ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৩ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মা-বাবার কবরে চিরনিদ্রায় মুস্তাফা জামান আব্বাসী

জ্যেষ্ঠ প্রতি‌বেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ১০ মে ২০২৫   আপডেট: ১৬:৪৪, ১০ মে ২০২৫
মা-বাবার কবরে চিরনিদ্রায় মুস্তাফা জামান আব্বাসী

বাংলা সংগীতের আকাশের আরেক উজ্জ্বল নক্ষত্র নিভে গেল। বরেণ্য সংগীতশিল্পী, গবেষক ও লেখক মুস্তাফা জামান আব্বাসী শনিবার সকালে ঢাকার বনানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে রাজধানীর আজিমপুরে বাবা, পল্লীগীতির অগ্রপথিক আব্বাসউদ্দীন আহমদ ও মা লুৎফুন্নেসা আব্বাসের কবরে শায়িত হন তিনি।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। রেখে গেছেন দুই কন্যা ও অগণিত গুণগ্রাহী।

আব্বাসী জন্মেছিলেন ১৯৩৬ সালের ৮ ডিসেম্বর, ভারতের কোচবিহারের বলরামপুর গ্রামে। শৈশব কেটেছে কলকাতায়, যেখানে তার পরিবার ছিল জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ সহচর। তার সুরের শিকড় পল্লী বাংলার মাটিতে, আর ডালপালা ছড়িয়েছে বিশ্বমঞ্চ পর্যন্ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও এমএ পাসের পর মুস্তাফা জামান আব্বাসী মার্কেটিংয়ে উচ্চশিক্ষা নেন। শিল্পগোষ্ঠীর মহাব্যবস্থাপক থেকে শুরু করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু তাঁর হৃদয় পড়ে ছিল সংগীতের মাধুর্যে।
পঁচিশটির বেশি দেশে তিনি ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, নজরুলগীতি আর বিচ্ছেদী গান পরিবেশন করেছেন। ইউনেস্কোর মিউজিক কমিটির সভাপতি হিসেবে এক দশকের বেশি সময় বিশ্বসভায় বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন।

পাঁচ দশকের শ্রমে সংগ্রহ করেছেন হাজারো লোকগান। তার গ্রন্থ লোকসংগীতের ইতিহাস, ভাওয়াইয়ার জন্মভূমি, ভাটির দ্যাশের ভাটিয়ালি আজও সংগীতপ্রেমীদের অমূল্য সম্পদ। কলমেও তিনি ছিলেন দক্ষ—পত্রিকায় নিয়মিত লিখে পাঠকের হৃদয় জিতেছিলেন।

একুশে পদকসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য পুরস্কারে সম্মানিত মুস্তাফা জামান আব্বাসী জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লোকসংস্কৃতি ও সুরের সাধনায় নিয়োজিত ছিলেন। বাংলা সংগীতের এই মহীরুহ বিদায় নিয়েছেন, রেখে গেছেন তাঁর সৃষ্টির অমর সংগীতনিধি।

ঢাকা/রাহাত

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়