ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত ইসরায়েল: ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২০, ২ জুলাই ২০২৫   আপডেট: ০৯:২৫, ২ জুলাই ২০২৫
গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত ইসরায়েল: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির ‘প্রয়োজনীয় শর্তে’ রাজি হয়েছে ইসরায়েল। এ সময়ে যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করব। তবে তিনি সেই শর্তগুলোর বিস্তারিত প্রকাশ করেননি। খবর বিবিসির। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “শান্তি প্রতিষ্ঠায় কঠোর পরিশ্রম করা কাতার ও মিসরের মাধ্যমে চূড়ান্ত প্রস্তাবটি দেওয়া হবে। আমি আশা করি হামাস এই প্রস্তাব গ্রহণ করবে, কারণ এর চেয়ে ভালো আর কিছু তারা পাবে না- পরিস্থিতি কেবল আরো খারাপ হবে।”

আরো পড়ুন:

তবে যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো হামাস গ্রহণ করবে কিনা, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

আগামী সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ওই বৈঠকে তিনি ‘খুবই কঠোর’ অবস্থান নেবেন।

মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেন, “আমি জানি নেতানিয়াহু যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, তিনি এটা চান। আমার মনে হয়, আগামী সপ্তাহেই আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছাব।”

এদিকে, একইদিনে ইসরায়েলের কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার ওয়াশিংটনে মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

এর আগেই বিবিসিকে এক হামাস কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময়ের একটি নতুন চুক্তি নিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের তৎপরতা বাড়লেও ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হয়নি।

ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাস পুরোপুরি ধ্বংস না হলে যুদ্ধ শেষ হবে না। অন্যদিকে হামাস দীর্ঘদিন ধরেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলের পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে।

বর্তমানে প্রায় ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মি গাজায় অবস্থান করছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের মন্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন ইসরায়েল গাজা সিটির উত্তরে নতুন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরে যেতে বলেছে। সোমবার গাজা সিটির এক সৈকত ক্যাফেতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এদিকে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিতর্কিত গাজা হিউম্যানটারিয়ান ফাউন্ডেশন বা জিএইচএফ এর কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছে ১৩০টিরও বেশি সাহায্য সংস্থা ও আরও কিছু এনজিও। যেসব সংস্থা বিতর্কিত এই সংস্থাটির কার্যক্রম বন্ধের দাবি করেছে তার মধ্যে অক্সফাম, সেভ দ্য চিলড্রেন ও অ্যামনেস্টির মতো সংস্থাও রয়েছে।

সংস্থাগুলো বলছে, জিএইচএফ-এর সাহায্যপ্রার্থী ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি সেনা ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো নিয়মিতই গুলি চালাচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থকে জানা গেছে, মে মাসের শেষ দিকে এই সংস্থাটি গাজায় কার্যক্রম শুরুর পর থেকে প্রায় ৫০০ ফিলিস্তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় চার হাজার মানুষ।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলার পর গাজা উপত্যকায় গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল।

দীর্ঘ ১৫ মাস ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৫৬,৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়