ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সংগীতস্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

হাকিম মাহি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৯ জুলাই ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সংগীতস্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

হাকিম মাহি : ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’ গানসহ প্রায় ৫০০ গানের রচয়িতা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়। তিনি ছিলেন বিশিষ্ট বাঙালি কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার ও সংগীতস্রষ্টা। সবার কাছে তিনি ডি. এল. রায় নামেও সমধিক পরিচিত ছিলেন।

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ১৮৬৩ সালের ১৯ জুলাই আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে। পিতা কার্তিকেয়চন্দ্র রায় কৃষ্ণনগর রাজবংশের দেওয়ান ছিলেন। তাই দ্বিজেন্দ্রলাল রাজ দরবারের অনেক গুণীজনের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে। যেমন-ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, দীনবন্ধু মিত্র প্রমুখ অন্যতম। তাঁর বাবা কার্তিকেয়চন্দ্র নিজেও একজন বিশিষ্ট খেয়াল গায়ক ও সাহিত্যিক ছিলেন। তাঁর মা প্রসন্নময়ী দেবী অদ্বৈত আচার্যের বংশধর ছিলেন। দ্বিজেন্দ্রলালের দুই দাদা রাজেন্দ্রলাল ও হরেন্দ্রলাল এবং এক বৌদি মোহিনী দেবীও ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও পত্রিকার সম্পাদক।
দ্বিজেন্দ্রলাল নিজেও একজন সাংবাদিক ছিলেন। ১৯১৩ সালে তিনি ভারতবর্ষ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। তাঁর কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ রয়েছে। এদের মধ্যে আর্যগাথা (১ম ও ২য় ভাগ) ও মন্দ্র উল্লেখযোগ্য। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বিখ্যাত নাটকগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য একঘরে, কল্কি-অবতার, বিরহ, সীতা, তারাবাঈ, দুর্গাদাস, রাণা প্রতাপসিংহ, মেবার পতন, নূরজাহান, সাজাহান, চন্দ্রগুপ্ত, সিংহল-বিজয় ইত্যাদি। তিনি যে একজন দেশপ্রেমিক ছিলেন, তা তাঁর লেখায় প্রকাশ পেয়েছে।

তিনি হাসতে ও হাসাতে ভালোবাসতেন। যেমন তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘স্ত্রীর চেয়ে কুমীর ভাল বলেন সর্বশাস্ত্রী, ধরলে কুমীর ছাড়ে বরং, ধরলে ছাড়ে না স্ত্রী।’

‘বঙ্গ আমার, জননী আমার, ধাত্রী আমার, আমার দেশ’ গানটি আজও দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয়। তাঁর লিখিত নাটকগুলোতে প্রাচীন ভারতীয় সমাজের অবস্থা ফুটে ওঠেছে। তার যেসমস্ত নাটক সমাজের কথা বলে তারমধ্যে- একঘরে, কল্কি-অবতার, বিরহ, সীতা, তারাবাঈ, দুর্গাদাস, রাণা প্রতাপসিংহ, মেবার-পতন, নূরজাহান, সাজাহান, চন্দ্রগুপ্ত, সিংহল-বিজয় উল্লেখযোগ্য।

এই মহান ব্যক্তির জন্মে আজকের বাংলাদেশ তথা পুরো ভারতীয় উপমহাদেশ পায় সংস্কৃতির অঙ্গনে অনন্য মাত্রা। তাঁর গানগুলো বাংলা সংগীত জগতে দ্বিজেন্দ্রগীতি নামে পরিচিত। ১৯১৩ সালের ১৭ই মে তারিখে কলকাতায় দ্বিজেন্দ্রলাল রায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ জুলাই ২০১৯/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়