ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ভালোবাসার আরেক নাম রাবি

আদিত্য রায় রিপন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৩, ১১ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ভালোবাসার আরেক নাম রাবি

শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভাগীয় শহর রাজশাহী থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্বে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশেই বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান।দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ বিশ্ববিদ্যালয়টির আয়তন প্রায় ৭৫৩ একর। 

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবের সঙ্গে ৬৮ বছরে পদার্পণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। শুরুতে ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে পথচলা এই বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার। প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখোরিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির সবুজ-শ্যামল ছায়াবৃত ক্যাম্পাসটি।

বিশ্ববিদ্যালয়টির বুকে দাঁড়িয়ে আছে দেশের বিখ্যাত কয়েকটি ভাষ্কর্য ও স্মৃতিস্তম্ভ। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, সাবাস বাংলাদেশ, সুবর্ণ জয়ন্তী টাওয়ার, বুদ্ধিজীবী স্মৃতি ফলক, উনসত্তরের ঐতিহাসিক গণঅভ্যূত্থানে শহীদ বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা স্মরণে নির্মিত ভাষ্কর্য স্ফুলিঙ্গ, বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ ইত্যাদি। এসব ভাষ্কর্য যেন শিক্ষার্থীদের এক একটি আবেগের নাম। ভাষ্কর্যগুলো সর্বদা প্রাণচাঞ্চল্য পেত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত দর্শনার্থীদের পদচারণায়।

এখানে শিক্ষার্থীদের আরেকটি আবেগের নাম বিশ্ববিদ্যালয়টির কাজলা গেইট থেকে শের-ই-বাংলা আবাসিক হল পর্যন্ত রাস্তাটি, যার নাম ‘প্যারিস রোড’। রাস্তাটির দুই দিকে দাঁড়িয়ে আছে সুদুর ফিলিপাইন থেকে আনা সুবিশাল গগণ শিরীষ গাছ। সত্যিই গাছগুলো যেমনি আকাশকে ছুঁয়ে যায়, তেমনি ছুঁয়ে যায় হৃদয়কেও।

পড়ন্ত বিকেলে প্রমিক-প্রেমিকারা যখন হাত ধরাধরি করে এক পা দু পা করে হাটতে থাকে সেই প্যারিস রোড দিয়ে তখন সত্যিই মনে হয় এ প্রেম যেন নৈসর্গিক। এ প্রেমে যেন কোনো খাদ নেই। এমন নৈসর্গিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সচারাচর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখা যায় না।

শিক্ষার্থীদের ব্যস্ততার মধ্যেও তারা যখনই একটু অবসর পান তখনই মেতে ওঠেন বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে গানের আড্ডায়, কেউবা ঘুরে বেড়ান চিরচেনা মতিহারের সবুজ চত্ত্বরে। আর কেউবা একটু অবসর পেলেই ছুটে চলেন সুবিশাল কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে অথবা প্রত্যেক বিভাগের নিজস্ব সেমিনার লাইব্রেরিতে। আবার অনেকেই চলে যান কম্পিউটার ল্যাবে।

সন্ধ্যা হলেই দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়টির উত্তর-পশ্চিম দিকে ‘পশ্চিম পাড়া’ খ্যাত মেয়েদের ৬ টি হলের রাস্তাটায় ছেলেদের ঢল। সেখানে পাওয়া যায় নানান জাতের পিঠা। সেখানে বন্ধু-বান্ধব মিলে পিঠা খাওয়ার পাশাপাশি মেতে ওঠেন নানান গল্পে। যে শিক্ষার্থীরা বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে হেসে খেলে, পড়াশোনা করে অনাবিল আনন্দে দিন কাটাতেন আজ তারা কোভিড-১৯ এর কবলে পড়ে ঘরবন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। এটা সত্যিই খুব কষ্টকর। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হৃদয়ের একটা বড় অংশ। ক্যাম্পাসের প্রতিটি ইঞ্চি যেন শিক্ষার্থীদের এক একটি হৃদস্পন্দন। তাইতো প্রাণের ক্যাম্পাস হাতছানি দিয়ে ডাকছে- আয় ফিরে আয় আমার কাছে।

লেখক: শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

রাবি/মাহি

রাইজিংবিডি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়