ঢাকা     সোমবার   ১৭ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ৩ ১৪৩১

কোরবানিকে সামনে রেখে মিরকাদিমে চলছে ধবল গরুর পরিচর্যা

শেখ মোহাম্মদ রতন, মুন্সীগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ২৭ মে ২০২৪   আপডেট: ১২:০১, ২৭ মে ২০২৪
কোরবানিকে সামনে রেখে মিরকাদিমে চলছে ধবল গরুর পরিচর্যা

মিরকাদিমের ধবল গরু অত্যন্ত প্রসিদ্ধ। যা কোরবানির সময় এলে বিশেষ আলোচনায় উঠে আসে। এ অঞ্চলে এবং আশেপাশে যে কারোরই প্রথম পছন্দ এই ধবল গরু। তাই কোরবানির এ মৌসুমে মিরকাদিমের ধবল গরুর খুবই চাহিদা। 

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম একটি ঐতিহ্যবাহী নদীবন্দর। এক সময় বলা হতো ‘দ্বিতীয় কলকাতা’ ।গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় ধলেশ্বরী এই মিরকাদিম তীরবর্তী ১৯৯৫ সালের জানুয়ারিতে পৌরসভায় উন্নীত হয়। অন্তত ২০০ বছর ধরে ধবল গরু মিরকাদিমের আলাদা পরিচিতি এনে দিয়েছে । 

মিরকাদিমের ধবল গরুর বৈশিষ্ট হলো এ সমস্ত গরুর চোখের পাপড়ি সাদা, নাকের সামনের অংশ সাদা, পায়ের খুর সাদা, লেজের পশম সাদা, আর সারা শরীরও সাদা হয়ে থাকে। এসব ধবল গরু একদিকে দেখতে সুন্দর এবং অন্যদিকে মাংসও খুব সুস্বাদু।

অন্যদিকে এই গরু খুব শান্ত তাই লালনপালনেও সুবিধা। মিরকাদিমে ধানচাল, ডাল, তেলের মিল থাকার কারণে খাদ্য জোগানো অনেকটাই সহজলভ্য। এ অবস্থায় এবারের কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কৃষক বা খামরিরা গরু মোটাতাজাকরণে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন খামারি গরুর গোসল করানো, খামার নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং গরুর খাবার দাবার নিয়ে খুবই ব্যস্ত। তাদের মূল উদ্দেশ্য গরু মোটাতাজাকরণ। যাতে বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়।

এসময় হাবিবুর রহমান নামে একজন গরু খামার পরিচর্যাকারী বলেন, এসব গরুকে প্রধানত শুকনো খাবার বেশি খাওয়ানো হয়। খৈল, ডালের ভুসি, ধানের কুরা, খুদের খিচুড়ি ইত্যাদি খাওয়ানো হয়, সাথে দেওয়া হয় সবুজ ঘাস। ফলে গরুর মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু হয়। 

ইমন এগ্রো নামে গরু খামারের রাশেদ আরেকজন পরিচর্যাকারী  বলেন, মুন্সীগঞ্জ সদরের মিরকাদিমের ধবল গরুর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাটে তোলার আগেই খামার থেকে বিক্রি হয়ে যায় এ গরু। আগে পুরান ঢাকায় এ গরুর চাহিদা বেশি ছিল, এখন এর চাহিদা দেশ জুড়েই। তাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতারা মিরকাদিমের খামারে এসে গরু কিনে নিয়ে যান। দু-একদিনের মধ্যে এসব খামারে পুরোদমে গরু বিক্রি শুরু হবে। তবে এখনো অনেকে এসে দেখে যাচ্ছেন। কেউ দরদাম করে খামারের মালিককে অগ্রিম বায়নার টাকা দিয়ে যাচ্ছেন । 

খামারের মালিকরা জানান, এবার মিরকাদিমের গরুর দাম সর্বনিম্ন এক লাখ থেকে দশ লাখ টাকা পর্যন্ত হবে। 

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, এ অঞ্চলের মিরকাদিমে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ধবল গরু লালন পালন করা হয়। কৃষকরা সবুজ খাস খাওয়ায় বেশি। এছাড়া খৈল, ভুষি ইত্যাদি খাওয়ায় এবং হরমোন জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করেনা। তাই মিরকাদিমের এই ধবল গরুর চাহিদা বেশি।

জেলার প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এ বছর জেলায় ৫ হাজার ২৬০টি খামারে গরু লালন পালন চলছে। এসব খামারে ৫৫ হাজারেরও বেশি গরু রয়েছে। গতবছরের চেয়ে এবার গরুর সংখ্যা ১০% বৃদ্ধি পেয়েছে। লাভ বেশি হওয়ায় উৎপাদনও বেড়েছে।

/টিপু/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়