ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

১৯৭১: ঢাকার অদম্য গেরিলারা

সালেক খোকন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১১, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ০৯:৩১, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
১৯৭১: ঢাকার অদম্য গেরিলারা

গেরিলা বিস্ফোরণের পর শান্তিনগরের মোমেনবাগস্থ প্রদেশিক নির্বাচন কার্যালয়ের অবস্থা। ছবি: জালালুদ্দিন হায়দার

‘‘১৯৭১ সাল। মুক্তিযুদ্ধ চলছে পুরোদমে। আমরা হাইড-আউট ক্যাম্প করি ঢাকার কাছে, ডেমরায়। ক্যাম্পে ছিলাম ৪০ জন। কমান্ডে সাদেক হোসেন খোকা (ঢাকার প্রয়াত মেয়র)।  প্রাদেশিক ইলেকশন কমিশন অফিস তখন ছিল মোমিনবাগে, রাজারবাগের উল্টো পাশে। দুটো ভাড়াবাড়িতে চলত তাদের কাজ। দেশে তখন পুরোদমে যুদ্ধ চলছে। সত্তরের নির্বাচনে নির্বাচিত এমপিএ আর এমএনএরা স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষ নিয়ে চলে গেছেন মুক্তাঞ্চলে ও ভারতে। সে সময় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ফন্দি আঁটে। নির্বাচিত সব এমএনএ ও এমপিএর পদ শূন্য ঘোষণা করে আসনগুলোতে উপনির্বাচনের গোপন প্রস্তুতি নিতে থাকে তারা। 

এ খবর পেয়েই সিদ্ধান্ত নিই প্রাদেশিক ইলেকশন কমিশন অফিস উড়িয়ে দেওয়ার। খোকা ভাইয়ের নেতৃত্বে ওই অপারেশনে অংশ নিই আমি, লস্কর, সুফি আর হেদায়েত। জায়গাটা রেকি করে আসি এক দিন আগেই। ১ নভেম্বর, ১৯৭১। রোজার মাস ছিল। ঢাকায় যখন ঢুকি রাত তখন ৮টার মতো। তারাবির নামাজ চলছে। রাস্তাঘাট ফাঁকা। ওই সময়ই বিল্ডিংয়ে ঢুকে এক্সপ্লোসিভ ফিট করি আমরা। বেরিয়ে এসেই বিস্ফোরণ ঘটাই। বিস্ফোরণে গোটা ঢাকা শহর কেঁপে ওঠে। বিল্ডিংয়ের এক পাশ ধসে পড়ে। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ইলেকশন কমিশন অফিসের কাগজপত্র’’– মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় গেরিলা অপারেশনের কথা এভাবেই তুলে ধরেন মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হক নান্টু। মুক্তিযুদ্ধের সময় নান্টু ছিলেন ঢাকা শাহীন স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। একাত্তরে ভারতের মেলাঘর থেকে ২১ দিন ট্রেনিং নেন তিনি। তার মুখেই শুনি ঢাকার আরেকটি অপারেশনের কথা।

আরো পড়ুন:

গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হক নান্টু। ছবি: সালেক খোকন

রফিকুল হক নান্টুর ভাষায়, ‘‘ডিএফপি অফিস তখন ছিল শান্তিনগরে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর সৃষ্টির জন্য আমরা সেখানে হিট করার প্রস্তুতি নিই। আমার মেজো ভাই সাইদুল হক বাবু ছিলেন ডিএফপির ফিল্ম প্রডিউসার। এ কারণে রেকি করার দায়িত্ব পড়ে আমার ওপর। সব খবর নিয়ে এসে আমি খোকা ভাইকে দিই। ওই দিন ছিল আখেরি জুমা। দুপুরে বায়তুল মোকাররমের নিউজ কাভার করে ফিরেছে সবাই। বেলা ৩টার পর আমরা ডিএফপিতে ঢুকি। অফিসে কেউ নেই। তিনতলায় সিঁড়িঘরে থাকা দারোয়ানকে বের করে দিই প্রথম। টেবিলের ওপর আমরা এক্সপ্লোসিভ ফিট করি। বিস্ফোরণে যাতে স্টিলের টুকরোগুলো স্প্লিন্টার হিসেবে কাজ করে, সে কারণে স্টিলের আলমারিটাকেও অ্যাক্সপ্লোসিভের ওপর চাপ দিয়ে ফেলে রাখি। ঘটলও তাই। বিস্ফোরণে পুরো বিল্ডিং উড়ে যায়। দ্রুত একটা মাইক্রোবাসে করে আমরা সরে পড়ি। ওই অপারেশনের খবর ফলাও করে প্রচারিত হয়েছিল ভয়েস অব আমেরিকা, আকাশবাণী, বিবিসি ও স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে।ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও সাহস আরও বেড়ে যায়।’’


একাত্তরে গেরিলাদের সবচেয়ে বড় অপারেশনটি হয় গ্রিন রোডে। যার খবর ছড়িয়ে পড়ে বিশ্ব গণমাধ্যমে। সে খবর উদ্দীপ্ত করে সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের। ওই অপারেশনটির পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে ছিলেন গেরিলা শেখ আবদুল মান্নান (বীরপ্রতীক)। জীবদ্দশায় কথা হয় তার সঙ্গে। সেদিনের আদ্যোপান্ত শুনি তার মুখেই।

বীরপ্রতীক শেখ মান্নান। ছবি: সালেক খোকন

শেখ মান্নান বললেন যেভাবে, “পরিচয় গোপন করে আমরা ঘরভাড়া নিয়ে থাকতাম সেন্ট্রাল রোডে, ভূতের গলি মসজিদের পাশে। ইনফরমার ছিল। ওদের খবরের ভিত্তিতেই রাতে বেরিয়ে গেরিলা অপারেশন চালাতাম। নির্দেশ ছিল ‘প্রতিদিন পাকিস্তানি সেনাদের ডিস্টার্ব করার। সেটা গ্রেনেড মেরে হোক কিংবা ফায়ার করেই হোক। ইউ মাস্ট ডু সামথিং। একটা বিল্ডিংয়ের ওপর বসে এক রাতে দেখছিলাম আশপাশটা। দেখলাম রাত ৯টার পর কোনো লোকজনের চলাচল নেই। শুধু পিআই-এর লোকজন আর আর্মি মুভমেন্ট চলছে। তখনই সিদ্ধান্ত নিই গ্রিন রোড অপারেশনের।

অপারেশনটা কোথায় করব? খুঁজে বের করলাম নুর হোটেলকে। যেটা এখন ক্যানসার হাসাপাতাল। ওই বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ তখন চলছিল। আমরা পাঁচজন আমি, মনসুর আলম দুলাল, আলমগীর, আবদুল্লাহ এবং বজলুল মাহমুদ বাবলু। কমান্ডে আমি নিজেই। অস্ত্র ছিল দুটি স্টেনগান, দুটি এসএলআর আর আমার কাছে একটা চাইনিজ এসএমজি। দুই ব্যাগ হ্যান্ড গ্রেনেড আর দুই ব্যাগ ফসফরাস গ্রেনেডও ছিল। আমরা আগুন লাগানোর কাজে ব্যবহার করতাম ফসফরাস গ্রেনেড। ২১ আগস্ট ১৯৭১। রাত সাড়ে ১০টার দিকে নুর হোটেলের বিল্ডিংয়ের ওপর গিয়ে বসি। দুলালকে বললাম, যা মাইন বিছিয়ে আয়। স্ট্রিট লাইটটাও ভেঙে দিলাম। রাস্তা তখন অন্ধকার। মাইন ফিট করে সবাই বিল্ডিংয়ের চারতলায় পজিশন নিয়ে থাকি। আধঘণ্টার মধ্যে একটা ভেসপা আসে। পিআই-এর স্টাফ হয়তো। রাস্তা দিয়ে চলে গেল। মাইনটার বিস্ফোরণ হলো না। এরপর হঠাৎ দেখি লেফট-রাইট করে ৮-১০ ছেলে আসছে। ওরা পুরো রাস্তা পায়ে হেঁটে চলে গেল। এবারও কোনো মাইন বিস্ফোরণ হলো না। আমি দুলালের ওপর ক্ষিপ্ত হই। এরপর মাইন দেখতে নিচে আসি। হঠাৎ একটা আর্মি জিপ চলে গেল। এবারও বিস্ফোরণ হলো না মাইন। পুরো রাস্তা শুনশান। তখন সব মাইন উঠিয়ে আমি ডব্লিউ প্যাটার্ন করে সেট করি। ক্যামোফ্লেক্স করি ময়লা ফেলে। ওয়ানলি সিক্স সেকেন্ড সাইড প্রেশার সেট করে ব্লিডিংয়ে পজিশন নিয়ে আমরা অপেক্ষায় থাকি।  এক ঘণ্টা পার হয়। কিছু আসে না। রাত তখন সোয়া ২টা থেকে আড়াইটা হবে। দেখলাম, সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে তিনটা হলুদ লাইট পরপর আসছে। বুঝে যাই আর্মির গাড়ি। একটা সামনে এসেই বমবম করে উল্টে ওয়ালের পাশে ধাক্কা খায়। আব্দুল্লাহকে রাস্তার পাশেই অস্ত্র দিয়ে বসিয়েছিলাম। সে শুধু ফায়ার করলেই সব কলাগাছ হয়ে যেত। কিন্তু ওদের পড়তে দেখে গুলি না চালিয়েই সে ভয়ে সরে পড়ে। প্রথম গাড়ি উল্টে গেলেও পাকিস্তানিরা পেছনের দুটি ব্রেক করেনি। বরং স্পিড বাড়িয়ে পাশ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমাদের ফায়ার ওপেন করার আগেই ওরা ফায়ার শুরু করে। গাড়ির তলায় পড়ে মরে গিয়েও ফায়ার করতে থাকে। আমি তখন বিল্ডিংয়ের ওপর থেকে সমানে গুলি করি। গর্জে ওঠে বাকিদের এসএলআরগুলোও। ১৫-২০ মিনিট গোলাগুলি চলে। এরপরই দুপাশ থেকে সহযোদ্ধারা ছুটে আসে। কারণ তাদের ম্যাগজিন কাজ করছিল না। তখন তিনটা ট্রাকে রিপিট ফায়ারের দায়িত্ব পড়ে আমার ওপর। গুলি চালাচ্ছি। হঠাৎ এসএমজিটায় খাট করে একটা শব্দ হয়। গুলি শেষ। পেছন ফিরে দেখি সহযোদ্ধারা নেই। ভয় হয় তখন। নিচে লাফিয়ে পড়ি। ফলে ব্যথা পাই বাঁ পায়ে। অন্ধকারে কোনো রকমে একটা ওয়াল টপকেই বহু কষ্টে এক বাড়িতে লুকাই। ওই অপারেশনে তিন ট্রাকে স্পট ডেড হয় ৬০-৭০ জন পাকিস্তানি আর্মি। সিএমএইচে নেওয়ার পর মারা যায় আরও ১৫-২০ জন। এ কারণেই রাজধানীতে এটাকেই বিগেস্ট অপারেশন বলা হয়। আর্মিরাও এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। অনেক যুবককে ওরা হাতিরপুল ও গ্রিন রোড থেকে ধরে নিয়ে টর্চার করে। অনেককে মেরেও ফেলে তারা।”

ঢাকার আরেক গেরিলা তৌফিকুর রহমান। ৫২ জনের গেরিলা দল নিয়ে তারা ক্যাম্প করেন রোহা গ্রামে। ধামরাই-মানিকগঞ্জ বর্ডারে গ্রামটা। তাদের কমান্ডার ছিলেন রেজাউল করিম মানিক (পরে তিনি শহীদ হন)। সহ-কমান্ডার নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। 

গেরিলা তৌফিকুর রহমান, ছবি: সালেক খোকন

একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের চোখ এড়িয়ে কাকরাইল পেট্রলপাম্প উড়িয়ে দেন তারা। কীভাবে হয়েছিল সেই অপারেশন?

তৌফিকুর রহমান বলেন, “একদিন মানিক ভাইকে বললাম আমদের যেহেতু এক্সপ্লোভিস ট্রেনিং আছে; সঙ্গে আছে প্লাস্টিক এক্সপ্লোসিভ ও ফসফরাস গ্রেনেড। তাই ঢাকায় পাকিস্তানি আর্মি বা পুলিশ থাকে এমন জায়গার আশপাশে বড় বিস্ফোরণ ঘটাতে চাই। তিনি বলেন, কেমনে করবা? বললাম, দুটো দিন সময় দিলে পুরো প্ল্যানটা করা যাবে। তিনি সময় দিলেন। আলতাফ হোসেন টুনিকে নিয়ে রেকি করতে বের হই। কাকরাইল পেট্রলপাম্পটি ছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের খুব কাছে। সেটাই বেছে নিই। পাম্পের উল্টোদিকে ছোট একটা টং দোকান ছিল। সেখানে চা খেতে খেতে কোথায় অ্যাক্সক্লোসিভ লাগাব, ওয়েট (চাপা দেওয়ার মতো ভারী জিনিস) দেওয়ার মতো কী আছে, কয়জন ডিউটি করে সব দেখে আসি। ক্যাম্পে এসে মানিক ভাই ও বাচ্চু ভাইকে নিয়ে পুরো প্ল্যানটা করি। চারজন লাগবে। আমি আর টুনি যাব। সঙ্গে থাকবে আরও দুজন।  কিন্তু বিস্ফোরণ ঘটলে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস থেকে পুলিশ আসতে এক মিনিটও লাগবে না। পালাব কীভাবে? খন্দকার মাহাবুব উদ্দিনের ছেলে নেহাল ছিল বন্ধু। তার কাছে গাড়ি চাইলাম। সে বলল, রোজার মাস। আব্বা তো গাড়ি বের করতে দেয় না। শুধু ইফতারের সময় বের হই। তখনই মাথায় ক্লিক করে ‘দ্যাট ইজ দ্য বেস্ট টাইম।’ তাকে রাজি করালাম। ক্যাম্পে ফিরে মানিক ভাইকে বললাম, একটা স্টেনগান লাগবে দুটো ম্যাগাজিন ফুল লোডেড। তারা বললেন, মহাখালী ওয়্যারলেস গেটে গেলে ফেরদৌস নামের একজন তোমাদের আর্মস দেবে। অপারেশন শেষে সেটা রাজারবাগের শেল্টারে রেখে যাবে।''

তৌফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘‘১ নভেম্বর ১৯৭১। মানিক ভাই দুটো ছেলে দিলেন। ওরা বাজারের ব্যাগে করে অ্যাক্সপ্লোসিভ নিয়ে আসে। আমি আর টুনি রিকশায় মহাখালী ওয়্যারলেস থেকে একটা কম্বলে মোড়ানো স্টেনগান নিয়ে গন্তব্যে যাই। নেহালও গাড়ি নির্দিষ্ট জায়গায় পার্ক করে; স্টার্ট দেওয়া অবস্থায় গাড়ির তিনটি দরজাও খোলা রাখে। ইফতারের ঠিক আগে চোখের ইশারায় চারজন মুভ করলাম। আমি আর টুনি স্টেনগান নিয়ে পাম্পের বাইরে যে দুজন কাজ করছিল তদের নিয়ে ভেতরে ঢুকলাম। পর্দা টেনে দিয়ে সবাইকে বললাম, চুপ করে বসেন। আপনাদের কোনো ক্ষতি করা হবে না। একটা বোমা লাগানো হচ্ছে এখানে। এরপর আপনারা দৌড়ে সরে যাবেন। দুজন গেরিলা আমার নির্দেশ মোতাবেক বাইরে অ্যাক্সপ্লোসিভ লাগাতে থাকে। বালিভর্তি দুটি বালতি অ্যাক্সপ্লোসিভের ওপর চাপা দেয়। প্লাস্টিক অ্যাক্সপ্লোসিভের সঙ্গে ডেটোনেটর সেট করে দুই মিনিটের ফিউজ লাগায়। ফিউজে আগুন দিয়েই ওরা ডাক দেয় আমাদের। তখন পাম্পের লোকদের বলি, তোমরা শুধু দৌড়াতে থাকবে। নইলে মারা পড়বে। এটা বিশাল বোমা। আমরাও দ্রুত গাড়িতে উঠে সরে পড়লাম। একদম টাইমমতো সব হয়েছিল। রাজারবাগ এলাকায় ওমর নামে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িটি ছিল শেল্টার। সেখানে আমাদের নামিয়ে দিয়ে নেহাল মাত্র গাড়িটি স্টার্ট দিয়েছে; তখন বিশাল বিস্ফোরণ। গোটা পেট্রলপাম্প ওই বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল। পুরো ঢাকা কেঁপে ওঠে। আমরা আনন্দে একে অপরের মুখের দিকে তাকাই। আমি টুনির, টুনিও আমার হাত চেপে ধরে। এরপর শেল্টারে অস্ত্র রেখে রিকশায় যে যার মতো সরে পড়ি। ঢাকায় পেট্রলপাম্প উড়িয়ে দিয়েছে গেরিলারা এ সংবাদ প্রচার করে বিবিসি। পরদিন ইত্তেফাকসহ জাতীয় দৈনিকগুলোতে শিরোনাম হয় ‘ঢাকার কাকরাইলে বোমা বিস্ফোরণ’। ইত্তেফাকের ওই সংখ্যাটা এখনো সংগ্রহে আছে। ঢাকা যে শান্ত না, ঢাকায় গেরিলা ঢুকে পড়েছে ওই অপারেশনের পর এটা স্পষ্ট হয়ে যায়। সব দিক থেকেই অপারেশনটা সাকসেসফুল ছিল। মনে হলে এখনো শিহরিত হই।”

মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় গেরিলাদের ঝুঁকি ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু তাদের অপারেশনের প্রভাবও ছিল অনেক। গেরিলাদের আক্রমণের খবরগুলো বিশ্ব গণমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ত। ফলে সারা বিশ্ব জেনে যেত ঢাকা পাকিস্তানিদের নিয়ন্ত্রণে নেই। দেশের অন্যান্য জায়গার মুক্তিযোদ্ধারা লম্বা পথ পেরিয়ে অপারেশন করতেন। কিন্তু এরপরই তারা ফিরে আসতেন সেইফ জোনে। অন্যদিকে ঢাকার গেরিলাদের ক্ষেত্রে তেমনটি হতো না। প্রতিনিয়ত মৃত্যুকে অতিক্রম করেই লড়েছেন তারা।

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অস্তিত্বের ইতিহাস, আমাদের শেকড়। ১৯৭১- এ মুক্তির লড়াইয়ে আমাদের বিজয়ের পেছনে ছিল এমন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃসাহসী অংশগ্রহণ। যা স্মরণীয় হয়ে থাকবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়