ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘সিএমএসএমই ঋণ দিতে কাঠামোগত সংষ্কার জরুরি’

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৫, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১  
‘সিএমএসএমই ঋণ দিতে কাঠামোগত সংষ্কার জরুরি’

কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ঋণ প্রদানের কাঠামোগত সংষ্কার জরুরি বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ডিসিসিআই এবং এসএমই ফাউন্ডেশন যৌথভাবে (ভার্চুয়ালি) আয়োজিত ‘এসএমই প্রণোদনা প্যাকেজ হতে ঋণ প্রাপ্তির পদ্ধতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তারা এই মতামত দেন।

বক্তারা বলেন, কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের বিকাশে আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ঋণ প্রদানের কাঠামোগত সংষ্কার ও বিশেষায়িত ব্যাংক স্থাপন, এসএসই ডাটাবেইজ প্রণয়ন, সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তাবায়ন এবং সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের প্রদত্ত ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল লোনকে টার্ম লোন হিসেবে গণ্য করা প্রয়োজন।

সভায় এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উক্ত মতিবিনিময় সভায় অংশ নেন।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, শিল্প খাতে ৮০ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি ম্যানুফ্যাকচারিং এ ৪৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করে সিএমএসএমই খাত, তবে প্রয়োজনীয় আর্থিক এবং নীতিগত সহায়তার অভাবে সিএমএসএমই প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের সম্ভাবনা ও কর্মদক্ষতার পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছে না।

তিনি বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় দেশে দীর্ঘমেয়াদে ছুটি এবং লকডাউনের ফলে সিএমএসএমই খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং স্থানীয় এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে এসএমই খাতে সামগ্রিকভাবে আয় হ্রাস হয়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ এবং প্রায় ৭৬ শতাংশ উৎপাদিত পণ্য অবিক্রিত থেকে গেছে।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যবসায়িক দক্ষতা, পণ্যের বহুমুখীকরণ, দক্ষ কর্মী ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, বাজারে প্রবেশাধিকার, ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তি, প্রযুক্তিগত দুর্বলতা, গুণগতমানের কাঁচামাল সরবরাহ এবং উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তার অভাব ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ পাওয়াসহ অন্যান্য নীতিগত সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পোদ্যোক্তাদের থেকে পিছিয়ে রয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন, জামানতের অভাব এবং প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ প্রদানে ব্যাংকের অনাগ্রহ ঋণ বিতরণে ধীর গতি এ কার্যক্রমকে আরও দীর্ঘায়িত করছে, যার ফলে এসএমই খাতের উদ্যোক্তারা নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন।

ঢাকা চেম্বারে সভাপতি বলেন, সিএমএসএমই খাতের সুনির্দিষ্ট কোন ডাটাবেইজ না থাকায় এ খাতের সঠিক অবস্থা জানা সম্ভব হচ্ছে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রথম থেকেই এসএমই কাজ করছে, এর পাশাপাশি এ খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় আইনি সংষ্কার বাস্তবায়নে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে, সেই সাথে এসএমই ফাউন্ডেশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর উপর জোরারোপ করেন।

তিনি বলেন, ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য এ খাতের উদ্যোক্তাদের অবশ্যই দেশের বিদ্যমান আইনি ও আর্থিক কাঠামোর সম্পর্কে সম্যক ধারণা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। দেশের উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ঋণ প্রদানের কাঠামোগত সংষ্কার একান্ত আবশ্যক বলে, তিনি মত প্রকাশ করেন।  এছাড়াও এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, দেশে ব্যবসা পরিচালন সূচকে উন্নয়ন ও বিনিয়োগ আকর্ষণে বিদ্যমান কর এবং শুল্ক কাঠামোর পরিবর্তনের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে এসএমই ফাউন্ডেশনের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্র সাহা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 

 /শিশির/এসবি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়