ঢাকা     শনিবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

লোক বদলালেই দেশ বদলে যাবে না, সিস্টেম বদলাতে হবে: তথ্য উপদেষ্টা

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫  
লোক বদলালেই দেশ বদলে যাবে না, সিস্টেম বদলাতে হবে: তথ্য উপদেষ্টা

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “শুধু লোক বদলে দিলেই দেশ বদলে যাবে না, সিস্টেম বদলাতে হবে। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এই আগুন যারা লাগায় বা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়, তারা আমাদের অভিন্ন প্রতিপক্ষ। এদের রাজনৈতিক পরিচয় বা বিশ্বাস যদি ভিন্নও হয়ে থাকে, সহিংসতার মাধ্যমে কোনো জায়গায় কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ নেই। সংযম, সমালোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশের মধ্যে দিয়ে একটি জায়গায় পৌঁছাতে হবে।”

রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

তথ্য উপদেষ্টা বলেন,“অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হেলিকপ্টারের কথা এসেছে। কিন্তু ওই সময় সেখানে হেলিকপ্টার দেওয়া যেত না। বাতাস লাগলে সেখানে আগুনটা ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। অনেকেই বলেছেন কাঁদানে গ্যাস কেন দেওয়া হয়নি? সেটাও করার উপায় ছিল না। কারণ তাতেও ফায়ার অ্যাগ্রাভেট (পরিস্থিতিকে আরো তীব্র করা) করার সম্ভাবনা ছিল। সেখানে একমাত্র টার্গেট ছিল যে ২৮ জন (ডেইলি স্টারে আগুনের সময়) সেখানে আটকে পড়েছিলেন তাদেরকে কোনোরকম ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া বের করে আনা। সেখানে দুই দফায় আগুন দেওয়া হয়েছিল। প্রথম দফায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও দ্বিতীয় দফার আগুনে আমরা সত্যিই শঙ্কিত হয়ে গিয়েছিলাম। যখন জানতে পারলাম আটকে পড়া সাংবাদিকদের সঙ্গে ফায়ার ব্রিগেডের সদস্যরাও রয়েছেন, তখন একটু আশ্বস্ত হলাম। ভোর ৪টা ৩৭ মিনিটে তাদেরকে ছাদ থেকে নামানো হয়েছিল।”

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “আমি নির্লিপ্ত বলব না। তবে প্রো-অ্যাকটিভ না হওয়ায় গণমাধ্যমের যে ক্ষতি হয়েছে তেমনি আমাদেরও ক্ষতি কম হয়নি। সরকার হিসেবেও আমরা এই ক্ষতিটা উপলব্ধি করি। এ ঘটনাই আমরা সত্যিই মর্মাহত। এটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।”

উপদেষ্টা বলেন,“যারা এই আগুন দিয়েছে তারা আমাদের কমন প্রতিপক্ষ। আপনার যদি কারো মত পছন্দ না হয় তাহলে আপনি ভিন্ন মতের কোনো পত্রিকা খোলেন। সেটাকে জনপ্রিয় করে তোলেন। কিন্তু সেটা না করে একটি প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগিয়ে দিলেন আর মনে করলেন আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে এমন করলে তো হবে না। জুলাইতে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও নিউ এজ কিন্তু আন্দোলনের খবর ছাপাচ্ছিল। টেলিভিশনের দিকে তাকালে আমরা চ্যানেল টুয়েন্টিফোর এবং যমুনাকে দেখতে পাই।”

উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট, সেল্ফ ক্রিটিসিজমটা করতে হবে।এটা আমাদের জন্য খুব জরুরি। যেদিন থেকে দায়িত্ব নিয়েছি সেদিন থেকেই দেখেছি প্রতিটি মানুষের একটা রাজনৈতিক মতাদর্শ আছে। কেউ আওয়ামী লীগ, কেউ বিএনপি বা জামায়াত। এ এক অদ্ভুত অবস্থা। অনেক সময় দেখা যায় কারো রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও প্রতিপক্ষ তাকে ঘায়েল করতে রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে দেয়। আমাদের যদি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হয় তাহলে সবার একটা রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকলেও পেশাগত দায়িত্বে এসে সেই মতাদর্শের প্রতিফলন করা যাবে না। আমরা যদি সত্যিই নতুন বাংলাদেশ চাই তাহলে গণতন্ত্রের সঙ্গে গণমাধ্যমকে বিচ্ছিন্ন করার কোনো সুযোগ দেখি না। যারাই আমাদের ভয় দেখাচ্ছে তারা আমাদের কমন প্রতিপক্ষ। আমার বাসার সামনেও ককটেল ফোটানো হয়েছে। এই কমন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আমাদের পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে কোনো আপস থাকবে না। একজন আরেকজনকে প্রতিপক্ষ মনে করলে কোনো কাজ হবে না।”

উপদেষ্টা বলেন,“পুরোটা ভেঙে যাওয়া একটা সিস্টেমকে দিয়ে আমরা প্রশাসন চালাচ্ছি। এই সরকারকে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের একটা বড়ো ভূমিকা পালন করতে হয়েছে। এ যাত্রায় আমাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব ছিল না।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়