ঢাকা     শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ ||  শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হওয়ায় বন্ধুকে হত্যা

সাভার প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০১, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২  
প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হওয়ায় বন্ধুকে হত্যা

ঢাকার ধামরাই এলাকার শাহাদত নামে এক যুবকের সঙ্গে পারিবারিকভাবে একই এলাকার এক তরুণীর বিয়ে ঠিক হয়। সেই তরুণীর সঙ্গে আবার ওই গ্রামের জাহিদুল ইসলামের (২২) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি জাহিদ। আর তাই সহযোগিদের নিয়ে শাহাদাতকে হত্যা করেন তিনি। হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য নিহতের লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় গাছে।

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ একথা জানায়।

নিহত শাহাদাত ধামরাইয়ের যাদবপুর ইউনিয়নের আমরাইল গ্রামের কোহিনুর ইসলামের ছেলে। 

ওই ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ধামরাইয়ের যাদবপুর ইউনিয়নের আমরাইল গ্রামের মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ (২২) এবং একই গ্রামের আবু তাহের (২৪) ও মো. সবুজ হোসেন (২৮)। 

র‌্যাব জানায়, গত বছরের ১ আগস্ট আমরাইল থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে নিজের কর্মস্থলের যাওয়ার জন্যে বের হন শাহাদাত। ৪ আগস্ট থেকে শাহাদাতের সঙ্গে তার বাড়ির লোকজনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় এমনকি তার কোনো খোঁজও পাওয়া যাচ্ছিলনা। ৬ আগস্ট থেকে শাহাদাতের ফোন বন্ধ হয়ে যায়। শাহাদাতের খোঁজ না পেয়ে পরিবারের লোকজন ৮ আগস্ট কালিয়াকৈর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর ১২ আগস্ট ধামরাইয়ের আমরাইল গ্রামের একটি কাঠ বাগান থেকে শাহাদাতের অর্ধগলিত ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। 

লাশ উদ্ধারের দিনই শাহাদাতের মা বাদী হয়ে ধামরাই থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নম্বর- ২৪) করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ধামরাই থানা পুলিশ নাম না জানা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা (নম্বর- ৩২) করে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২১ সালের ১৪ আগস্ট জাহিদের প্রেমিকার সঙ্গে শাহাদাতের বিয়ের দিন ঠিক করা হয়েছিলো। সেটা মানতে না পেরে জাহিদ আরো দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে শাহাদাতকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। আগে থেকেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকায় জাহিদ খুব সহজেই শাহাদাতকে ৩ আগস্ট চন্দ্রা থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর উপজেলার মাটির মসজিদ এলাকায় ডেকে নেয়। এরপর কৌশলে তাকে নিয়ে ধামরাইয়ের আমরাইল এলাকায় এসে দুইদিন অবস্থান করায়। পরে ৬ আগস্ট আশুলিয়ার একটি ফাঁকা নির্জন এলাকায় নিয়ে এসে হাত পা বেঁধে ফেলে এবং লাঠি দিয়ে ভুক্তভোগীর মাথায় আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। 

এরপর ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে দেখাতে নিহতের লাশ ভ্যানে করে আমরাইল পুকুরিয়া এলাকায় মনুমিয়ার কাঠবাগানের যায় আসামিরা। তারা সেখানে একটি গাছের ডালের সঙ্গে শাহাদাতের লাশ ঝুলিয়ে রাখে। সেখান থেকে পালিয়ে আসামিরা পরে চক্রবর্তী মাটির মসজিদ এলাকায় চলে যায়। 

র‌্যাব জানায়, এ ঘটনায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগীর বন্ধু জাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তিনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার না করায় রিমান্ড শেষে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব। পরে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডেরর সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরিফুল/ মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়