ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৫ জুলাই ২০২৫ ||  আষাঢ় ৩১ ১৪৩২

উত্তরায় র‌্যাবের পোশাক পরে ছিনতাই: শনাক্ত হয়নি কেউ

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪৯, ১৭ জুন ২০২৫   আপডেট: ১৯:৫১, ১৭ জুন ২০২৫
উত্তরায় র‌্যাবের পোশাক পরে ছিনতাই: শনাক্ত হয়নি কেউ

ফাইল ছবি/সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় নগদ ডিস্ট্রিবিউটরের দিনে দুপুরে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার কোনো কূল কিনারা করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।পেশাদার অপরাধীদের পাশাপাশি এ ঘটনায় নগদের লোকজনকেও সন্দেহে রেখে তদন্ত করছে পুলিশ।

মঙ্গলবার  (১৭ জুন) দুপুরে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, “যারা অপরাধী তারা পুলিশ বা র‌্যাবের দুর্বলতা, ফাঁক-ফোকর ব্যবহার করে থাকে। সেদিন ছুটির দিন ছিল, তার মধ্যে সকালে মোটা অঙ্কের টাকা কেন নগদের ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের এমডি আব্দুল খালেক নয়নের বাসা থেকে দুটি মোটরসাইকেলে বহন করা হচ্ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঝুঁকি বিবেচনায় পুলিশের মানি স্কট সেবা পেতে যোগাযোগ করা হয়নি পুলিশের সঙ্গে। এসব জানতে নগদের চার কর্মীকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি।অনেক সময়ই নয়নের বাসায় টাকা রাখা হতো। মোটরসাইকেলে করেও মাঝে-মধ্যে টাকা বহন করতেন তারা। কিন্তু এটাই প্রথম এতো টাকা নয়ন সাহেবের বাসায় আগে কখনো রাখা হয়নি। এতো সকালে এভাবে কখনো বহনও করা হয়নি।”

পুলিশ জানায়, ছুটির দিন হওয়ায় মাইক্রো, হায়েস বা টাকা বহন করা গাড়িতে না নিয়ে গত ১৪ জুন সকালে ব্যাগে ভরে বাইকের মতো অনিরাপদ যানবাহনে বহন করা হয়েছিল নগদের দুটি ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের সোয়া কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, যে দুজনের উপরে টাকা বহনের দায়িত্ব, তারা ছিলেন অনুপস্থিত। তাদের অবর্তমানে অনভিজ্ঞ দুই সুপারভাইজারসহ ৪ জনের উপরে টাকা বহন করেন। শনিবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডে দুটি ব্যাগে ভরে দুটি মোটরসাইকেল যোগে ১ কোটি ২২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা নিয়ে রওনা দেন ৪ জন। গন্তব্য উত্তরা-১৩ সেক্টরের ১৩ নম্বর রোডের ৪৯ নম্বর বাসা। যেখানে উত্তরায় নগদের ডিস্ট্রিবিউটরের অফিস। কিন্তু উত্তরা-১৩ সেক্টরের ১৩ নম্বর রোডের ৩৭ নম্বর বাসার সামনে বাম পাশে পৌঁছতে আগে থেকেই ওৎপেতে থাকা ব্যক্তিরা দুই মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এ সময় র‌্যাব পরিচয়ে ৮/১০ জন অস্ত্রের মুখে ৪ জনকে জিম্মি করে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। অনেকটা ফিল্মি স্টাইলেই কালো কাপড়ে ছিনতাইকারীদের মুখ ছিল ঢাকা। অস্ত্রের মুখে ৩ জনকে টাকার ব্যাগসহ হায়েস গাড়িতে উঠানো হয়।

আরো পড়ুন:

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ ছাড়াও তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা মেট্রো-উত্তর ও পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাব। চাঞ্চল্যকর এই ছিনতাইয়ের ঘটনায় মোট ৫ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তাদের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে রয়েছেন, নগদের উত্তরা ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের ম্যানেজার রিয়াজুল ইসলাম, সুপারভাইজার সঞ্জয় কুমার, ওমর আহমেদ ও তুরাগ অফিসের ম্যানেজার মাসুদুর রহমান। অন্যদিকে মামলার বাদী আব্দুর রহমানকে ডেকে নিয়েছে ডিবি পুলিশ।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, “র‌্যাবের গোয়েন্দা ও অপারেশন বিভাগ ছাড়াও র‌্যাব-১ গভীরভাবে ছায়া তদন্ত করছে। এই ছিনতাইয়ের ঘটনায় যারা সন্দেহের ভেতরে আছেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”

ঢাকা মেট্রো-উত্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি এনায়েত হোসেন বলেন, “নিয়মিত কারা টাকা আনা-নেওয়া করতেন? সেদিন কেন অন্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল? আবার দিনের টাকা দিনেই আনা-নেওয়া করা হতো। সেদিন কেন বেশ কয়েকদিনের টাকা বহন করা হচ্ছিল তাও আবার মাইক্রোবাসে নয়, মোটরসাইকেলে কেন বহন করা হচ্ছিল। এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে। আমরা বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছি। যারা আগে টাকা আনা-নেওয়া করতেন।”

ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। ডিবির একাধিক টিম তদন্তের পাশাপাশি অভিযানে আছে।”

পড়ুন: উত্তরায় র‌্যাবের পোশাক পরে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা ছিনতাই

ঢাকা/এমআর/এসবি

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়