ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুঁটকি’জ ব্র্যান্ডের উদ্যোক্তা তৌহিদ

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ০৯:৪২, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুঁটকি’জ ব্র্যান্ডের উদ্যোক্তা তৌহিদ

চট্টগ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা তৌহিদুল ইসলাম

অধিকাংশ মানুষই শুঁটকি খেতে পছন্দ করেন। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রয়েছে শুঁটকির চাহিদা। উপকূলীয় জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি শুঁটকি উৎপাদিত হয় এবং এই অঞ্চলের শুঁটকির স্বাদই সবচেয়ে অনন্য। দেশীয় খাবারের ঐতিহ্যের অংশ শুঁটকি সাধারণত স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেই কিনতে হয়।

কিন্তু আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে শুঁটকির উৎপাদন, স্বাদে এবং মান সঠিক রেখে শুঁটকিও যে একটি  ব্র্যান্ডেড পণ্য হতে পারে তার প্রমাণ করেছে চট্টগ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা তৌহিদুল ইসলাম। শিক্ষা এবং পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার তৌহিদ এখন চট্টগ্রামের শুঁটকির একজন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড অ্যাম্বেসেডর। তার শুঁটকি ব্র্যান্ডের নাম ‘শুঁটকি’জ। ঢাকা-চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে তার শুঁটকি’জ এর কদর দেশে-বিদেশে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।

আরো পড়ুন:

শুঁটকি’জ এর উদ্যোক্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আইটি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে শুঁটকির উদ্যোক্তা হবো- এমনটা কখনো কল্পনাও করিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে হঠাৎ করেই বিষয়টি মাথায় আসে। শুঁটকি নিয়ে কাজ করার জন্য একবছর ধরে গবেষণা, ফিল্ড ওয়ার্ক, মার্কেট স্ট্যাডি করেছি। কোনো ধরনের কৃত্রিমতা ছাড়া, রাসায়নিকের ব্যবহার ব্যতীত প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত শুঁটকি কিভাবে যথাযত মান বজায় রেখে গ্রাহকের হাতে তুলে দেওয়া যায় এবং চট্টগ্রামের শুঁটকিকে কিভাবে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ভেল্যু দেওয়া যায় তা নিয়ে কাজ করেছি। এর পর ২০২০ সালের শুরুর দিকে অনলাইনে এবং অফলাইনে যাত্রা শুরু হয় শুঁটকি’জ ব্র্যান্ডের।’

শুঁটকি’জ এখন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার তদারকিতে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে ১০ ধরনের শুঁটকি উৎপাদন এবং বাজারজাত করছে। এই শুঁটকিসমূহের মধ্যে রয়েছে লাক্কা, রূপচান্দা, কোরাল, ছুরি,লইট্যা, সুরমা, ফাঁইশ্যা, পোপা, নোনা ইলিশ এবং চিংড়ি শুঁটকি। সর্বনিম্ন ৭০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪০০০ টাকা কেজি দামের শুঁটকি রয়েছে শুঁটকি’জ ব্র্যান্ডে।

তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এই অঞ্চলে অনেক ভালো মানের শুঁটকি উৎপাদিত হলেও সেসব শুঁটকি দেশের মানুষ খেতে পারে না। রপ্তানি হয়ে যায় বিদেশে। দেশের বাজারে গণহারে যে শুঁটকি বিক্রি হয় সেগুলোর অধিকাংশই কৃত্রিম উপায়ে শুকানো এবং নানা ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। ফলে এসব শুঁটকি যেমন স্বাদহীন এবং তেমনি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই আমি নিজ উদ্যোগে কক্সবাজারের নুনিয়ার ছড়া এলাকায় আন্তর্জাতিক সংস্থা জায়কা’র অনুমোদিত কারখানায় প্রাকৃতিক উপায়ে প্রিমিয়াম কোয়ালিটি শুঁটকি উৎপাদন ও দৃষ্টিনন্দন প্যাকেটে বাজারজাত করছি। বাছাই করা সামুদ্রিক মাছ থেকে দূষণমুক্ত ও ধুলোহীন পরিবেশে শতভাগ রোদে শুকিয়ে শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। পরবর্তীতে অনলাইনে নিজস্ব ওয়েভ সাইট এবং ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিক্রি করা হয়। এছাড়া স্থানীয়ভাবে অফলাইনেও বাজারজাত করা হয় শুঁটকি’জ ব্র্যান্ডের শুঁটকি।’

শুঁটকি’জ ব্র্যান্ডের উদ্যোক্তা তৌহিদুল ইসলাম একজন আইটি এক্সপার্ট এবং মাইক্রোসফট সার্টিফাইড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ২০০৭ সাল থেকে তিনি আইটি বিজনেসের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বর্তমানে শুঁটকির উদ্যোক্তার পাশাপাশি প্ল্যান-বি সল্যুশন নামের একটি আইটি ফার্ম পরিচালনা করছেন। চট্টগ্রামের এই তরুণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শুঁটকিকে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশে নিজস্ব ওয়েভ সাইটের পাশাপাশি সওদাগর ডট কম নামের একটি ই কমার্স প্রতিষ্ঠান শুঁটকি’জ এর মার্কেটিং পার্টনার হিসেবে কাজ করছে।

চট্টগ্রাম/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়