ঢাকা     মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

সাদকাতুল ফিতর আদায়ের গুরুত্ব

প্রকাশিত: ১০:১৫, ৪ এপ্রিল ২০২৪  
সাদকাতুল ফিতর আদায়ের গুরুত্ব

মাহে রমজানের সিয়াম সাধনার পর যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত দরিদ্র ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য বা এর সমমূল্য প্রদান করাকে শরিয়তের পরিভাষায় সাদকাতুল ফিতর বলা হয়। একে যাকাতুল ফিতর বা ফিতরাও বলে। ঈদের দিন সকালবেলা যিনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা বা এর সমমূল্যের নগদ অর্থ অথবা ব্যবসাপণ্য) মালিক থাকবেন, তাঁর জন্য ওয়াজিব হলো তাঁর নিজের ও পরিবারের সবার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা।

সাদকাতুল ফিতর ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এর মাধ্যমে সমাজের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীও ঈদের আনন্দ উদযাপনের সুযোগ পায় এবং সিয়াম সাধনার ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে থাকলে এর কাফফারা স্বরূপ হয়। এ প্রসঙ্গে হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) সাদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করেছেন রোজাকে অনর্থক কথা ও কাজ হতে পবিত্র করার এবং দুস্থ মানুষের মুখে অন্ন দেওয়ার জন্য। (সুনানে আবু দাউদ)

হযরত ওয়াকি ইবনুল জাররাহ (রহ.) বলেন, নামাজের ক্ষতিপূরণ যেমন সিজদায়ে সাহু, তেমনি রোজার ক্ষতিপূরণ সাদকাতুল ফিতর।

প্রত্যেক সামর্থ্যবান নারী, পুরুষ, প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির উপর সাদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। হযরত ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক স্বাধীন, গোলাম, পুরুষ, মহিলা, ছোট ও বড় সবার ওপর সদকায়ে ফিতর আবশ্যক করেছেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান)খাদ্যসামগ্রী বা নগদ অর্থ উভয়টি দ্বারা সাদকাতুল ফিতর আদায় করা যায়।

হযরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলে আকরাম (সা.) এর জমানায় আমরা সাদকাতুল ফিতর প্রদান করতাম এক সা তথা তিন কেজি তিনশো গ্রাম খাদ্যবস্তু।

তিনি আরও বলেন, তখন আমাদের খাদ্য ছিল যব কিশমিশ পনির ও খেজুর। (সহিহ বুখারি) 
প্রসিদ্ধ তাবেয়ি আতা (রহ.) বর্ণনা করেন, হযরত উমর (রা.) নগদ অর্থ দ্বারা সাদকাতুল ফিতর প্রদান করতেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা) 

প্রসিদ্ধ তাবেয়ি হাসান বসরী (রহ.) বর্ণনা করেন, সাদকাতুল ফিতর দিরহাম দ্বারা আদায় করতে কোনো সমস্যা নেই। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা)

ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এর মতে, নগদ অর্থ দ্বারা সাদকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম। কেননা ফিতরার উদ্দেশ্য হলো, দরিদ্রদের প্রয়োজন পূরণ করা। আর নগদ অর্থ দ্বারা দরিদ্র ব্যক্তি তাঁর চাহিদামত প্রয়োজন পূরণ করতে পারে।

ঈদগাহে যাওয়ার আগে ফিতরা আদায় করা উত্তম। তবে যদি কোনো কারণবশত আগে আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে পরে আদায় করা যাবে।

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, সুন্নত হলো ঈদের নামাজে যাওয়ার পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করা। হযরত আমর বিন আউফ (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে ঈদগাহে যাওয়ার আগে সাদকাতুল ফিতর আদায়ের নির্দেশ প্রদান করেছেন।

/শাহেদ/এসবি/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়