ঢাকা     শুক্রবার   ০৩ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২০ ১৪৩১

ঘূর্ণিঝড় মোখা: পটুয়াখালীতে বেড়েছে নদ-নদীর পানি 

পটুয়াখালী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০১, ১৩ মে ২০২৩   আপডেট: ১৭:২৫, ১৩ মে ২০২৩
ঘূর্ণিঝড় মোখা: পটুয়াখালীতে বেড়েছে নদ-নদীর পানি 

বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় মোখা ক্রমশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। ইতিমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে। কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। আকাশ ঘন মেঘাচ্ছন্ন। বাতাসের চাপ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। নদ-নদীর পানির উচ্চতা দেড় থেকে দুই ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক স্থানে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। 

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোখা আজ  শনিবার (১৩ মে) সকাল ৬টায় পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিলো। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। সকল মাছধরা ট্রলারসমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। 

ঘূর্ণিঝড় মোখার খবরে উপকূলের মানুষের মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। সবচেয়ে বেশি দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসকারীরা। তবে জেলার ঝূঁকিপূর্ণ ১৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারে উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সভা করেছেন পটুয়াখালী জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি।

সভায় জানানো হয়, জেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ৭০৩টি সাইক্লোন সেল্টার ২৬টি মুজিব কেল্লা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি বহুতল ভবনগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দূর্যোগ চলাকালীন সময়ে শুকনো খাবারের জন্য ৮ লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা ও ৪০০ মেট্রিক টন চাল, ১৪৬ বান্ডিল টেউটিন ও গৃহনির্মাণ বাবাদ ৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ৭৬টি মেডিক‌্যাল টিম, সিপিপি ৮৭০০ জন, রেড ক্রিসেন্ট প্রতিটি উপজেলায় ২৫ জন, ফায়ার সার্ভিসের কমিউনিটি ভলান্টিয়ারসহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের প্রস্তত করা হয়েছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের ষাটোর্ধ্ব সফিক হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিডরে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার আবার এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাবো। 

মির্জাগঞ্জ উপজেলার পিপড়াখালী গ্রামের বাসিন্দা মনির মিয়া জানান, নদী ভাঙনে আমরা সবকিছু হারিয়েছি। এখন আমাদের এখানে জরুরি বেড়িবাধ নির্মাণ করা হচ্ছে। তারপরও আতঙ্কে আছি। 

 পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, আজ রাতের মধ্যে আমাদের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ শুরু হতে পারে। এছাড়া, উপকূলে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন বলেন, অতি ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ জরুরি মেরামত শুরু হয়েছে। কালকের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় আমরা ইতিমধ্যে সভা করেছি। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমার সর্বাত্মক প্রস্তুত রয়েছি। 

ইমরান/ইভা 

সম্পর্কিত বিষয়:

ঘটনাপ্রবাহ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়