ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

টেকনাফে ৮ জনকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ২৭ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ২২:৩৭, ২৭ মার্চ ২০২৪
টেকনাফে ৮ জনকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি

কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে ৮ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন। প্রত্যেকের জন্য পরিবারের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং ১২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিম পাহাড়ি এলাকা থেকে ৬ জন এবং পুটিবনিয়া পাহাড়ি এলাকা থেকে ২ জনকে অপহরণ করা হয়।

হোয়াইক্যং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহজালাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অপহৃতরা হলেন- হোয়াইক্যং এর করাচি পাড়া এলাকার লেদু মিয়ার ছেলে শাকিল মিয়া (১৫), বেলালের ছেলে জুনাইদ (১৩), নুরুল আমিনের ছেলে সাাইফুল (১৪), শহর আলীর ছেলে ফরিদ (৩৫), নাজির হোছেনের ছেলে সোনা মিয়া (২৪), শহর মুল্লুকের ছেলে গুরা পুইত্যা (৩২)। অপর দুইজনের নাম জানা যায়নি।

ইউপি সদস্য শাহজালাল বলেন, পাহাড়ি এলাকায় গরু চড়ানো ও চাষের কাজ করতে গিয়ে ৬ জন নিখোঁজ হয়। পরবর্তীতে অপহরণকারী চক্র একজনের বাবার মোবাইল নম্বরে ফোন করে অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে এবং ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহৃতদের মারধর করে চিৎকার শোনানো হচ্ছে। এ বিষয় সম্পর্কে পুলিশকে জানালে অপহৃতদের মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

শাকিল মিয়ার বাবা লেদু মিয়া বলেন, সকালে গরু চড়াতে গিয়ে বিকেল পর্যন্ত ফেরত না আসায় উদ্বিগ্ন ছিলাম। এর মধ্যে একটি নাম্বার থেকে মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবিও করা হয়েছে। এখন আতংকে আছি।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওসমান গণি বলেন, ৬ জন অপহরণের বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থল ও স্বজনদের পরিবারে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) টেকনাফের হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাহাড়ি এলাকায় গরু আনতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন দুইজন।

তারা হলেন- টেকনাফের হোয়াইক্যং রোজার ঘোনা এলাকার আমির হোসেনের ছেলে অলি আহমদ (৩২) এবং কম্বনিয়া এলাকার ফিরুজের ছেলে নুর মোহাম্মদ (১৭)।

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ হাসান বলেন, পাহাড়ি এলাকা থেকে দু’জনকে ধরে নিয়ে গেছে। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, অপহৃত ২ জনের পরিবারের কাছ থেকে বুধবার সকালে ফোনে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কত টাকা চাওয়া হয়েছে; সে ব্যাপারে অপহৃতদের স্বজনরা কিছুই বলছেন না। ধারণা করা হচ্ছে হুমকির কারণে পুলিশ এবং জনপ্রতিনিধিদের না জানিয়ে গোপনে টাকা দিয়ে তাদের ফেরত আনার চেষ্টা করছেন স্বজনরা।

গত এক বছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০৯ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৯ জন স্থানীয় বাসিন্দা; বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক।

অপহৃত হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের তথ্য অনুযায়ী, অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫১ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে। এর মধ্যে গত ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে অপহৃত হওয়া মাদ্রাসা ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে ১৯ দিন অতিবাহিত হলেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। যদিও পুলিশ অপহরণ ঘটনায় ব্যবহৃত অটোরিকশার চালক ও সংঘবদ্ধ চক্রের নারী সদস্যসহ চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ৫ জনই রোহিঙ্গা।

তারেকুর/ফয়সাল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়