ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ভালো কাজ করলেই খাবার ফ্রি 

রাফসান নিঝুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২০, ১ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১৩:২৬, ১ অক্টোবর ২০২০
ভালো কাজ করলেই খাবার ফ্রি 

পেট ভরে এক বেলা খাওয়া যায় এই হোটেলে। কিন্তু কোনো টাকা খরচ করে নয়, সারাদিনে একটি ভালো কাজ করলেই মেলে এ খাবার! 

হোটেলের নাম ‘ভালো কাজের হোটেল’। এখানে ভালো কাজের বিনিময়ে দুস্থ, অভাবী, গরীব মানুষকে আহার করানো হয়। 

‘ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রাজধানী কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে, বিআরটিসি বাস কাউন্টারের সামনে প্রতিদিন এক বেলা খাবারের আয়োজন করে থাকে। 

সারাদিনে যেকোনো একটি ভালো কাজ করলেই, আপনি এই হোটেল থেকে খাবার খেতে পারবেন। ভালো কাজ না করলেও আপনাকে খালি হাতে ফিরতে হবে না। স্বেচ্ছাসেবকেরা আপনাকে উদ্ধুদ্ধ ও পরামর্শ দেবে ভালো কাজ করার। সঙ্গে পাবেন খাবার। 

রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার খাবারের মেন্যুতে থাকে ডিম-খিচুড়ি। দুপুর দেড়টা থেকে ৩টা পর্যন্ত প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ জন মানুষ খেতে আসেন এখানে। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলছে তাদের এই কার্যক্রম। 

শুক্রবার ও শনিবারের খাবারের তালিকায় থাকে তেহারী, বিরিয়ানী, পোলাও, মাংসের মতো খাবার। শুক্রবার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানায় খাবার দেওয়া হয়। প্রতি শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে রাতের খাবার দেওয়া হয়। 

হুমায়ূন আহমেদের একটি নাটকের দৃশ্যে একজন ব্যক্তি প্রতিদিন একটি করে ভালো কাজ করার চেষ্টা করেন। সেই নাটক থেকেই অনুপ্রাণিত হন ‘ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ’ এর প্রধান স্বেচ্ছাসেবক আরিফুর রহমান। সেখান থেকেই যাত্রা শুরু করে ‘ভালো কাজের হোটেল’।

আরিফুর রহমান বলেন, ‘মানুষ ক্ষুধার যন্ত্রণা থেকে অপরাধমূলক বা খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়েন। এরা এক বেলা খেতে পারলেও পরের বেলা খাবার জোগাড় করতে পারেন না। তাদের জন্যই এই ভালো কাজের হোটেল। একটি ভালো কাজের বিনিময়ে আপনি এখানে এক বেলা পেট পুরে খেতে পারবেন।’ 

স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনটি পরিচালিত হয় ডেইলি টেন মেম্বারের মাধ্যমে। এখানকার স্বেচ্ছাসেবকরা প্রতিদিন নিজেদের কাছে দশ টাকা করে জমা রেখে মাস শেষে তা প্রদান করেন। সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় সব কিছু কেনাকাটা করা হয়। সংগঠনটির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ২৬৫ জন। আরও আর্থিক সহযোগিতা আসে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের দানের মাধ্যমে। 

আরিফুর রহমানের ইচ্ছা, সবার সহযোগিতায় তিন বেলা খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা। 

খাবার বিতরণের প্রথমেই স্বেচ্ছাসেবকেরা একটি কাগজে নাম, বয়স ও কী ভালো কাজ করেছে, তা লিপিবদ্ধ করে নেন। এক প্যাকেট খাবারে পেট না ভরলে, আরও প্যাকেটের ব্যবস্থা করা হয় তার জন্য। 

চলতি পথে অনেক রিকশাচালক, ভিক্ষুক, পথ শিশু, দিন মজুরেরা এসে এখানে তাদের করা ভালো কাজের কথা বলে খেয়ে থাকেন। 

লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, তেজগাঁও।

ঢাকা/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়