ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

গুলি খাওয়ার আগে বিচার চাই : মিলা

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৪, ১৮ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গুলি খাওয়ার আগে বিচার চাই : মিলা

বিনোদন প্রতিবেদক : জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মিলা ইসলাম। খুব কম সময়ের মধ্যে শ্রোতাদের পছন্দের তালিকায় জায়গায় করে নিয়েছেন এই শিল্পী। ২০১৭ সালে পারভেজ সানজারির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। কিন্তু তাদের দাম্পত্য জীবন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বিয়ের কয়েক মাস পরই স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে অধিকার আদায়ের জন্য লড়ছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে মিলা তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো—

‘‘কত কত জীবিত ‘নুসরাত’ আইনের কাছে দাঁড়ান দিনের পর দিন। কিন্তু না মেরে ফেলা পর্যন্ত তাদের জন্য কোনো আওয়াজ উঠবে না। আইন দেশের সুন্দর… দুই বছর হয়ে যাচ্ছে… কোর্টে উল্টা জঘন্যভাবে চিৎকার দিয়ে অপবাদ দেয়া হয় আমাকে… বিচার তো দূর...দাখিল করা ‘খ’ ধারার চার্জশিট আমাকে না বুঝতে দিয়ে ‘গ’ ধারায় মামলা চার্জ গঠন করা হয়...

        আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে… আমার জানা ছিল, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় কোনো রকমের হস্তক্ষেপে নেত্রীর কঠোর নিষেধ রয়েছে... তিনবার আদালতের আদেশ টানা অমান্য করলে জামিন বাতিল হবার কথা…পাঁচবার আমাকে কোর্ট নানা বুঝ দিয়ে পার্মানেন্ট জামিন দেয়...আমি এখন বলতেও পারি নাই শেষের দিন আমার শাশুড়ি, আমার স্বামীর কথায় আমাকে কিভাবে বাথরুম থেকে দরজা ভেঙে বিনা কাপড় পরিহিত অবস্থায় জঘন্যভাবে টেনে আমার দেবর তার স্ত্রী এবং তার স্ত্রীর বাবা মায়ের সামনে এক ঘণ্টা গালিগালাজ করতে থাকে... আমার বাবা ভাইবারে ভিডিও কলের মাধ্যমে পুরাটা ঘটনা দেখে… এক পর্যায়ে আমি হাত জোড় করে ভিক্ষা চাই এই বলে ‘আম্মু আমাকে মেয়ে বলে নিয়ে আসছিলেন…আমার গায়ে কাপড় নাই… দয়া করে আমাকে ঘরের দরজা বন্ধ করে যা বলার বলেন… কিন্তু এই অপমান কইরেন না।’ ভিডিওটা এখনো আমার কাছে...।

দেশের শিল্পী আমি?

আজকে এইটাও বলে ফেললাম... এর চাইতে কাপড় পরা অবস্থায় আমার গায়ে আগুন দিয়ে দিতো... আমি যাই বললাম তাতে পুরা মিডিয়া, শিল্পীরা, আমার ভক্তরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার কথা... কাপড় ছাড়া ওই ছেলেকে রাস্তায় নামিয়ে জুতার বাড়ি মারার কথা... তাই না? আমার এই পোস্টটাই তো সবার শেয়ার করার কথা তাই না? কেউ করবে না... কেউ না… কারণ আমি বেঁচে আছি… এই মিলা কেন এখনো প্রতিদিন চিৎকার করে কাঁদে উত্তর পাও তোমরা? আমি দেশের জাতীয় পর্যায়ের শিল্পী? এখনো আজকেও বার বার ‘ইউএস-বাংলা’-এর এমডিকে কল দিয়েছি...কথা বলতে চেয়েছি… কেন আমার ন্যায্য বিচার তারা তাদের ক্ষমতা দিয়ে আটকে রেখে ওই কুলাঙ্গারকে চাকরিতে রাখছেন? কীভাবে আমার উপর এত অন্যায়ের পরও ‘ইউএস-বাংলা’-এর কেবিন ক্রুয়ের সাথে বিছানায় ঘুমিয়ে থাকা ওই জঘন্য ছবি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরও এই ছেলেকে সামাজিক মর্যাদা দিয়ে ‘ইউএস-বাংলা’-এর এমডি সবাইকে বলে বেড়ান যে ‘দ্যাট ইন অ্যানি কস্ট’ এই মেয়েকে জিততে দিবো না’।

          দেশের নাগরিক হিসেবে আজকে এই বলব... ওই ছেলের বিচার চাই আমি তাইলে... ‘ইউএস-বাংলা’-এর আরো দুইজন পাইলট যারা আমাকে রাস্তায় রাস্তায় অপদস্থ করে নোংরা কথা বলে… তাদের নাম ‘রেজওয়ান আহমেদ খান ও শামস রেজওয়ান’। তারা শুধু আমাকে না বরং আমার বাবাকে নিয়েও প্রকাশ্যে গালি দেয়া.. উল্টা দিকে এরা আমাকে আইসিটি অ্যাক্টের হুমকি দিতে থাকে....। আমি ‘ইউএস-বাংলা’-এর এই তিনজনের বিচার চাই...আমি আমার দেশ ও দেশের সরকারের কাছে আমার ভেঙে দেয়া মেরুদণ্ড ফিরে চাই...ফাইলের উপর ফাইল করা সকল প্রমাণ আমার কাছে জমা...কিন্তু বাকিদের বিচার কই চাইব? এদিকে ওই ছেলে দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য বিভিন্ন বিদেশি এয়ার লাইনে চেষ্টা করে যাচ্ছে...আমার আবেদন আমার নেত্রীর কাছে, আমার অপরাধী যাতে পালাতে না পারে… আমার মামলাটি দয়া করে আবারো সঠিক ধারায় চার্জ গঠন করার আর্জি জানাই... গত দশদিন আগে আমি ওই ছেলেকে হাতে নাতে পতিতা নিয়ে ধরলে ওই ছেলে আমাকে ‘গুলি করে হত্যা করে সেলফ ডিফেন্স বলে প্রমাণ করে দিবে’ বলে আমাকে আর আমার বাবাকে এসএমএস করে... গুলি খাওয়ার আগে বিচার চাই...বিচার চাই…আমি বিচার চাই...।

       ইতি -

একজন জীবিত নুসরাত’’

 

মিলার প্রথম একক অ্যালবাম ‘ফেলে আসা’। ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয় এটি। কয়েকজন সংগীত পরিচালক মিলে এটি তৈরি করেন। ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ফুয়াদ ফিচারিং ‘মিলা চাপ্টার-২’। এই অ্যালবামটির গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক ছিলেন ফুয়াদ আল মুক্তাদির। ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয় তার তৃতীয় অ্যালবাম ‘রি-ডিফাইন্ড’।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ এপ্রিল ২০১৯/রাহাত/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়