ঢাকা     শুক্রবার   ১৭ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

জীবনের নিরাপত্তা চায় বুয়েটের একদল শিক্ষার্থী

ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪০, ২৯ এপ্রিল ২০২৪  
জীবনের নিরাপত্তা চায় বুয়েটের একদল শিক্ষার্থী

নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি, সামাজিক অবমাননা ও কালচারাল র‍্যাগিং এর প্রেক্ষিতে প্রেরিত অভিযোগের তদন্ত এবং ক্যাম্পাস অঙ্গনে জীবনের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল শিক্ষার্থী। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ৪টার দিকে বুয়েট শহিদ মিনারে এসব দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মলনের আয়োজন করেন তারা। এসব শিক্ষার্থীদের সবাই ছাত্রলীগপন্থী বলে জানা গেছে।

এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন তানভীর মাহমুদ স্বপ্নীল ও সাগর বিশ্বাস জয়। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর দ্বারা আমাদের অনলাইন ও সরাসরিভাবে হেনস্তা ও অপমানের শিকার হতে হয়েছে । রাতে একসঙ্গে কাচ্চি খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি ফেসবুক গ্রুপে অজ্ঞাতনামা পোস্ট দিয়ে ভিত্তিহীনভাবে সবার সামনে আমাদেরকে অপরাধী বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের উপর যে মব জাস্টিস শুরু করা হয়েছে, তা আমরা উপাচার্য বরারবর জমা দিয়েছি। তবে কোনো ফায়দা হয়নি।

এর আগে, গত বছর ২১ জুলাই সুনামগঞ্জে আটককৃত ২৪ বুয়েট শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে যে মামলা হয়, তারই প্রেক্ষিতে আমরা একই বছর ৬ আগস্ট সুষ্ঠু বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছিলাম। কিন্তু এই মানববন্ধনের পরেই বিষয়টি বদলাতে শুরু করে। মানববন্ধনে দাঁড়ানোর কারণে সব ছাত্রদের ডেকে ডেকে জবাবদিহিতা চাওয়া হয়।  বিভিন্নভাবে হলে সিট বাতিল অথবা টার্ম বহিষ্কারের ভীতি প্রদর্শন করে অরিত্র ঘোষ এবং মিশু দত্তকে আনুমানিক সময় রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত আহসান উল্লা হলের কমন রুমে এবং মাঠে জবাবদিহি করা হয়। সবার সামনে আমাদের জবাবদিহি করা ও কিছু মানুষ দ্বারা অসংলগ্ন আচরণ আমাদের অপমানের সামিল বলে আমরা মনে করি । খেলাধুলাসহ যেকোনো অনুষ্ঠান থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে মানসিকভাবে অত্যাচার চালানো এবং আমাদের সঙ্গে স্টাডি ম্যাটেরিয়ালস শেয়ার না করার জন্য প্রচার করে একটি দল।  তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর তাদের মতামত চাপিয়ে দেয়। কেউ যদি না মানে, তাকেও হেনস্তা করে হবে এমন হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। তদন্তমাফিক আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আজ বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মতামতকে দোহাই দিয়ে অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে কুচক্রী একটি দল। ক্যাম্পাসে হিজবুত তাহরি ও শিবিরের মতো মৌলবাদী সংগঠন যে সক্রিয়, তার অভিযোগ করেছিলাম। আজ আমাদের অভিযোগের সত্যতা বুয়েটের সিসিটিভি ফুটেজ দেয়। সেই সিসিটিভি ফুটেজে যাদের দেখা গেছে তাদের বিরুদ্ধে খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

তারা কি বুয়েটের নাকি বাইরের এই বিষয়টি নিয়ে আমরা সন্দিহান। যদি তারা বুয়েটের বাইরের হয়, তবে তারা কিভাবে প্রবেশ করলো? আর বুয়েটের হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের পরিচয় উল্লেখ করে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হোক। 

এছাড়াও টাঙ্গুয়ার হাওরে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার মামলার আসামিদের সঙ্গে ক্যাম্পাসে থাকাটা আমাদের জীবনের জন্য হুমকিসরূপ। জঙ্গীবাদের সিক্রেট গ্রুপে আমাদের নাম ও পরিচয় উন্মোচন আমাদের জন্য ভীতিকর। আমরা ধারণা করি, আমাদের পরিচয় সেখানে উন্মোচিত করার সঙ্গে অবশ্যই বুয়েটের কেউ সংযুক্ত। কে বা কারা এটা করছে, সে বিষয়ে লক্ষ্য করার জন্য অনুরোধ জানাই। একই সঙ্গে তাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে দ্রুততম সময়ে তুলে দেওয়া যায় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য ততই মঙ্গল বলে আমরা মনে করি।

এছাড়া যতদিন পুলিশ কেসের নিষ্পত্তি হচ্ছে না, তাদেরকে সাময়িকভাবে অ্যাকাডেমিক বহিষ্কার করা হোক। তাদের মদতদাতাদের শনাক্ত করে তদন্তের জন্য গোয়েন্দা নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হোক। সেটা না হলে বুয়েটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের মত শান্তিকামী সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপদ আরও বাড়বে।

/হারুন/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়