ঢাকা     বুধবার   ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ২৯ ১৪৩১

ফাহিমের নেতৃত্বে গড়া বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধনী কমিটি স্থগিত 

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৪, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫  
ফাহিমের নেতৃত্বে গড়া বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধনী কমিটি স্থগিত 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গঠনতন্ত্র সংশোধনী প্রস্তাবনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ বয়কট করেছে ঢাকার ক্লাবগুলো। সঙ্গে নাজমুল আবেদীন ফাহিমের নেতৃত্বে আহ্বায়ক কমিটিরও বিলুপ্তি চেয়েছে ‘ঢাকা ক্রিকেট ক্লাব অর্গানাইজার্স অ্যাসোসিয়েশন’। 

এসব দাবি জানিয়ে বিসিবি প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদকে স্মারকলিপি দেওয়ার সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সংশোধনী কমিটিসহ এর কার্যক্রম স্থগিত করেছে বোর্ড। শনিবার (১৭ জানুয়ারি) বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবির পরিচালনা পর্ষদ। 

বোর্ড সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পরিচালক মাহবুব আনাম। 

আরো পড়ুন:

“আপনারা জানেন, গঠনতন্ত্রের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আজকে বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই কমিটি পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা হবে। তাদের কাজের পরিধি ও টার্মস অব রেফারেন্স তৈরি করার পরই বাকি কার্যক্রম হবে।”

“গঠনতন্ত্রে কী পরিবর্তন আনা প্রয়োজন এবং স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে সেগুলো কীভাবে তারা করবেন বিষয়গুলো সেখানে থাকবে”-আরো যোগ করেন মাহবুব আনাম। 

গত শনিবার বিকেলে বিসিবি কার্যালয়ে ফারুকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ক্রীড়া সংগঠকরা। বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ক্রীড়া সংগঠক রফিকুল ইসলাম বাবু ও লুতফর রহমান বাদল। 

বয়কটের ঘোষণা দিয়ে বাদল বলেন, “এটা স্পষ্ট, দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা খেলব না। খেলা থেকে বিরত থাকবো। আমরা খেলার পক্ষে, আমাদের বিরুদ্ধে যে ষড়ন্ত্রমূলক কার্যক্রম চলছে, এগুলো বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্রিকেটের সঙ্গে নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকবো না।” 

১৪ জানুয়ারি থেকে বিসিবি গঠনতন্ত্রের সংশোধনী প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে ক্লাবগুলো। প্রস্তাবনায় ক্লাবগুলোর কতৃত্ব কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রথমে তারা তিন দিনের আল্টিমেটাম দেন। এরপর ১৮ জানুয়ারি ফারুকের সঙ্গে দেখা করে লিগ বয়কটের ঘোষণা দেন। 

প্রস্তাবনা খসড়ায় দেখা যাচ্ছে নতুন করে সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করলেও বোর্ডে কমানো হচ্ছে ঢাকাভিত্তিক ক্রিকেট ক্লাবের কর্তৃত্ব আর বাড়ানো হচ্ছে ‘সরকারের প্রভাব’। বর্তমানে ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে ১২ জন পরিচালক আসতে পারবেন। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ক্লাব থেকে সেটি কমিয়ে মাত্র ৪ জন পরিচালকে নিয়ে আসা হয়েছে। অর্থাৎ, ঢাকার প্রিমিয়ার ডিভিশন, ফার্স্ট ডিভিশন ও থার্ড ডিভিশন ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে মাত্র ৪ জন পরিচালক আসতে পারবেন বোর্ডে।

ক্লাব ক্রিকেটের সংশ্লিষ্টতা কমলেও বাড়ছে ডিভিশন ও ডিসট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রভাব। আগে ১০ জন পরিচালক আসতে পারতেন বিভাগ ও জেলা থেকে। সেটি তিনজন বাড়িয়ে ১৩ করার প্রস্তাব আনা হচ্ছে। প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রে ঢাকা বিভাগ থেকে পরিচালক একজন বাড়িয়ে তিনজন করা হচ্ছে। 

এ ছাড়া, দুজন করে পরিচালক হবেন চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর থেকে। একজন করে থাকবেন বরিশাল ও সিলেট থেকে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ইন্সটিটিউশন থেকে একজন বাড়িয়ে দুজন করা হচ্ছে। একই থাকছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে। আগের মত বর্তমান সংশোধনীতেও দুজন রাখা হচ্ছে।

সব মিলিয়ে ২৫ জন পরিচালক থেকে কমিয়ে আনা হচ্ছে ২১-এ। তাতে দেখা যাচ্ছে— বিভাগ, জেলা, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও ইন্সটিটিউশনের ১৭ জন পরিচালকই হবেন সংশ্লিষ্ট সরকারের আস্থাভাজন কেউ। তাতে বোর্ডে বাড়বে ‘সরকারের প্রভাব’ আর কমবে ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট ক্লাবের কর্তৃত্ব।

ঢাকা/রিয়াদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়