক্সট্রা বাউন্স করা লেন্থ বলে খোঁচা দিয়ে বসেন তরুণ এই ওপেনার। ধরা পড়েন স্লিপে দাঁড়ানো বোনারের হাতে। সবশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টেও শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন। তার ৭ টেস্টের ক্যারিয়ারে শূন্য আছে ৫টি!
একাদশে মোস্তাফিজ-সোহান, ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস বাংলাদেশ সময় আজ বৃহস্পতিবার (১৬) রাত ৮টায় মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাটিং করছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ একাদশ সাজিয়েছে তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে। একাদশে এসেছে মোস্তাফিজুর রহমান। তার সঙ্গী খালেদ আহমেদ ও ইবাদত হোসেন। স্পিনে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী মেহেদি হাসান মিরাজ। মুশফিকুর রহিমের পরিবর্তে দলে জায়গা পেয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। সবশেষ খেলা টেস্ট একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন মুশফিকুর রহিম ও তাইজুল ইসলাম।
বাংলাদেশ একাদশ:
তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নুরুল হাসান সোহান (উইকেটকিপার), মেহেদি হাসান মিরাজ, খালেদ আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও ইবাদত হোসেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ
ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট, জার্মেইন ব্ল্যাকউড, এনক্রুমা বোনার, জন ক্যাম্পবেল, জশুয়া ডা সিলভা, আলজারি জোসেফ, কাইল মায়ার্স, গুডাকেশ মোটি, রেমন রেইফার, জেইডেন সিলস, কেমার রোচ।
খেলা দেখা যাবে ২ ডলারে
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগ মুহূর্তেও সম্প্রচার নিয়ে জটিলতা কাটেনি। কোনো চ্যানেলে খেলা দেখানো হচ্ছে না। তবে বিকল্প উপায়ও আছে খেলা দেখার। এ জন্য খরচ করতে হবে গাঁটের পয়সা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খেলা দেখায় আইসিসির ডিজিটাল মিডিয়া তথা আইসিসি টিভি। ওয়েস্ট ইন্ডিজে বাংলাদেশের খেলাও এর বাইরে নয়। পুরো সফরের দুটি টেস্ট ও তিনটি করে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি দেখা যাবে মাত্র ২ ডলারে।
২০০৯ এর স্মৃতি বাইশে ফেরাতে পারবেন সাকিব?
ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড ভালো নয়। ১৮ ম্যাচে জয় মাত্র ৪টিতে। আর তাদের মাটিতে ৭টি খেলে জয় ২টিতে। সেই জয় এসেছে ২০০৯ সালে। সবশেষ তিনটি সিরিজের বাংলাদেশ জিতেছে একটি সিরিজ, তাও দেশের মাটিতে। আর সবশেষ সফরে দুই টেস্টেই হার, একটিতে ইনিংসসহ। প্রথম টেস্টের ভেন্যু অ্যান্টিগায় আছে সর্বনিম্ন ৪৩ রানে অলআউট হওয়ার বাজে রেকর্ডও।
অধিনায়ক সাকিবের তৃতীয় যাত্রা
বছরের শুরুতে নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জিতে ভালো কিছুর আভাস দিয়েছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। কিন্তু সময়ের সঙ্গে মুমিনুল যেন মাঝসমুদ্রের দিশেহারা নাবিক। তার পারফরম্যান্সের সঙ্গে দলের অবস্থাও নামতে থাকে তলানিতে। রানে ফিরতে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান মুমিনুল। নেতৃত্বের ভার কাঁধে নেন দেশের ক্রিকেটের পোস্টারবয় সাকিব আল হাসান। ক্যাপ্টেন হিসেবে সাকিবের তৃতীয় যাত্রা শুরু হতে যাচ্চে আজ থেকে। শুধু তাই নয় অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের প্রথম এবং দ্বিতীয় যাত্রাও এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। প্রথম যাত্রায় তাদের মাটিতে সিরিজ জিতে শুভ সূচনা করেছিলেন সাকিব। ২০০৯ সালে জেতা সেই সিরিজই একমাত্র জয় তাদের মাটিতে। দ্বিতীয় যাত্রার শুরুটা হয়তো ভুলে যেতে চাইবেন আর আর তৃতীয় ও সম্ভবত শেষবারের মতো নেতৃত্বটা রাঙাতে চাইবেন নিশ্চই।
ঢাকা/রিয়াদ