ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ভীন দেশি ফুলে সেজেছে জাবি 

ইমন ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৬, ২৪ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১১:৩২, ২৪ মার্চ ২০২১
ভীন দেশি ফুলে সেজেছে জাবি 

ক্যাসিয়া রেনিজেরার সৌন্দর্যে নতুন রূপে সেজেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

প্রতি বছরের মতো এবারও মন মাতানো মনোমুগ্ধকর থোকা থোকা ক্যাসিয়া ফুলে ক্যাম্পাসের প্রকৃতি পেয়েছে নতুন রূপ, নতুন প্রাণ। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে এবং মার্চ-এপ্রিল মাসে ক্যাসিয়া গাছে ফুল ফোটে। বৈচিত্র্যময় এই ক্যাসিয়া রেনিজেরার ফুল গাছ। পাতা শূন্য গাছে বিভিন্ন রংয়ের ফুলগুলো যেন মন কাড়ে ক্যাম্পসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পর্যটকদের।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অন্যতম আকর্ষণ হলো ক্যাসিয়া রেনিজেরা ফুল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে এই ফুল গাছগুলোর অবস্থান। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে, পুরাতন কলা ভবনের ভেতরে, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে, জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের সামনে অবস্থিত গাছগুলোতে ক্যাসিয়া ফুল ফুটেছে।

ক্যাসিয়া রেনিজেরা একটি বিদেশি ফুল। এর আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ জাপানে। আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই ফুল গাছ ছিল না। জানা যায়, ২০০০ সালের কোনো এক সময় ড. এ আর খান সর্বপ্রথম ক্যাসিয়া রেনিজেরার বীজ সংগ্রহ করে, চারা উৎপাদন করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে রোপণ করেন। ক্যাসিয়া রেনিজেরার ফুল ও বীজ অনেকটা সিম আকৃতির লম্বা দন্ডের ফল। ফুলের ভেতর গোলাকৃতির বীজ।

আতা ও ডালিম গাছের সঙ্গে অনেকটা তুলনীয়। ক্যাসিয়া রেনিজেরার বৈজ্ঞানিক নাম হলো বার্মিজ পিংক ক্যাসিয়া। এই গাছের উচ্চতা প্রায় ১০ মিটার হয়ে থাকে। মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই ফুল ধরতে শুরু করে। বর্ষা মৌসুম ছাড়া প্রায় প্রতিটি সময়েই ক্যাসিয়া গাছ থাকে পাতা শূন্য।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের মার্চ মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থী শূন্য ফাঁকা ক্যাম্পাসে প্রকৃতি পেয়েছে তার আপন রূপ। ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে ক্যাসিয়া রেনিজেরার ফুলগুলো। এ যেন এক স্বর্গ। এ ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে ক্যাম্পাসের আশেপাশে থাকা ক্যাম্পাস প্রেমীরা ভিড় জমাচ্ছেন। এদিকে ক্যাসিয়া রেনিজেরার অপরূপ সৌন্দর্য বাস্তবে উপভোগ করতে না পেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী সঙ্গীতা কর্মকার তিথি ক্যাম্পাসের ক্যাসিয়া রেনিজেরা ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে বলেন, ক্যাসিয়া রেনিজেরা ফুলটির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা পেজে দেখে এক বান্ধবীর মাধ্যমে জানতে পারি এর নাম। অনেক মায়া আর সৌন্দর্য আছে ফুলটির মাঝে। ভেবেছিলাম গাছ যখন আছে তখন ক্যাম্পাসে থাকাকালীন একবার না একবার দেখতে পাবো এই ফুল। কিন্তু বর্তমানে করোনাকালীন সময়ে এই মনোমুগ্ধকর ফুলে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়লেও তা দেখার সৌভাগ্য হচ্ছে না আমার। যা সত্যি মনকে খারাপ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তবে আশা রাখছি সামনের বছর হয়তো আবার এই ফুলের দেখা পাবো ক্যাম্পাসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রকৃতির নৈসর্গিক খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ক্যাসিয়া রেনিজেরার ফুল অনেক ভূমিকা রাখে। এটা শুধু ফুলই নয়, এটা দেখতে অনেকটা শূন্যে ভাসা হিমবাহের মতো। জাপানের দৃষ্টিনন্দিত এই ফুল দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়।

লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

জাবি/মাহি 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়