গবি ক্যান্টিনে ফের দুরবস্থা, স্থায়ী সমাধান দাবি
গবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের খাবারে প্লাস্টিক ও মুরগির পালক
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) সুদীর্ঘ যাত্রায় এখনো শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত খাবার নিশ্চিত হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বারবার অভিযোগ ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সত্ত্বেও ক্যান্টিন সমস্যার স্থায়ী সমাধান আসেনি।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ক্যান্টিনের দায়িত্ব একাধিকবার হস্তান্তর হলেও সমস্যার কোনো কার্যকর পরিবর্তন হয়নি। বরং কিছুদিন পরই পূর্বের দুরবস্থায় ফিরে গেছে। খাবারের দাম ও পরিমাণে রয়েছে অসঙ্গতি। নাস্তা ও দুপুরের খাবারের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিয়েও শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন নিম্নমানের খাবার। আর ক্যান্টিনের পরিবেশও চরম অস্বাস্থ্যকর, যা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুকিতে ফেলেছে। রান্নাঘরের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, বিশুদ্ধ পানির অভাব ও স্থান সংকট শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ক্যান্টিনে খাবার খোলাভাবেই রাখা হয়, ব্যবহৃত পোড়া তেল সংরক্ষণ করে পরদিন আবার রান্নায় ব্যবহার করা হয়। রান্নাঘর ভেজা ও দুর্গন্ধময় এবং কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না রাঁধুনিরা।
ক্যান্টিন সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে একাধিক ফুড কোর্ট চালুর প্রস্তাব দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ক্যান্টিন স্থানান্তরের পরিকল্পনা থাকলেও এখনও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তবে গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলার বি ব্লকে একটি আধুনিক ডিজিটাল ক্যাফেটেরিয়া স্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে গবি প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
ক্যান্টিনের পরিবেশ ও অব্যবস্থাপনার তীব্র সমালোচনা করে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী শান্ত আহমেদ বলেন, “ক্যান্টিনের রান্নাঘরে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা নেই। ফলে সব সময় ভ্যাপসা পরিবেশ বিরাজ করে। খাবারে প্লাস্টিক, মুরগির পালক পাওয়া যায়। আসবাবপত্রে ময়লা লেগে থাকে। পর্যাপ্ত বসার জায়গা না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে খেতে বাধ্য হন।”
ক্যান্টিনের দায়িত্বে থাকা মো. আরশেদ প্রথমে কয়েকটি অভিযোগ অস্বীকার করলেও ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা প্রমাণ উপস্থাপন করলে ভুল স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “ঈদের পরে ক্যান্টিনের দায়িত্ব ছেড়ে দেব।”
তবে ক্যান্টিন কমিটির সদস্যরা সাংবাদিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, কর্মচারীদের টুপি, গ্লাভস পরা ও খাবার ঢেকে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তারা তা মানছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেতন না পাওয়ায় তারা নিজেদের প্রশাসনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য মনে করছেন না।
তারা আরো বলেন, শুধু সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবারের ব্যবস্থার কারণে অনেকেই ক্যান্টিন পরিচালনায় আগ্রহ দেখান না। শিক্ষার্থীরা যদি কোনো দক্ষ রাঁধুনির সন্ধান দেন, তবে যাচাই-বাছাই করে তাকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “আমার কাছে অভিযোগগুলো পৌঁছেছে। ক্যান্টিন কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি অবহিত করতে বলেছি।”
ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী