ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ভাড়া নিয়ন্ত্রণে রেখে বাসের সংখ‌্যা বাড়ানোর দাবি

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৩৬, ২ এপ্রিল ২০২১  
ভাড়া নিয়ন্ত্রণে রেখে বাসের সংখ‌্যা বাড়ানোর দাবি

অর্ধেক সিট খালি রাখায় এভাবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন কোনো কোনো যাত্রী

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহন-দূরপাল্লার  বাসে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক মনে করছে সাধারণ যাত্রীসহ সচেতন মহল। তাদের মতে, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চলাচলের কথা থাকলেও চালক-হেল্পাররা তা মানছেন না। এছাড়া, যেখানে আগের চেয়ে দ্বিগুণ বাসের প্রয়োজন, সেখানে বরং কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরফলে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চলার কথা থাকলে  সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।  এভাবে চলতে থাকলে জনদুর্ভোগ বাড়বে।  তাই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে সড়কে বাসের সংখ‌্যা বাড়াতে হবে। না হলে লকডাউন বা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করতে হবে বলেও তারা মনে করেন।

শুক্রবার (২ এপ্রিল) মিরপুর, ফার্মগেট, শাহবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাস ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বাস অর্ধেক যাত্রী নিয়েই চলছে।  তবে সবাই মাস্ক পরেননি।  কিছু বাসে  একসিট খালি রেখে বসায়, কিছু যাত্রীকে দাঁড়িয়ে গন্তব‌্যে যেতে দেখা গেছে। 

আয়াত বাসের সহকারী মামুন বলেন, ‘প্রতিদিন প্রচুর যাত্রীর ভিড় থাকে।  তুলতে না চাইলেও তারা ধাক্কা দিয়ে উঠে যান।  তবে, আজ শুক্রবার হওয়ায় যাত্রীর চাপ কম। তাই অর্ধেক যাত্রী নিয়েই চলছে।  শুক্রবার বাদে অন্যান্য ছুটির দিনে লোকের চাপ বাড়ে।  তখণ নিয়ম মানা যায় না।’

দ্বিগুণ লোক নিয়ে ভাড়া বেশি নেওয়া কতটা যৌক্তিক, এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিহঙ্গ বাসের চালক সাহেদ মিয়া বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি নিয়ম মেনেই যাত্রী তুলতে।  কেউ জোর করে উঠে গেলে তাকে কিভাবে নামাবো?’

৬০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়ায় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলছে বাস

বাসে ফার্মগেট থেকে মিরপুর যাচ্ছিলেন হুসাইন।  তিনি বলেন, ‘আজ একটা ব্যক্তিগত কাজে মিরপুর যাচ্ছি। দুই সিটে একা বসে যাচ্ছি। তবে আমার বিভিন্ন কাজে প্রতিদিনই বাসে যাতায়াত করতে হয়। দেখা গেছে, চাইলেও স্বাস্থ‌্যবিধি মেনে বাসে যাতায়াত সম্ভব হয় না। একজন পাশে দাঁড়িয়ে থাকে। তাকে পাশে বসতে না দিলে নিজের কাছেও খারাপ লাগে।’

মাহমুদুর রহমান নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘এভাবে চলতে পারে না। টাকাও বাড়িয়েছে। আবার যাত্রীও ডাবল। যাত্রী না উঠে কই যাবে? তাকে তো গন্তব্যে যেতে হবে। তাই সব বিবেচনায় নিয়ে ভাড়া বাড়াতে হবে। হুট করে ভাড়া বাড়ানো এক প্রকার জুলুম। কারণ আপনি যতই নিয়মের কথা বলুন, পরিস্থিতির কারণে সেটা মানা সম্ভব হয় না।’

জামশেদ নামের এক যাত্রী বলেন, ‘শুধু অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলার কথা বলে দিলেই হয় না। এর জন্য বাস বাড়াতে হবে, ভাড়া নিয়ন্ত্রিত রাখতে হবে। সবার আয় রোজগারের প্রতিও সরকারের খেয়াল রাখতে হবে।’

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়লেও অধিকাংশ গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বাড়তি ভাড়া নিয়ে সেই পুরনো কায়দায় গাদাগাদি করে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।’

মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে হয়তো লকডাউন বা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করতে হবে।  নয়, পুরনো ভাড়ায় আগের নিয়মে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

উল্লেখ‌্য, করোনা পরিস্থিতিতে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে বাস ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।  বুধবার (৩১ মার্চ) থেকে এই নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে।

ইয়ামিন/এনই

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়