ঢাকা     সোমবার   ১৭ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ৩ ১৪৩১

প্রচণ্ড রোদে ধান শুকানোর ব্যস্ততা, কৃষকের মুখে সোনালি হাসি

মনোয়ার চৌধুরী, সুনামগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩১, ২৪ মে ২০২৪   আপডেট: ১২:৪০, ২৪ মে ২০২৪
প্রচণ্ড রোদে ধান শুকানোর ব্যস্ততা, কৃষকের মুখে সোনালি হাসি

ছবি: রাইজিংবিডি

বইছে তাপপ্রবাহ। বোরো ধান কাটা শেষ হওয়ায় এ তাপপ্রবাহের মধ্যেও ধান শুকানোতে ব্যস্ত সুনামগঞ্জের কৃষকরা। এবার ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে তাপপ্রবাহ যেনো গায়েই লাগছে না কৃষকের। আনন্দচিত্তে হাওরের গভীর,সড়ক কিংবা খলায় ধান শুকাচ্ছেন তারা।

সুনামগঞ্জের হাওরপাড়ের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছরের মধ্যে এই প্রথম পাহাড়ি ঢলের ভয় ও শঙ্কাহীন একটি উৎসবমূখর পরিবেশে বৈশাখ মাস পার করছেন সুনামগঞ্জের কৃষক পরিবারের মানুষ। এ বাম্পার ফলন তাদের সব কষ্ট যেন ভুলিয়ে দিচ্ছে। হাওরের কাটা ধানগুলো বাড়ির উঠানে স্তুপ করছেন। গত দুইদিনের তাপপ্রবাহের মধ্যেও সেই ধান শুকিয়ে গোলায় তুকতে কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত হাওরের মানুষ।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কৃষক লুকমান মিয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, এই গরমে হাওরে থাকা কঠিন হয়ে গেছে। কিন্তু কিছুই করার নাই, পেটের দায়ে সব পরিস্থিতি মেনে নিতে হচ্ছে। এই গরমের সময়ে অনেক কষ্ট হলেও সারাবছর ভালো থাকা যায়। এবার আল্লাহের রহমতে বানের পানি হাওরে ঢুকার আগে ধান কাটতে পেরেছি। এখন ধান শুকিয়ে গোলায় তুলতে পারলেই আল্লাহর কাছে শুকুর।

পলাশ বাজার এলাকার কৃষক আলী আমজাদ হোসেন বলেন, আমাদের হাওরের ধান মাড়াই শেষ করে এখন ধান থেকে ময়লা আর চিটা পরিষ্কারের কাজ করছি। অন্যান্য বছর আমার স্ত্রী এই কাজ করতেন। কিন্তু এবার গরমের কারণে দুইদিন থেকে সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৩ মে ) সুনামগঞ্জের সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বিকাল ৩টায় সিলেট আবহাওয়া অফিস এই তাপমাত্রা রেকর্ড করে। যা সুনামগঞ্জের মানুষের জন্য এ বছরের এক কষ্টদায়ক দিন হিসেবে কেটেছে।

এর আগে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলার তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। ওই তাপমাত্রাকে ধরে নেয়া হয়েছিলো বছরের সর্বোচ্চ। কিন্তু তা অতিক্রম করে বৃহস্পতিবার ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি রেকর্ড হওয়া তাপমাত্রাকেই বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবে ধরে নেয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আজ সকাল থেকেই প্রখর রোদ আর তীব্র গরমে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। অতিরিক্ত গরমের কারণে লোকজন বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। গত কয়েকদিনের গরমে সুনামগঞ্জের শিশু ও বৃদ্ধরা নানা ধরণের রোগে ভুগছেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, তাপপ্রবাহের মধ্যে সুস্থ থাকতে বেশী করে ডাবের পানি অথবা বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। বিশেষ করে গর্ভবতি, শিশু ও বৃদ্ধদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। প্রচন্ড তাপমাত্রার কারণে জ্বর সর্দি ও ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। 

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চলছে এখন। বিকাল ৩টায় রেকর্ডকৃত তাপমাত্রা হচ্ছে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। চলমান পরিস্থিত অব্যাহত থাকতে পারে। বৃষ্টিপাত শুরু হলে তাপমাত্রা কিছুটা কমে যাবে।

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টিপাত হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পূর্বাভাসে বলা আছে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিলেট বিভাগের দু-এক এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে।

/মনোয়ার/ইমন

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়