ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বেগুনি পাতার ধান ‘সুবর্ণা এরি’

সাইফুল্লাহ হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৪, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৫:৫৬, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০
বেগুনি পাতার ধান ‘সুবর্ণা এরি’

চারপাশে সবুজ ধানের সমারোহ। মাঝখানে ব‌্যতিক্রমী বেগুনি রংয়ের একটি ক্ষেত। ধান ক্ষেত। প্রথমে দেখে যে কেউ অবাক হয়ে যেতে পারেন। তবে ব‌্যতিক্রম রং হলেও অন‌্য আর সব ধানের মতোই এটিও একটি ধানের জাত। নাম সুবর্ণা এরি ধান।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রথমবারের মতো এই ব‌্যতিক্রমী বেগুনি পাতার ধানের চাষ করেছেন কৃষক মো. ছালেহ আহমদ।

উপজেলার আশিদ্রোণ ইউনিয়নের তিতপুর গ্রামে বাড়ি তার। তার ক্ষেত দেখে অন‌্যদের মাঝেও আগ্রহ দেখা দিয়েছে। ফলন ভালো পেলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে এই ধানের চাষ করার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

মৌলভীবাজার কৃষি বিভাগ বলছে, এই ধানের আয়ুষ্কাল একটু কম। যদি ফলন আশানুরূপ হয়, তবে সৌখিন কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হবে এই জাতের ধান।

কৃষক ছালেহ আহমদ জানান, বেগুনি রংয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে তিনি এ জাতের ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। পরে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সহযোগীতা নিয়ে ধান চাষ করেছেন।

ছালেহ আহমদ বলেন, ‘জমিতে বীজ রোপণের পর খুব বেশি পরিচর্যা করতে হয়নি। সারও লেগেছে কম। গাছের বাড়বাড়ন্ত দেখে আশপাশের বহু মানুষ আমার ক্ষেত দেখতে আসছেন। দ্রুত ফলন দেওয়ায় এই জাতের ধানে রোগ বা পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয় না। গাছ শক্ত হওয়ায় ঝড়-বৃষ্টিতেও হেলে পড়ার সম্ভাবনা কম। প্রথমবার চাষ করলেও ধানের চারার স্বাস্থ‌্য দেখে ফলন বেশি পাওয়ার আশা করছি।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নতুন চাষ শুরু হওয়া এ ধানের নাম পার্পল লিফ রাইস। দেশে সর্বপ্রথম এ জাতের ধানের আবাদ শুরু হয় গাইবান্ধায়। সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ধান। ধানের গায়ের রং সোনালী ও চালের রং বেগুনি। উফশী (উচ্চ ফলনশীল) জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটাই কম হয়। রোপণ থেকে ধান পাকতে সময় লাগে ১৪৫-১৫৫ দিন।

অন্য জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের গোছা প্রতি কুশির পরিমাণ বেশি থাকায় একর প্রতি ফলনও বেশ ভালো। একর প্রতি ফলন ৫৫ থেকে ৬০ মণ হয়ে থাকে। অন্য সব ধানের তুলনায় এ ধান মোটা, তবে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এ চালের ভাতও সুস্বাদু।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, ‘বেগুনি রংয়ের এই ধান বিদেশি নয়। এটা আমাদের দেশি জাতেরই ধান। আগে অন্যান্য জেলায় চাষ হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো শ্রীমঙ্গল উপজেলায় চাষ হচ্ছে। একজন চাষী পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছেন। ফলন ভালো হলে উৎপাদিত ধানগুলো বীজ আকারে রাখা হবে। ধানক্ষেতটি নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে এই ধান বোরো মৌসুমের জাত।’

মৌলভীবাজার/সনি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়