ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

দানশীল আল্লাহর বন্ধু

প্রকাশিত: ১০:২৭, ৩১ মার্চ ২০২৪  
দানশীল আল্লাহর বন্ধু

খুব দ্রুত-ই যেন মাহে রমজানের রহমত এবং মাগফিরাতের দিনগুলো শেষ হয়ে গেল। নাজাতের শেষ দশকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো যথাসম্ভব দানের হস্তকে প্রসারিত করা। দান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময় একটি আমল। দানশীল ব্যক্তির জান-মাল মহান আল্লাহর হেফাজতে নিরাপদ থাকে। দানের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর বন্ধুতে পরিণত হন। 

মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে  মুমিনদেরকে দানের প্রতি উৎসাহিত করে অসংখ্য আয়াত নাজিল করেছেন। প্রিয়নবী (সা.) নিজে সর্বদা উদার মনে দান করতেন এবং দানশীলদের জন্য বিভিন্ন সুসংবাদ প্রদান করেছেন।

যুগে যুগে আম্বিয়ায়ে কেরাম, সাহাবায়ে কেরাম ও আল্লাহ তায়ালার নেক বান্দাগণ দানশীলতার যে অনুপম উপমা সৃষ্টি করে গেছেন, তা কাল থেকে কালান্তর মানবেতিহাসে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

দানের ফজিলত সম্পর্কে মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আর আল্লাহ তায়ালা যাকে চান তার জন্য আরো বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেন।

আল্লাহ তায়ালা প্রাচুর্যময়, মহাজ্ঞানী। (সূরা বাকারা, আয়াত ২৬১)

মহান আল্লাহ তায়ালা আরো ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! আমি তোমাদেরকে যে রিযিক দান করেছি তা থেকে তোমরা দান কর, সেদিন আসার পূর্বে, যেদিন থাকবে না কোনো বেচা-কেনা, না কোনো বন্ধুত্ব কিংবা সুপারিশ। আর কাফেররাই হলো প্রকৃত জালেম। (সূরা বাকারা, আয়াত ২৫৪)

দানের গুরুত্ব সম্পর্কে প্রিয়নবী (সা.) ইরশাদ করেন, নিশ্চয় দান আল্লাহর ক্রোধকে প্রশমিত করে এবং অপমৃত্যু রোধ করে। (তিরমিজী, মেশকাত)

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন হতে একটি খেজুর পরিমাণও দান করে, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা উক্ত দান নিজ কুদরতি ডান হাতে গ্রহণ করেন। অতঃপর তা দানকারীর জন্য প্রতিপালন করেন, যেমনভাবে তোমাদের কেউ ঘোড়ার বাচ্চা লালন-পালন করে। এমনকি তা (দান) পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায়। (বুখারী)

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, যে (মুসলমান) ব্যক্তি কোনো বস্ত্রহীন মুসলমানকে কাপড় পরিধান করায়, আল্লাহ তা’আলা তাকে জান্নাতে সবুজ পোশাক পরিধান করাবেন। যে ব্যক্তি কোনো ক্ষুধার্ত মুসলমানকে খানা খাওয়ায়, আল্লাহ তা’আলা তাকে জান্নাতের ফলসমূহ খাওয়াবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো পিপাসার্ত মুসলমানকে পানি পান করায়, মহান আল্লাহ তা’আলা তাকে এমন শরাব পান করাবেন যার উপর মোহর লাগানো থাকবে। (আবু দাউদ)

সম্মানিত পাঠক, দানের মাধ্যমে সম্পদ কখনো হ্রাস পায় না বরং তা পবিত্র, নিরাপদ ও বর্ধিত হয়। দানশীল ব্যক্তির মর্যাদা আল্লাহর দরবারে বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ফেরেশতাগণ তার জন্য সর্বদা দোয়া করে। তাই আসুন, আমরা মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টির প্রত্যাশায় এতিম, গরীব, অসহায় আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের মাঝে দানের হস্ত প্রসারিত করি।

লেখক : মুফাস্সিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব

/শাহেদ/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়