ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাটের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ২৮ মে ২০২৩  
ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাটের অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে জোরপূর্বক ব্যক্তিমালিকানাধীন কৃষি জমির মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সাবেক উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কার্তিক চন্দ্র অধিকারী নামের এক ব্যক্তি।

রোববার (২৮ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের একটি পত্রিকা কার্যালয়ে ভুক্তভোগী এ সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় কার্তিকের ভাই বিকাশ চন্দ্র অধিকারীও উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, মাটি কেটে নেওয়ার ঘটনার বিচার চেয়ে কার্তিক অধিকারী চলতি বছরের ২ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মাহমুদের মাধ্যমে রিট দায়ের করেন। ২৫ জানুয়ারি বিচারক কেএম কামরুল কাদের ও মোহাম্মদ আলী বেঞ্চ বিষয়টি ২ মাসের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেন। কিন্তু ৪ মাস শেষ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মীমাংসা করে দেওয়া হয়নি।

একই দাবিতে, গত ১০ মে কার্তিক ফের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। একাধিকবার আবেদন করলেও জেলা প্রশাসক কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে জানান ভুক্তভোগী কার্তিক ও তার ভাই বিকাশ চন্দ্র অধিকারী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় হয়, জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর রইছা খাতুনের কাছ থেকে কার্তিক চন্দ্র অধিকারীর দাদা কৃষ্ণ চন্দ্র অধিকারী রামগতির চরগাজী ইউনিয়নের দক্ষিণ টুমচর মৌজায় ১০ একর ৩৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এসএ খতিয়ানেও কৃষ্ণ চন্দ্রের নামেই জমিটি রেকর্ডভুক্ত হয়। এরপর থেকে তিনি ওই জমির খাজনা পরিশোধ করেছেন। পরবর্তীতে ওয়ারিশ সূত্রে কৃষ্ণ চন্দ্রের ছেলে হরিহর অধিকারী ও ইন্দুভোষণ অধিকারী সমান ভাগে ৪ একর ৬০ শতাংশ জমির মালিক হন। হরিহরের মৃত্যুর পর তার তিন ছেলে কার্তিক, বিকাশ ও কানু লাল অধিকারী ওই জমির মালিক হন। এর মধ্যে ইন্দুভোষণের নামে কিছু জমি খাস খতিয়ানে চলে যায়। এ নিয়ে তিনি ২০২০ সালে ৮ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

২০২২ সালে মার্চ মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরী, সাবেক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রবিউল হাসান কাজলের নির্দেশনায় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. সানা উল্যা, চরগাজী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য নাছির উদ্দিন, নারী সদস্য মনোয়ারা বেগমের স্বামী মামুন মিয়া ও দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি ৭০ শতাংশ জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যায়। কিন্তু এ জমি খাস ছিল না। এ জমির মালিক কার্তিক ও তার দুই ভাই। জমিগুলো তারা বর্গা চাষিদের মাধ্যমে চাষাবাদ করে আসছিলেন। মাটি কেটে নেওয়ার সময় চাষিরা বাধা দিলে তাদেরকে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়।

কার্তিক চন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘আমাদের জমিতে ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ হতো। কিন্তু মাটি কেটে নেওয়ায় ওই জমিটি এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এর বিচার চাই।’

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, ‘সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী জমিটি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। খাস জমি থেকে আমরা মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাট করেছি। আমরা মালিকানাধীন কারো জমির মাটি কাটিনি। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। ওই জমির পাশে ৭০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এখন ১৬টি ঘরের নির্মাণকাজ চলছে।’

লিটন/কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়