ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

তরুণরা যেভাবে নিচ্ছেন ফেসবুক

মো. রাশিদুল ইসলাম  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৪, ৩ মার্চ ২০২১   আপডেট: ১৩:১৩, ৩ মার্চ ২০২১
তরুণরা যেভাবে নিচ্ছেন ফেসবুক

ফেসবুক বর্তমান বিশ্বের সব চেয়ে পরিচিত একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এটিকে ব্যক্তিগত প্রচার মাধ্যমও বলা হয়। ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মার্ক জাকারবার্গ নামের এক আমেরিকান তরুণের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে বহুল ব্যবহৃত এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। 

শুরুতে এতটা আলো ছড়াতে না পারলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুক গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তির সমন্বয়ে পরিবর্তনের মাধ্যমে ফেসবুক দখল করে নিয়েছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসার জায়গা। বর্তমান পৃথিবীতে স্মার্টফোন আর ফেসবুক যেন এক বৃন্তের দুটি ফুল। অর্থাৎ স্মার্টফোন থাকলেই তার সঙ্গে ফেইসবুক থাকবে এমনটা আজ বলাই যাই।

শুরুতে শুধু একে-অন্যের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে হিসেবে পরিচিত পেলেও ধীরে ধীরে ফেসবুক মানুষকে বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে। একে-অন্যের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ ছাড়াও অনলাইন কেনা কাটা, নিজের মতামত, ভালো লাগা মন্দ লাগা, সবার সঙ্গে শেয়ার করা। যে কোনো বিপদে দ্রুত সাহায্য পাওয়া, যেমন- কারো রক্ত প্রয়োজন, এ মর্মে সে বিষয়টি অবগত করলে মুহূর্তেই সেটি সবার দৃষ্টিগোচর হয়, নিজের ব্যবসা বা পণ্যকে প্রমোট করার সবচেয়ে কার্যকরী প্ল্যাটফর্ম হলো ফেসবুক।

এছাড়াও দেশ-বিদেশের বন্ধু, আত্মীয়দের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা মুহূর্তগুলো লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও ফেসবুকের জুড়ি নেই। অর্থাৎ বর্তমান সময়ে ফেসবুক যে কতটা গ্রহণযোগ্য ও প্রয়োজনীয় সোশ্যাল মিডিয়া, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে মুদ্রার যেমন এপিঠ-ওপিঠ থাকে, তেমনি ফেসবুকেরও কিছু নেতিবাচক দিক আছে।

কিছু মানুষ এর নেতিবাচক দিকটাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অপরাধ চালাচ্ছেন। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে আজকাল প্রায়ই কিছু মানুষ নিজেদের হীন স্বার্থের জন্য অন্যের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে, ভুক্তভোগীকে নানাভাবে হয়রানি করছেন। এছাড়াও ফেক আইডি খুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা তো আছেই।

সেলিব্রেটি কিংবা মেয়েদের প্রফাইলে আপত্তিকর মন্তব্য করা। ফেইক আইডি দিয়ে অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে অশ্নীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া, ছেলেরা মেয়ে নামে আইডি কিংবা মেয়েরা ছেলে নামের আইডি খুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা ইত্যাদি নানাবিধ নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে প্রায়ই সমালোচিত হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সব চেয়ে জনপ্রিয় এ অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া।

এছাড়াও আজকাল তরুণরা মাত্রাতিরিক্ত ফেসবুক আসক্তিতে ভুগছেন। কেউ কেউ দিনের অধিকাংশ সময় এ মাধ্যমে পড়ে থাকেন। ঘণ্টায় ঘণ্টায় পোস্ট দেওয়া, দীর্ঘ সময় অনলাইনে থাকা, নিজের প্রফাইল চেঞ্জ করা, অনেকে আবার ফেসবুকটাকে আত্মহত্যার মাধ্যম হিসেবেও নিয়েছেন। লাইভে এসে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও আজকাল ঘটছে। 

এতসব নেতিবাচক দিক থাকা সত্ত্বেও আমরা কি পেরেছি ফেসবুক থেকে বের হতে? স্মার্টফোন ইউজারদের দিনের অধিকাংশ সময়ই কাটে এ বোকা বাক্সে। আবার নেতিবাচক দিকটার তুলনায় এর ইতিবাচক দিকটাই বেশি। আজকাল আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ফেসবুক যেন একটা অত্যাবশ্যকীয় মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। সুতরাং এর বিকল্প না খুঁজে আমাদের উচিত এর ইতিবাচক দিকটাকে কাজে লাগানো।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বার বার গ্রাহকদের তথ্য আদান প্রদানের নিরাপত্তা রক্ষায় বিভিন্ন ফাংশন ও সিকিউরিটি সিস্টেম চালু করলেও কিছু কতিপয় লোক এটাকে অপরাধের হাতিয়ার হিসেবে নিচ্ছেন। এটা থেকে উত্তরণের জন্য হয় আমাদের ফেসবুকের বিকল্প কিছু ব্যবহার করতে হবে, নতুবা নিজেদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। সুস্থ সুন্দর মানসিকতায় ফেসবুক হয়ে উঠুক শতভাগ আস্থা, নিরাপদ ও ভরসার জায়গা।

লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

বশেমুরবিপ্রবি/মাহি 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়