সিসিক নির্বাচন: ইশতেহার আধুনিক সিলেট গড়ার অঙ্গীকার বাবুলের

সিলেটকে নাগরিক বান্ধব ও যানজটমুক্ত করে সুপরিকল্পিত আবাসনের নগর হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। এসময় তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনকে সর্বজনীন এবং দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলার পাশাপাশি নগর ভবনকে আধুনিক ও ঐতিহ্যের মিশেলে একটি দৃষ্টিনন্দন নগর ভবনে রূপান্তর করার প্রতিশ্রুতি দেন।

রোবাবর (১৮ জুন) বাবুল নিজের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে ইশতেহার ঘোষণা করেন। 

বাবুল বলেন, নির্বাচিত হলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ডের বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন ও সন্ত্রাস বিরোধী নাগরিক কমিটি গঠন করা হবে। যে কমিটি এলাকার উন্নয়ন ও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিতে কাজ করবে। 

প্রথমে নতুন ১৫টি ওয়ার্ডের পরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নগরের বর্ধিত এলাকায় পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ এবং বিদ্যমান রাস্তাঘাট সংস্কার ও নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হবে। নগরের জলের সমস্যা সমাধানে সিলেট ওয়াসার কার্যক্রম গতিশীল করার কথাও জানান তিনি।  

তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তা তুলে ধরার জন্য জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। একটি সুপরিকল্পিত সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ে তুলব। যেখানে নাট্যমঞ্চ, সিনেপ্লেক্সসহ সাংস্কৃতিক চর্চার সব ধরনের সুবিধা থাকবে। পাশাপাশি পর্যটনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সিলেটে খেলার মাঠের সল্পতার কথা উল্লেখ করে নির্বাচিত হলে করপোরেশনের উদ্যোগে মাঠ তৈরি এবং ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে খেলাধুলার প্রসার ঘটাতে ব্যবস্থা নেওয়া এবং বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে নগরকে সবুজে আচ্ছাদিত করা হবে বলেও জানান জাতীয় পার্টির এই প্রার্থী।

নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার আগে নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘একটি পরিকল্পিত নগরের ক্যানভাস অনেক বড়। শুধু রাস্তাঘাট আর ড্রেন করলেই নগর পরিকল্পিত হয়ে ওঠে না। সিলেট নগরের এখনও অনেক সমস্যা রয়েছে। যানজট, জলাবদ্ধতার মতো সমস্যা নিরসন ছাড়াও অনেক কিছু করার বাকি রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে সিটি করপোরেশনের আয়তন অনেক বেড়েছে। ২৭টি ওয়ার্ড থেকে হয়েছে ৪২টি ওয়ার্ড। বর্ধিত এলাকায় অনেক সমস্যা রয়েছে। অনেক পিছিয়ে রয়েছে নতুন এলাকাগুলো। সুতরাং এই নগরকে যে বা যারা ভালোভাবে জানে, বুঝে তাঁর হাতেই নগর উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া উচিত।’

বাবুল আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানকে ইঙ্গিত করে বলেন, “‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ কেউ এই নগরের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। যে নগরের অলিগলিই চেনে না তার পক্ষে নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ কতটুকু সম্ভব এই বিচারের ভার আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম। আমি এই শহরেরই সন্তান। সুরমার এপার-ওপার দুপারই আমার চেনা। এই নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে আমার পদচারণা রয়েছে। তাই নগরবাসীর কাছে আমার আহ্বান আপনারা যেন সবকিছু বিবেচনায় রেখে লাঙ্গল মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেন।”

তিনি আরও বলেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি, আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করলে সিলেটকে একটি আধুনিক মহানগর হিসেবে গড়ে তুলব। নগরবাসীর নিরাপত্তা ও যোগাযোগের উপযোগী নতুন নতুন রাস্তা, ফুটপাত নির্মাণসহ যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেবো।’