ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

স্নাতকোত্তর ও পিএইচডিতে ফান্ডিংসহ ভর্তিতে সফল হবেন যেভাবে 

রাগিব হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৫, ২২ মে ২০২১  
স্নাতকোত্তর ও পিএইচডিতে ফান্ডিংসহ ভর্তিতে সফল হবেন যেভাবে 

শিক্ষা ও কর্মসূত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার সুবাদে সেখানকার ভর্তি প্রক্রিয়াকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। তবে বেশ দুঃখের সঙ্গেই বলতে হচ্ছে, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এসব ক্ষেত্রে এখনো অনেক পিছিয়ে। 

শিক্ষার্থীর সংখ্যা হিসাবে বাংলাদেশ নেপালের চেয়ে অনেক এগিয়ে ও ভিয়েতনামের কাছাকাছি। তবে, নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব দেশের শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক অনেক বেশি। কিন্তু কেন? অভিজ্ঞতায় যা দেখেছি, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা খুব সহজ কিছু ধাপে না বোঝার কারণে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, বর্তমানের যুগ হচ্ছে কম্পিটিশনের যুগ। প্রতিযোগিতার দৌড়ে নিজেকে আপডেট রাখতে না পারলে এগিয়ে থাকা সম্ভব নয়।  

যুক্তরাষ্ট্র হোক কিংবা অন্য যে কোনো দেশ, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ে পড়ালেখার জন্য শিক্ষার্থীদের ফান্ডিংয়ের দরকার পড়ে। বলা বাহুল্য, ফান্ডিং পাওয়া এত সহজ নয়। তার জন্য প্রয়োজন কিছু বিষয়ের প্রতি মনোযোগ।  

রিসার্চ ব্যাকগ্রাউন্ড

মাস্টার্স কিংবা পিএইচডির জন্য গবেষণার অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক নয়। তবে কারো যদি সেটি থাকে, তাহলে তিনি কিন্তু অনেক দূর এগিয়ে রইলেন। জটিল কিছু করতে হবে না, ইন্টারেস্টিং কিন্তু সহজ কিছু করতে পারেন। যেমন- রোবট বানানো, কোনো রকমের সার্ভে, কিংবা কোনো এক্সপেরিমেন্ট মোদ্দা কথা, কোনো শিক্ষার্থীর সিভিতে যদি দেখি, সে কিছুটা হলেও কাজ করেছে, খুব বড় জায়গায় না হলেও ছোটখাট জায়গায় কিছু পেপার পাবলিশ করেছে, তাহলে এডমিশন কমিটির কাছে তার গুরুত্বটা বেড়ে যায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে একটু চেষ্টা করে দেখুন। 

সঠিক তথ্য জানুন 

কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কী বিষয়ে কাজ করছেন, কোন বিষয়ে কাজ করার ফান্ডিং অনেক, এমন তথ্যের মূল্য অনেক বেশি। এটি যদি জানেন, তাহলে সেসব বিষয়ে পড়ার আগ্রহ দেখাতে পারেন রিসার্চ কিংবা পারপাস স্টেটমেন্টে। দেখা যায়, ভারতীয় কিংবা চীনের ছাত্ররা তাদের সিনিয়রদের কাছ থেকে এটির সম্পর্কে জানতে বেশ উদগ্রীব থাকে। ফলে প্রতিটি ইউনিভার্সিটিতে আলাদা করে জায়গামতো সঠিক কথাটি তারা লিখতে পারে। তাই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রযোজন একটু উদ্যোগী হওয়া। সিনিয়রদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা।

লেগে থাকুন 

আমি প্রায়ই ভারতের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ই-মেইল পাই। তারা হয় সামার ইন্টার্নশিপ খোঁজে কিংবা আমার কাজ সম্পর্কে জেনে-বুঝে সেই বিষয়ে আগ্রহ দেখায়। এর কারণ হচ্ছে একটু সুবিধার সুযোগ সন্ধান করা। আপনি যদি পাস করার পরে উচ্চ শিক্ষার বিষয়ে পরিকল্পনা করবেন ভাবেন, তাহলে বলবো, পূর্বের মতো সেই সময় এখন আর নেই। অনেক আগে থেকেই নিজের উদ্যোগে লেগে থেকে এসব যোগাযোগ স্থাপন করতে হয়। লজ্জার কিছুতো নেই। কেবল একটি ই-মেইল লেখারই ব্যাপার। 

সিজিপিএ, টোফেল, জিআরইতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের তেমন ঘাটতি নেই। কিন্তু উপরের তিনটি ক্ষেত্রেই তারা পিছিয়ে আছে বহুদূর। কাজেই মাস্টার্স কিংবা পিএইচডিতে ফান্ডসহ এডমিশন পেতে হলে এই ব্যাপারগুলায় মনোযোগ দিলে কাজে আসবে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি অব অ্যালাবামা অ্যাট বার্মিংহাম, যুক্তরাষ্ট্র।

সাব্বির/মাহি   

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়