ঢাকা     সোমবার   ০৬ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

আসাবস্তী-কাপ্তাই সড়কে মুগ্ধতার হাতছানি

বিজয় ধর, রাঙামাটি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ১৮ মে ২০২৩  
আসাবস্তী-কাপ্তাই সড়কে মুগ্ধতার হাতছানি

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির আসাবস্তী-কাপ্তাই সড়কের ১৮ কিলোমিটার সড়কে যেন মুগ্ধতার হাতছানি। সড়কের একপাশে কাপ্তাই হ্রদের নীল জলরাশি, অন্যদিকে সবুজ পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য যে কাউকে বিমোহিত করে। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে যে সকল পর্যটক রাঙামাটি ঘুরতে আসে, তাদের সকলের দৃষ্টি কেড়ে নেয় এই সড়ক।

রাঙামাটিতে ঘুরতে আসা বেশিরভাগ পর্যটক এবং স্থানীয়রা এই সড়ক দিয়ে অল্প সময়ে কাপ্তাই উপজেলায় যাতায়াত করে। এই সড়ক ঘিরে এখানে গড়ে উঠেছে বেসরকারি পর্যটন স্পট বড়গাঙ, রাইন্যা টুগুন, বেরান্নে লেক এবং বাগী লেক ভ্যালী। এছাড়া এ সড়কে রয়েছে বৌদ্ধদের ধর্মীয় গুরু ও পরিনির্বানপ্রাপ্ত মহাসাধক সাধনানন্দ মহাস্থবির (বনভান্তের) জন্ম স্থানে স্মৃতি মন্দির। এছাড়া রয়েছে ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীর গ্রাম ও তাদের জীবনযাত্রা। প্রতিদিন এ মন্দির দেখতে শত শত পর্যটক ভিড় জমায়। সড়কের পাশে তৈরি করা হয়েছে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রাঙামাটির সদর উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ১৩ জুন পাহাড় ধসের ফলে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। পরে এই সড়ককে আকর্ষণীয় করে তুলতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি নতুন সেতু নির্মাণ ও সড়কটি দুই লেনে উন্নীত করে। রাঙামাটি সদর উপজেলা এলজিইডি অফিস জানায়, আগামী জুন মাসের মধ্যে সড়কের নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।

কুমিল্লা থেকে রাঙামাটি ঘুরতে আসা শাফিন বলেন, ‘আমি এর আগেও রাঙামাটি এসেছি। এই সড়কে কয়েকবার আসা হয়েছে। এখানে আসলে লেক ও পাহাড় দেখলে মনের বিষন্নতা কেটে যায়।’

ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে আসাবস্তী-কাপ্তাই সড়কে ঘুরতে আসা সালেহ হোসাইন বলেন, ‘রাঙামাটি থেকে কাপ্তাই যাওয়ার আসাবস্তী সড়ক খুবই সুন্দর। একপাশে পাহাড় এবং একপাশে কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্য এটা সত্যিই উপভোগ করার মতো।’ 

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জীবন এর সাধারণ সম্পাদক সাজিদ বিন জাহিদ বলেন, ২০১৭ সালে পাহাড় ধসের ফলে রাঙামাটিতে নতুন করে যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো হচ্ছে, বিশেষ করে আসাবস্তী-কাপ্তাই সড়কটি দৃষ্টিনন্দন। এই সড়কে প্রকৃতির বৈচিত্র্য, পাহাড় ও হ্রদের যে সংমিশ্রণ, এটি সকলকে মুগ্ধ করে। 

রাঙামাটি শহরের বাসিন্দা রুপেন ত্রিপুরা বলেন, ‘আসাবস্তী হয়ে যে সড়কটি কাপ্তাই পর্যন্ত গেছে, এতে স্থানীয়দের খুব উপকার হয়েছে। এতে খুব সহজে আমরা চলাচল করতে পারি।’ 

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাঙামাটি সদর উপজেলা প্রকৌশলী প্রণব রায় চৌধুরী বলেন, কাপ্তাই-আসাবস্তী সড়কের ১৮ কিলোমিটার দুই লেইনে উন্নীত হয়েছে। এটি রাঙামাটি এলাজিডির জন্য ট্রেডমার্ক। এই সড়ক রাঙামাটিতে আগত পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। 

প্রণব রায় চৌধুরী আরও বলেন, এই সড়কের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বরাদম এলাকায় নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে লাভ পয়েন্ট। যা পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। 

রাঙামাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী আহামদ শফি বলেন, রাঙামাটি থেকে কাপ্তাই যাওয়ার জন্য এটি বিকল্প সড়ক। এই সড়কের ফলে রাঙামাটি থেকে কাপ্তাইয়ের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার কমে গেছে। 

/বকুল/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়