কুসিক উপনির্বাচন
প্রচারণা জমে উঠেছে, বাড়ছে বাকযুদ্ধ
রুবেল মজুমদার, কুমিল্লা || রাইজিংবিডি.কম
![প্রচারণা জমে উঠেছে, বাড়ছে বাকযুদ্ধ প্রচারণা জমে উঠেছে, বাড়ছে বাকযুদ্ধ](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2024February/8585-2402271415.jpg)
মনিরুল হক সাক্কু, তাহসিন বাহার সূচনা, নিজাম উদ্দিন কায়সার ও নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম
জমে উঠেছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মেয়র পদে উপনির্বাচন। বিএনপি নির্বাচনে না থাকলেও তাদের দুই নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর লড়াই জমে উঠেছে। কথার লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না।
গত ১৩ ডিসেম্বর মেয়র আরফানুল হক রিফাতের মৃত্যু হলে পদটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৯ মার্চ এখানে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রচারণার ৫ম দিনে নগরীতে গণসংযোগ চালিয়েছেন চার মেয়র প্রার্থী। আধুনিক ও স্মার্ট সিটি গড়ার অঙ্গীকার করে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন তারা। নানা স্লোগান ও মাইকিংয়ে মুখরিত নগরীর অলিগলি।
মঙ্গলবার (২৭ জানুয়ারি) সারা দিন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাস প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ডা. তাহসিন বাহার সূচনা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন।
এ সময় তিনি কাপ্তান বাজার ও মোগলটুলিসহ আশপাশের এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ চালান। তিনি নগরীর বাগিচাগাওসহ বিভিন্ন স্থানে উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেন।
এ সময় তাহসিন বাহার সূচনা বলেন, ‘নির্বাচিত হলে দুর্নীতিমুক্ত নগরপ্রশাসন গড়ার পাশাপাশি কুমিল্লা সিটিকে করা হবে আধুনিক ও স্মার্ট সিটি। কুমিল্লাবাসী সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে দুর্নীতিমুক্ত সিটি কর্পোরেশন তৈরি করব। জনগণের ট্যাক্সের টাকা দূর্নীতি করে কারও পকেটে যেতে দেব না ইনশাল্লাহ।’
কুসিকের দুইবারের মেয়র, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর রেইকোর্স, বিষ্ণপুর, কালিয়াজুড়ি এলাকায় তাঁর অনুসারী নেতাকর্মীকে নিয়ে গণসংযোগ করেন।
এ সময় সাক্কু বলেন, ‘আমি নতুন সিটি কপোরেশনকে সাজিয়েছি। আমি আধুনিক শহর গড়তে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সহযোগিতায় বড় বাজেট এনেছিলাম, এগুলো তারা কী করেছেন, আমি জানি না।’
২০২২ সালের ১৫ জুন কুসিকের তৃতীয় নির্বাচনে আরফানুল হক রিফাত মাত্র ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে নিজাম উদ্দিন কায়সার প্রায় ৩০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করায় সাক্কু ও কায়সারকে বহিষ্কার করে বিএনপি।
কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, লহিপুরা, ধর্মপুর, দয়াপুর, চৌয়ারা, গ্রাম চৌয়ারা, কালিনগর, ডুমুরিয়া, তারাফাইয়াসহ আশপাশের এলাকায় গণসংযোগ করেন।
এ সময় নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, ‘সরকার যে ডামি নির্বাচন করেছে, জনগণ তা বর্জন করেছে। কিন্তু এখন বিএনপি আবারও টেস্ট কেস হিসেবে আমাকে পর্যবেক্ষণ করছে। তাই এ নির্বাচনে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে মাঠে নেমেছে। তারা আবারও ভোটের মাঠে আসতে শুরু করেছে। তাই জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচন উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। কিন্তু কী হচ্ছে? জনগণ মাঠে নামলে আমাকে শোকজ করে। এতে জনগণকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচন কমিশন আবারও আস্থা হারাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারুণ্যের জোয়ার আমার পক্ষে। গত নির্বাচনে আমি তা প্রমাণ করেছি। আধুনিক ও স্মার্ট সিটি করতে এবার সর্বস্তরের ভোটারদের সমর্থনে ঘোড়া প্রতীকের জয় হবে।’
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও হাতি প্রতীকের প্রার্থী নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম নেতাকর্মীদের নিয়ে নগরীর সুজানগর এলাকায় প্রচারণা চালায়।
প্রচারণায় তিনি বলেন, ‘ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে শঙ্কিত। একজন প্রার্থীর লোকজন ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। কিন্তু ভোটারদের বলতে চাই, এবার আর সেই সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন নগরবাসীকে উপহার দেবে।’
/বকুল/
আরো পড়ুন