ঢাকা     সোমবার   ১০ নভেম্বর ২০২৫ ||  কার্তিক ২৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ৩ জন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৭, ১৩ অক্টোবর ২০২৫   আপডেট: ১৬:৫৩, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ৩ জন

চলতি বছরে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জোয়েল ময়কার, ফ্রান্সের ফিলিপ এজিওঁ এবং পিটার হাউইট। মূলত ‘উদ্ভাবননির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাখ্যা করার জন্য’ তাদের দুজনকে এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস সোমবার (১৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় এই পুরস্কার ঘোষণা করে।

জোয়েল ময়কার যুক্তরাষ্ট্র ইলিনয়ের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক। ফিলিপ এজিওঁ ফ্রান্সের নাগরিক এবং তিনি কলেজ দে ফ্রান্স এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের সঙ্গে যুক্ত। পিটার হাউইট যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি, প্রভিডেন্সের অধ্যাপক।

আরো পড়ুন:

নোবেল কমিটি বিবৃতিতে বলেছে, গত দুই শতাব্দীতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্ব দেখেছে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। এর ফলে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেয়েছে বিপুলসংখ্যক মানুষ, আর এর ওপরই গড়ে উঠেছে আমাদের সমৃদ্ধির ভিত্তি। এ বছরের অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী তিন বিজ্ঞানী-জোয়েল ময়কার, ফিলিপ এজিওঁ ও পিটার হাউইট-দেখিয়েছেন, কীভাবে উদ্ভাবন আরো অগ্রগতির প্রেরণা জোগায়।

প্রযুক্তি দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে এবং তা আমাদের সবার জীবনেই প্রভাব ফেলছে। নতুন পণ্য ও উৎপাদন পদ্ধতি পুরোনোকে প্রতিস্থাপন করছে এক নিরবচ্ছিন্ন চক্রে। এই ধারাবাহিক পরিবর্তনই টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল, যা বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনমান, স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক জীবনযাত্রার মান উন্নত করছে।

তবে ইতিহাসে এমনটা সব সময় ঘটেনি, বরং দীর্ঘ সময় স্থবিরতাই ছিল স্বাভাবিক অবস্থা। মাঝেমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার জীবনযাত্রার মান ও আয়ে সাময়িক উন্নতি আনলেও, তা টেকসই হয়নি—অবশেষে প্রবৃদ্ধি থেমে গিয়েছিল।

জোয়েল ময়কার ঐতিহাসিক দলিলের মাধ্যমে খুঁজে দেখেছেন, কীভাবে টেকসই প্রবৃদ্ধি মানবসমাজে ‘নিউ নরমাল বা নয়া স্বাভাবিক’ অবস্থা হয়ে উঠল। তিনি দেখিয়েছেন, ধারাবাহিকভাবে উদ্ভাবন ঘটতে হলে কেবল কোনো কিছু কার্যকর তা জানাই যথেষ্ট নয়, বরং কেন তা কার্যকর-তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও জানা জরুরি। শিল্পবিপ্লবের আগে এই বৈজ্ঞানিক বোঝাপড়ার অভাবের কারণেই নতুন আবিষ্কারগুলোর ওপর ভিত্তি করে অগ্রসর হওয়া কঠিন ছিল। পাশাপাশি, সমাজের নতুন ধারণার প্রতি উন্মুক্ততা এবং পরিবর্তনকে স্বাগত জানানোর গুরুত্বও তিনি তুলে ধরেছেন।

ফিলিপ এজিওঁ ও পিটার হাউইটও টেকসই প্রবৃদ্ধির প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করেছেন। ১৯৯২ সালে তারা তৈরি করেন এক গাণিতিক মডেল, যার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয় ‘সৃষ্টিশীল ধ্বংস’ প্রক্রিয়াকে। অর্থাৎ, যখন কোনো নতুন ও উন্নত পণ্য বাজারে আসে, তখন পুরোনো পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় হার মানে। নতুন উদ্ভাবন তাই যেমন সৃষ্টিশীল, তেমনি ধ্বংসাত্মকও-কারণ এটি পুরোনো প্রযুক্তিকে অচল করে দেয়।

বিভিন্নভাবে এই নোবেলজয়ীরা দেখিয়েছেন, সৃষ্টিশীল ধ্বংসের এই প্রক্রিয়া সংঘাতও সৃষ্টি করে, যা গঠনমূলকভাবে সামলাতে হয়। অন্যথায়, বড় কোম্পানি বা প্রভাবশালী স্বার্থগোষ্ঠী নিজেদের ক্ষতির আশঙ্কায় নতুন উদ্ভাবনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

অর্থনীতিতে নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান জন হাসলার বলেন, “নোবেলজয়ীদের গবেষণা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়-অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্বয়ংক্রিয় কিছু নয়। আমাদের অবশ্যই সেই প্রক্রিয়াগুলো টিকিয়ে রাখতে হবে, যা সৃষ্টিশীল ধ্বংসকে সম্ভব করে তোলে। তা না হলে আমরা আবার স্থবিরতার যুগে ফিরে যেতে পারি।”

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়