ইউপি সদস্যকে মারধর, ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বরগুনার তালতলীতে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. জামাল খানকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগে দুই সাংবাদিকসহ ১২ জনের নামে আদালতে মামলা হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইউপি সদস্য জামাল খান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
বিচারক মো. আরিফুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে তালতলী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা হলেন- তালতলী উপজেলার আবুল কালাম, মিজানুর রহমান মিজান, বশির উদ্দিন, নাঈম ইসলাম (সাংবাদিক), আল-আমিন, শাহাদাৎ হোসেন (সাংবাদিক), জাফর দফাদার, খলিল, মাসুদ, বেল্লাল ও ইব্রাহিমসহ ১২ জন। নাম না জানা আসামি ৭-৮ জন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (৩১ আগস্ট) উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল খানের বাড়ির সামনে নিদ্রা স্লুইজঘাট খালে একটি চোরাই ইঞ্জিন চালিত স্টিলবডি ট্রলার নোঙর করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন ইউপি সদস্য জামাল খানকে জানালে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান। ইউএনও ইঞ্জিন চালিত স্টিলবডি ট্রলারটি ইউপি সদস্যর জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন। এ খবর পেয়ে আসামিরা রাত ১০টার দিকে ট্রলারটি অনৈতিকভাবে নেওয়ার জন্য টাকার প্রস্তাব দেন জামালকে। রাজি না হলে তারা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ট্রলারটি। এসময় আবুল কালাম, মিজানুর রহমান, বশির, সাংবাদিক নাইম ও শাহাদাৎসহ অন্যরা দা ও লোহার রড দিয়ে খুনের উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর করেন ইউপি সদস্যকে। ফলে গুরুতর জখম হন জামাল খান। মারধরের একপর্যায়ে ইউপি সদস্যকে বিবস্ত্র করে ভিডিও করেন অভিযুক্তরা।
পরে স্থানীয় লোকজন আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায় হামলাকারীরা। ভয়ে চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে থাকেন ইউপি সদস্য। পরদিন দুপুরের দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা ইউপি সদস্য জামাল খানকে বাড়িতে থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয় তাকে।
মামলার বাদী জামাল খান বলেন, ‘যাতে মামলা না করি সেজন্য আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছেন আসামিরা। আমি সঠিক বিচারের আশায় মামলা করেছি। এখন সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিবস্ত্র ভিডিও দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছে ও টাকা চেয়েছে দুজন সাংবাদিক। যদি মামলা না ছেড়ে দেই, তাহলে আমার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে আসামিরা। আমি প্রাণের ভয়ে আছি।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি। আদলতের আদেশ পেলে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’
ইমরান/মাসুদ