ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কথা বলছে জাবির দেয়ালগুলো 

ইমন ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪১, ১০ মে ২০২১   আপডেট: ১৩:৩৯, ১০ মে ২০২১
কথা বলছে জাবির দেয়ালগুলো 

সবুজের বুক চিরে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে লাল ইটের উঁচু-নিচু দেয়ালগুলো। ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম লগ্নে দেয়ালগুলো হারিয়েছে তার আপন রূপ, আপন সত্তা। মরীচিকাময় দেয়ালগুলো নতুনরূপে সাজবে বলে প্রহর গুনছে। গ্রীষ্মের দাবদাহ আর করোনার অশুভ ছায়ায় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যে যেন ভাটা পড়েছে।

দেয়ালগুলো তার আপন রূপ গুটিয়ে নিয়েছে ঠিকই, তবে জেগে উঠেছে মানব কৃত্রিমতা। একদল তরুণ নিজেদের কল্পনা আর ইচ্ছাশক্তির মিশ্রন ঘটাতে রঙ-তুলি হাতে নিয়ে যোদ্ধার বেশে বেড়িয়ে পড়েছেন। তারা দায়িত্ব নিয়েছেন ক্যাম্পাসকে সাজানোর। লোকজ নকশা আর বাংলা সাহিত্যের আদলে রাঙাতে শুরু করছেন একেরপর এক দেয়াল। 

ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে শুরু করে প্রতিটি দন্ডায়মান যাত্রীছাউনির ফাঁকা দেয়ালগুলোতে জায়গা করে নিল ঘনাদা, টেনিদা আর ফেলুদার বাহারি চিত্রকর্ম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত টিএসসির ভেতরের দেয়ালগুলোতে জায়গা হলো সং অব দ্য সী, আর মাই নেইবর তোতোরোর মতো জগত বিখ্যাত অ্যানিমেশন মুভির বাহারি চিত্রকর্ম। মনোমুগ্ধকর চিত্রকর্মগুলো সত্যি মন কেড়েছে সবার।

অনেক তো হলো লোকজ নকশা আর বাংলা সাহিত্যের রঙ খেলার যুদ্ধ। ক্যাম্পাসের দেয়ালগুলো এবার নতুন কোনো প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে বেড়াচ্ছে। চিত্র শিল্পীরাও আটঘাট বেঁধেই নেমেছেন রঙ-তুলির যুদ্ধে। এবার এটিএম শামসুজ্জামান, হুমায়ূন ফরীদি, দিলদারের চিত্রকর্ম ছাপানো হলো বিজনেস ফ্যাকাল্টির নিকটবর্তী বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মারের জন্য ব্যবহৃত ভবনের দেয়ালে। এরা হলেন বাংলা চলচ্চিত্র অঙ্গনের সেরা তিন কিংবদন্তি, যারা দীর্ঘ দিন মানুষকে বিনোদন দিচ্ছেন। ভবনের চার দেয়ালজুড়ে ফুটে উঠেছে কিংবদন্তিদের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। চমৎকার দৃশ্যপটগুলো ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে শতগুনে বৃদ্ধি করেছে। রাতের অন্ধকারে লাল, সাদা, কালো ও হলুদ বর্ণের চিত্রকর্মগুলো যেন ঝিকিমিকি সাজে সেজে ওঠে। যা দেখতে ও উপভোগ করতে প্রতিদিনই ক্যাম্পাস সংলগ্ন পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন। 

কেউ বা ক্যামেরাবন্দি করে রাখছেন সেই বিশেষ মুহূর্তগুলো। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেন পেয়েছে নতুন সৌন্দর্য, নতুন প্রাণ। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছে না। আর তাই তো বাড়িতে বসেই ক্যামেরাবন্দি ছবিগুলো দেখে উপভোগ করছেন এবং ভালোবাসার ক্যাম্পাস সম্পর্কে নিজেদের অনুভূতিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশ করছেন।

লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

জাবি/মাহি 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়